আত্মবিশ্বাসী: আইপিএলে নিজেকে প্রমাণ করতে তৈরি বাংলার লেগস্পিনার। ফাইল চিত্র
আইপিএল শুরু হওয়ার দেড় মাস আগে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের ইয়ো ইয়ো টেস্ট নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। বিরাট কোহালির দলে জায়গা পেতে গেলে এই পরীক্ষায় পাশ করা বাধ্যতামূলক। আর প্রথম পরীক্ষাতেই বাজিমাত বাংলার প্রয়াস রায়বর্মণের। আরসিবি শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, ইয়ো ইয়ো পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে বাংলার ১৬ বছরের এই লেগস্পিনার। ভারতীয় দলের প্রথা অনুযায়ী, ইয়ো ইয়ো টেস্টে পাশের নম্বর ১৬.১। প্রয়াস তুলেছে ১৭.৩।
মোট আট জন ভারতীয় ক্রিকেটারকে নিয়ে সোমবার শুরু হয়েছে কোহালির দলের শিবির। আশিস নেহরা ও গ্যারি কার্স্টেনের প্রশিক্ষণে প্রথম দিনেই ইয়ো ইয়ো টেস্ট আয়োজন করা হয়। প্রয়াসের পাশাপাশি শিবিরে রয়েছেন হিম্মত সিংহ, গুরকীরত সিংহ মান, ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলবন্ত খেজরোলিয়া, দেবদূত পাল্লিকাল, অক্ষদীপ নাথ ও মিলিন্দ কুমার। পয়েন্টের বিচারে এঁদের মধ্যে এক জনও প্রয়াসের ধারে কাছে ছিলেন না। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিলিন্দ কুমারের স্কোর ১৬.৩।
রঞ্জি ট্রফি মরসুমে বাংলার ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। অথচ বাংলার এক ক্রিকেটারই আরসিবি-র ফিটনেস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেয়ে পাশ করল। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে প্রয়াসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এখানে আসার আগে বাংলার ফিজিক্যাল ট্রেনার সঞ্জীব দাসের সঙ্গে নিয়মিত ট্রেনিং করেছি। গত শুক্রবার সঞ্জীবদা আলাদা করে আমার ইয়ো ইয়ো টেস্ট নেন। সেখানে ১৯ পয়েন্ট পাই। সেটাই আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।’’ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ২২ রান দিয়ে দু’টি উইকেটও নেয় বাংলার লেগস্পিনার। ৭ ফেব্রুয়ারি প্রয়াসের সিবিএসই প্র্যাক্টিকাল রয়েছে। যার জন্য বাংলার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে ফাইনাল খেলতে যেতে পারেনি। সেই পরীক্ষার আগে বেঙ্গালুরুতে ইয়ো ইয়ো পরীক্ষায় পাশ করে বুধবারেই ফিরে আসছে। ‘‘প্রত্যেক দিন সকাল ৭টা থেকে ৮.৩০ পর্যন্ত দৌড়োতাম। তার পরে বাড়ি ফিরে পড়তে বসতাম। লাঞ্চের পরে জিমে সময় কাটাতাম। বাড়ি ফিরে আবার বই নিয়ে বসা। খুব একটা অসুবিধা হয়নি,’’ বলছে বাংলার নতুন তারকা প্রয়াস।
আইপিএলের নিলামে প্রয়াসকে ১.৫ কোটি টাকায় নিয়েছে আরসিবি। বিজয় হজারে ট্রফিতে বাংলার হয়ে ১১ উইকেট নিয়ে কোহালিদের ফ্র্যাঞ্চাইজির নজরে উঠে আসে দুর্গাপুরের ছেলে। বিরাট কোহালির সঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে থাকার স্বপ্নে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পরে প্রয়াসের গলায় শুধুই স্বস্তি। ‘‘নিজেকে প্রমাণ করার এটাই বড় সুযোগ ছিল। পাশ করতে পেরে স্বস্তিবোধ করছি। এ বার শান্তিতে পরীক্ষা দিতে পারব,’’ আত্মবিশ্বাসী শোনায় তাকে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলের প্রথম একাদশে প্রয়াসের সুযোগ পাওয়া বেশ কঠিন। সে দলে তার প্রতিপক্ষ যুজবেন্দ্র চহাল। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সেরা লেগস্পিনার। রয়েছেন মইন আলি, পবন নেগি, ওয়াশিংটন সুন্দরও। অভিজ্ঞতার বিচারে যাঁরা প্রয়াসের চেয়ে অনেক এগিয়ে। বাংলার লেগস্পিনার লড়াই ছাড়ছে না। বলে দিচ্ছে, ‘‘অনুশীলনে নিজেকে উজাড় করে দেব। তার পর দেখি ভাগ্যের চাকা কোন দিকে ঘোরে।’’