নতুন জীবন শুরু সালগাওকরের

সে বছরই অক্টোবরে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচের আগের দিন এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ ফস্কে পিচ কিউরেটর বলে ফেলেছিলেন, উপর মহলের নির্দেশে পিচ বদলানো হয়েছে।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

পুণে শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:০০
Share:

পাণ্ডুরং সালগাওকর।

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টের আগে ক্রিকেটমহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল পুণের গাহুঞ্জে স্টেডিয়ামের পিচ ঘিরে। আড়াই বছর আগে এ মাঠেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এক ইনিংস ও ৩৩৩ রানে হেরেছিল ভারত। ম্যাচ শেষ হয় তিন দিনে। পুণের পিচকে ‘পুয়োর’ রেটিং দিয়েছিল আইসিসি।

Advertisement

সে বছরই অক্টোবরে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচের আগের দিন এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ ফস্কে পিচ কিউরেটর বলে ফেলেছিলেন, উপর মহলের নির্দেশে পিচ বদলানো হয়েছে। অপরাধের শাস্তি হিসেবে ছ’মাসের নির্বাসনে তাঁকে পাঠিয়ে দেয় আইসিসি। সেই পাণ্ডুরং সালগাওকরও সোমবার যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন।

গত দু’বছরের যন্ত্রণার কথা এখনও ভোলেননি তিনি। এমনও পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ কিনতে বাইরে যেতেও দ্বিধাবোধ করতেন। সোমবার পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন সালগাওকর। তার মধ্যেই আনন্দাবাজারকে ফোনে তিনি বললেন, ‘‘আজ থেকে অন্য জীবন শুরু হল। এত দিন পরিবারের সঙ্গে ঠিক মতো সময় কাটাতে পারিনি। এখন স্বস্তির শ্বাস নিচ্ছি। পাহাড়প্রমাণ চাপ মাথার উপর থেকে নেমে গেল।’’

Advertisement

২০১৭-র সেই ঘটনা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বুঝতেই পারিনি অপরাধ কি ছিল। তা ছাড়া, ২০১৭ সালের সে ম্যাচে ভারত যদি জিতত, তা হলে কি আমার বিরুদ্ধে খারাপ পিচ তৈরির অভিযোগ উঠত?’’ যোগ করলেন, ‘‘এ ম্যাচেও তো একটি দল ৬০০-র গণ্ডি পেরিয়েছে, অন্য দল ৩০০ রানও করতে পারেনি। তা হলে এ বার খারাপ পিচের অভিযোগ উঠল না কেন?’’

প্রাক্তন পেসার যদিও চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে নতুন ভাবে বিতর্কে জড়াতে চান না। তিনি খুশি, সব চেয়ে বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরে। বলছিলেন, ‘‘এই ম্যাচ আমার কাছে খুব বড় একটা পরীক্ষা ছিল। আশা করি, ভাল ভাবেই পাশ করে গিয়েছি। সব চেয়ে ভাল বিষয়, যে ক্রিকেট এক দিন আমার থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছিল, আজ সব কিছু ফিরিয়ে দিল। অনেক দিন পরে রাতে
শান্তিতে ঘুমিয়েছি।’’

ম্যাচ শেষে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা কি আপনাকে অভিনন্দন জানিয়ে গিয়েছিলেন? সালগাওকরের সাফ জবাব, ‘‘আমি তো কারও অভিনন্দনের জন্য অপেক্ষা করি না। ভাল পিচ বানাতে চেয়েছিলাম। আশা করি সফল ভাবেই সেই কাজ করতে পেরেছি।’’ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পুণের পিচ হয়ে উঠেছিল স্পিনারদের স্বর্গ। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১২টি উইকেট পেয়েছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার স্টিভ ও’কিফ। কিন্তু এ বার যে বাইশ গজ তিনি তৈরি করেছিলেন, তাতে পেসারদের সঙ্গে স্পিনাররা উইকেট পেয়েছেন। রান করেছেন ব্যাটসম্যানেরা। তিন ইনিংস মিলিয়ে ১০৬৫ রান হয়েছে। পড়েছে ২৫টি উইকেট। সালগাওকর বললেন, ‘‘চার মাস আগে থেকে পিচ তৈরির কাজ শুরু হয়। প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলিয়ে দেখা হয় তা কী রকম ব্যবহার করছে। ঘাস কাটা হত না। ম্যাচের আগে ঘাস কাটার পরে দেখলাম মাটি শক্ত হয়ে গিয়েছে। তাই পেসাররাও এখান থেকে এ বার অনেক সুবিধা পেয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement