মহড়া: শুক্রবার ইডেনে প্রস্তুতি ম্যাচে কেকেআর অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত দলের লেগস্পিনার পীযূষ চাওলা। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে দুই বিদেশি সুনীল নারাইন ও সাকিব আল হাসান। অন্য দিকে তিনি ও কুলদীপ যাদব। কেকেআরে পীযূষ চাওলা এ বার বেশ কড়া চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে। কুলদীপ ধর্মশালায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে ভাবে টেস্ট কেরিয়ার শুরু করলেন, তাতে কেকেআর তাঁকে প্রথম একাদশের বাইরে রাখতে পারবে কি না, এটা বড় প্রশ্ন। আর নারাইন, সাকিব-রা যদি দলে থাকেন, তা হলে চাওলার প্রথম এগারোয় সুযোগ পাওয়া কঠিন হবে।
তাঁর সামনে যে বড় লড়াই, তা তিনি নিজেও জানেন। আর এই চ্যালেঞ্জটাই এ বার আইপিএলে তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় মোটিভেশন হয়ে উঠতে চলেছে বলে জানালেন চাওলা নিজেই। শুক্রবার সকালে বাইপাসের ধারে টিম হোটেলে ঘণ্টাখানেক জিম সেশন সেরে এসে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, ‘‘একটা স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা রয়েছে দলের মধ্যে। এটা দলের পক্ষে যেমন ভাল, আমাদের পক্ষেও ভাল। তবে টিমের স্পিনারদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতার কথা বলছেন, তাতে আমার মোটিভেশন আরও বেড়ে গিয়েছে। এ বার নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদটা আরও বেড়ে গিয়েছে।’’
আর একটা কারণও অবশ্য আছে নিজেকে তরতাজা রাখার। স্পিনার-অলরাউন্ডার বললেন, ‘‘ভারতীয় দলের হয়ে ফের খেলতে চাই। আইপিএলে ভাল খেলতে পারলে ডাক পেতে পারি। আমার বয়স সবে ২৮। ত্রিশোর্ধরা যদি ফের ডাক পেতে পারে, অভিষেক ঘটাতে পারে, আমি কেন পারব না?’’
তাঁরই রাজ্য দলের সতীর্থ কুলদীপ যাদব। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত চাওলা বললেন, ‘‘অসাধারণ বোলার। যে ভাবে টেস্ট কেরিয়ার শুরু করল, অবিশ্বাস্য! ঘরোয়া ক্রিকেটেও ভাল বোলিং করেছে। রঞ্জিতে প্রচুর উইকেট (৩৫) পেয়েছে। মরসুমটাই ওর ভাল যাচ্ছে। নেটেও খুব খাটে। আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করছে এখন ও। তারই ফল পাচ্ছে।’’ কুলদীপ যে এ বার ঘরোয়া মরসুম থেকেই ভারতীয় দলের দিকে তাকিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন, তা জানিয়ে চাওলা বলেন, ‘‘রঞ্জি ট্রফির সময়ই ও আমাকে বলেছিল, এ বার ভারতীয় দলে ডাক পাওয়াটাই ওর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে জেতায় ওকে আমি অভিনন্দনও জানিয়েছি। নিজের আত্মবিশ্বাসকে ও অনেকটা উপরে নিয়ে গিয়েছে। ফলে আরও ভাল বোলিং করছে এখন। বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের এখন ওকে সমীহ করতেই হবে। ওকে বুঝেসুঝে না খেলতে পারলেই বিপদ।’’
সাত দিন আগেই বাবা হয়েছেন। ‘ড্যাডিজ লাক’ দেখা যাবে বলেই আশা করছেন তিনি। ২০১৪-তে আইপিএল ফাইনালে ম্যাচ জেতানো স্ট্রোক নিয়েছিলেন পীযূষ। বলছেন, ‘‘বাবা হওয়ার পর নিজেকে অনেক দায়িত্ববান মনে হচ্ছে। মাঠে ভাল কিছু করার ইচ্ছেটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। ছেলেকে একটা ভাল আইপিএল মরসুম উপহার দিতে চাই।’’ ভারত-অস্ট্রেলিয়া উত্তপ্ত সিরিজ দেখা হয়ে ওঠেনি পীযূষের। স্ত্রী তখন অন্তঃসত্ত্বা। স্লেজিং নিয়ে বললেন, ‘‘পেশাদার ক্রিকেটারদের স্লেজিং করে মানসিক ভাবে ভেঙে দেওয়া যায় না। বরং কেউ কেউ মানসিক ভাবে আরও চাঙ্গা হয়ে যায়। যেমন আমি।’’
আন্তর্জাতিক কেরিয়ার ছোট হলেও তিনটে বিশ্বকাপ জয়ের (২০০৬ যুব, ২০০৭ টি-টোয়েন্টি ও ২০১১ বিশ্বকাপ) খেতাব আছে তাঁর আলমারিতে। আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন একবার। এ বার লক্ষ্য কি আর একটা আইপিএল খেতাব? পীযূষ মজা করে বললেন, ‘‘আমার ডাকনাম পরশ। সেটা এমন এক পাথর, ছোঁয়ালেই সব সোনা হয়ে যায়। আমার ছোঁয়ায় ভারতীয় দল তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছে। কেকেআর আইপিএল জিতেছে। এ বারও হয়তো জিতবে।’’