পেপের কথায়, মেসি অবিশ্বাস্য প্রতিভা। ফাইল চিত্র
লিয়োনেল মেসিকে প্রথম বার দেখেই পেপ গুয়ার্দিওলার মনে হয়েছিল, বার্সেলোনা সব টুর্নামেন্টেই চ্যাম্পিয়ন হবে। বার্সায় পেপের চার বছরের কোচিংয়ের সময়ই পাঁচ বারের ব্যালন ডি’ওর জয়ী মেসি নিজেকে মহাতারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর সময়ই গুয়ার্দিওলার ‘ফলস নাইন’-এর রণকৌশল দারুণ ভাবে কাজে আসে।
ক্যাটালোনিয়ার রেডিয়োকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেপ স্মৃতিরোমন্থন করেছেন, প্রথম বার বার্সার প্রাক্-মরসুম প্রস্তুতি সফরের কথা। যে সফর হয়েছিল স্কটল্যান্ডে। ‘‘দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বার্সার এক ফুটবলার আমায় বলেছিল ওদের দলে দারুণ একটা ছেলে আছে। এটাও জানিয়েছিল, বয়স কম হলেও ছেলেটা প্রচুর গোল করে,’’ বলেছেন পেপ।
কিংবদন্তি কোচ গুয়ার্দিওলা যোগ করেছেন, ‘‘আমি ওকে চিনতামই না। একদিন একটা দোকানে ওর বাবার সঙ্গে প্রথম দেখি। দেখলাম, একেবারে ছোটখাটো চেহারার ছেলে। ভীষণ লাজুক। মনে হল, ওরা যার সম্পর্কে এত ভাল ভাল কথা বলছে, সে কি এই ছেলেটাই?’’ এখানেই থামেননি গুয়ার্দিওলা, ‘‘তার পরে তো বার্সা দলটাকে নিয়ে স্কটল্যান্ডে গেলাম। একটা ম্যাচ ৬-১ জিতলাম। আর একটা ৫-০। সব ম্যাচেই ছেলেটা দেখলাম তিনটি করে গোল করে দিল। তখনই বুঝলাম এই ছেলে দলে থাকলে আমরা সব জায়গায় চ্যাম্পিয়ন হব।’’
গুয়ার্দিওলার কোচিংয়ে বার্সেলোনা ১৪টি ট্রফি জিতেছিল। তার মধ্যে রয়েছে তিন বার লা লিগা জয় এবং দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব পাওয়া। ২০১২-তে পেপ বার্সা ছেড়ে যোগ দেন বায়ার্ন মিউনিখে। তবে তাঁর সময়ে ফুটবলারদের সঙ্গে এই কোচের এক বিশেষ বন্ধুতার সম্পর্ক তৈরি হয়। যা নিয়ে এখন রাহিম স্টার্লিংদের কোচ বলেছেন, ‘‘আমার সময়েই দলটা নতুন ভাবে তৈরি হচ্ছিল। বিশ্বাস করুন, এই কাজটা আমি দারুণ ভাবে উপভোগ করেছিলাম। দলে যে ক’টা পরিবর্তন করেছিলাম, তার সবই দারুণ কাজে এসেছিল। বলতে গেলে, সাফল্যের জোয়ার এসেছিল। তা ছাড়া সবাইকে এক জায়গায় করার রসায়নটা খুব ভাল ভাবে খেটে যায়। আমি ভাগ্যবান, সেই দলে পেয়েছিলাম মেসির মতো অবিশ্বাস্য প্রতিভাকে।’’
এ দিকে, ইচ্ছে থাকলেও হয়তো আর্জেন্টিনার ক্লাবে খেলে ফুটবল জীবন শেষ করতে পারবেন না মেসি। পারবেন না, তাঁর পরিবার সেটা চায় না বলে। মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোর ইচ্ছে, আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি সারা জীবন বার্সেলোনাতে খেলুন। আর্জেন্টিনার এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, ‘‘একটা স্বপ্ন অবশ্যই আছে। ছোটবেলার ক্লাব নিউওয়েলসে অন্তত একবার খেলা। কিন্তু জানি না আর সেটা বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব কি না।’’ এখানেই থামেননি মেসি। ইচ্ছে থাকলেও আর্জেন্টিনার ক্লাবে খেলে কেন অবসর নেওয়া সম্ভব নয় তার নানা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সঙ্গে বার্সা অধিনায়কের কথা, ‘‘চেষ্টা করব আমার পরিবারকে সব বোঝাতে।’’ বোঝাই যাচ্ছে, পরিবার বলতে বুঝিয়েছেন স্ত্রী আন্তোনেল্লার কথা। যোগ করেছেন, ‘‘বাচ্চাদেরও সব বুঝিয়ে বলতে হবে। থিয়াগো বড় হয়েছে। বার্সায় ওর অনেক বন্ধু আছে। ও তো এক মাসের জন্য আর্জেন্টিনায় যাওয়াও পছন্দ করে না। তাই আমার পক্ষে আর্জেন্টিনায় ফিরে ক্লাব ফুটবল খেলা এখন সত্যিই খুব কঠিন হয়ে উঠেছে। অথচ এই স্বপ্নটাই চিরকাল দেখেছি।’’