দেশের তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি বিয়ের পরেও জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। সব মিলিয়ে সাত বার দেশের সেরা।
আপাতত তাঁর লক্ষ্য, ইন্দু পুরীর আট বারের জাতীয় রেকর্ড ভাঙা এবং টপকে যাওয়া। ‘‘এক বছরের ছেলে কিয়ান এখন স্বপ্ন পূরণের একমাত্র অনুপ্রেরণা। যদি ইন্দু পুরীর রেকর্ড ভাঙতে পারি তা হলে সেটা ওর জন্য হবে মা-র দেওয়া সেরা উপহার।’’ বলছিলেন পৌলমী ঘটক। কিন্তু যে ছেলের জন্য নিজের স্বপ্ন পূরণের এই আকুতি দুর্ভাগ্যবশত সেই কিয়ানের অসুস্থতার জন্যই চলতি রাজ্য টেবল টেনিসে নামতে পারলেন না অলিম্পিয়ান। নাম দেওয়া সত্ত্বেও। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে আজ বুধবার সিঙ্গলসে সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ নন্দীরা নামলেও নামা হচ্ছে না পৌলমীর। মৌমা দাসরা জাতীয় শিবিরে থাকায় পৌলমী ও তাঁর স্বামী, আর এক প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সৌম্যদীপ রায় ছিলেন টুর্নামেন্টের অন্যতম আকর্ষণ। ছেলের অসুস্থতার পাশাপাশি সৌম্যদীপের চোট রয়েছে হাঁটুতে।
দেড় বছর পর টিটি বোর্ডে ফিরে পৌলমী খেলেছেন চারটে আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট। নিজের মা-র কাছে পৌলমী সাত মাসের ছেলেকে রেখে রাজকোট এবং বিশাখাপত্তনমে শেষ দু’টো টুর্নামেন্টে খেলার পর র্যাঙ্কিং তুলে এনেছেন অনেকটা। ‘‘রাজকোটেই ছেলের শরীর খারাপের খবর পেয়ে দু’দিনের জন্য ফিরেছিলাম বাড়িতে। আর টুর্নামেন্ট শেষ করে ফেরার পর তো ওকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। আমার ছেলে বাড়িতে ফিরে এলেও এখন ওর সঙ্গে সব সময় থাকা দরকার আমার। তাই রাজ্য মিটে নামতে পারলাম না। অথচ ভাল ম্যাচ প্র্যাকটিসের জন্য রাজ্য মিটে নামাটা আমার এ বার খুব দরকার ছিল,’’ এ দিন বলছিলেন পৌলমী।
পারিবারিক সমস্যার কারণে পৌলমী যে খেলবেন না, সেটা তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর টিম দক্ষিণ কলকাতা জেলা দলের কর্তাদের। কিন্তু সেই খবর নাকি রাজ্য কর্তাদের কাছে পৌছয়নি। ফলে তাঁরা পৌলমী এবং সৌম্যদীপের নাম ঘোষণা করে শেষ পর্যন্ত সমস্যায়। এবং যা নিয়ে যথারীতি বিতর্ক। এমনিতে রাজ্য মিট হচ্ছে উৎসবের মাঝে। দীপাবলি এবং ভাইফোঁটার সময়। স্পনসর ছাড়া কোনও মতে। পুরনো টেবলে চলছে খেলা। ফ্লোরে ম্যাট নেই। ক্ষোভ রয়েছে খেলোয়াড়দের। অনেকের আশঙ্কা পা পিছলে যেতে পারে কাঠের ফ্লোরে। ঠিক ছিল প্রতিযোগিতা হবে আসানসোলে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চলে আসে কলকাতায়। মাত্র তিন দিনের নোটিসে পুরো প্রস্তুতি নিয়ে শহরে আসতে পারেননি অনেক প্লেয়ার। কিছু ম্যাচ ওয়াকওভার হয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে দায়সারা উদ্যোগের স্পষ্ট চিহ্ন!