উচ্ছ্বসিত ডুপ্লান্টিস। ছবি: গেটি ইমেজেস
গত এক দশক ধরে পোল ভল্টের ‘বিস্ময় বালক’ তিনি। ছোট্ট বয়স থেকেই রেকর্ড ভেঙে চলেছেন। সুইডেনের সেই ২০ বছর বয়সি পোল ভল্টার আর্মান্ড ডুপ্লান্টিস এ বার ভেঙে দিলেন ২৬ বছর ধরে অক্ষত থাকা আউটডোরে (খোলা স্টেডিয়ামে) সের্গেই বুবকার বিশ্বরেকর্ড।
১৯৯৪ সালে যে রেকর্ড গড়েছিলেন পোল ভল্টের কিংবদন্তি ইউক্রেনের বুবকা। তিনি পেরিয়েছিলেন ৬ মিটার ১৪ সেন্টিমিটার (২০ ফুট দেড় ইঞ্চি)। ডুপ্লান্টিস রোমে লাফালেন ৬ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার (২০ ফুট দুই ইঞ্চি)। এ বছরেরই ফেব্রুয়ারি মাসে গ্লাসগোতে ইন্ডোরে স্টেডিয়ামে বিশ্বরেকর্ড করেছিলেন সুইড-আমেরিকান অ্যাথলিট। সেখানে তিনি পেরিয়েছিলেন ৬ মিটার ১৮ সেন্টিমিটার (২০ ফুট ৩.২৫ ইঞ্চি)। কিন্তু আউটডোরে বুবকার এত বছরের অক্ষত রেকর্ড ভাঙা ছিল তাঁর অগ্নিপরীক্ষা। উত্তেজিত ডুপ্লান্টিস বলেছেন, ‘‘অবশেষে এই বিশ্বরেকর্ডটা পেলাম। দারুণ তৃপ্তি লাগছে। খুব পরিশ্রম করেছিলাম এই রেকর্ডটা ভাঙার জন্য। প্রত্যাশা পূরণ করতে পারায় আনন্দের চেয়েও স্বস্তি হচ্ছে বেশি।’’
ডাক নাম মন্ডো। জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাবা গ্রেগ ছিলেন মার্কিন পোল ভল্টার। মা হেলেনা সুইডেনের নাগরিক। তিনি অংশ নিয়েছেন ভলিবল এবং হেপ্টাথলেন। মন্ডো মায়ের দেশ সুইডেনের হয়েই অংশ নেয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। ছোট ভাই আন্দ্রেয়াসও তাঁর মতো সুইডেনের হয়ে পোল ভল্টে অংশ নেয়। আর এক ভাই আন্তোয়েন মার্কিন মুলুকে ব্যস্ত কলেজ পর্যায়ের বেসবল নিয়ে। ডুপ্লান্টিস পোল ভল্ট শুরু করেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের বাড়ির পিছনের মাঠে। বয়স তখন মাত্র তিন। সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘আমার সমান বয়সিরা তখন ফুটবল বা অন্যান্য খেলায় অংশ নিত। আর আমি পোল ভল্ট অনুশীলন করতে করতে বলতাম, এই খেলাটায় আমাকে বিশ্বসেরা হতে হবে। জানতাম পারব। কিন্তু এত দ্রুত সব হবে ভাবিনি।’’
দুরন্ত: বিশ্বরেকর্ড গড়ার পথে। ছবি: গেটি ইমেজেস
গত বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরটা ডুপ্লান্টিসের দুর্দান্ত কেটেছে। প্রত্যেকটা প্রতিযোগিতাতেই ৬ মিটারের উপর লাফিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত রোমে এসে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ভেঙে দিলেন বুবকার বিশ্বরেকর্ড। করোনার জন্য খেলা বন্ধ থাকার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, ‘‘চলতি বছরে এক সময় মনে হচ্ছিল, আর খেলা হবে না। জীবনের প্রথম অলিম্পিক্সেই যেতে পারলাম না। এই বিশ্বরেকর্ড গড়া তাই অন্য রকম আনন্দের।’’ ফের কি নতুন রেকর্ড গড়বেন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে? মন্ডোর জবাব, ‘‘ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। তবে এর চেয়েও ভাল করতে পারি। অসম্ভব বলে কিছুই হয় না।’’
ইউসেইন বোল্টের পরে অ্যাথলেটিক্সের আকাশে উদিত নতুন এক তারা— আর্মান্ড ডুপ্লান্টিস।