বিলিয়ার্ডসে ইতিহাস পঙ্কজের

মায়ের জন্মদিনটা আমার কাছে বরাবরের পয়া

মেলবক্সে শুভেচ্ছাবার্তা উপচে পড়ছে। মোবাইলের ইনবক্সেও আর জায়গা নেই। ফোন লাইন জ্যাম। ডায়াল করলেই ‘বিজিটোন’ শোনাচ্ছে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় অবশেষে লিডসে ফোনে ধরা গেল বিলিয়ার্ডসের সম্রাটকে। যিনি তিনটে ‘গ্র্যান্ড ডাবল’ জিতে ইতিহাসে ঢুকে পড়েছেন। তবে শুধু বিলিয়ার্ডস নিয়েই নয়, খোলামেলা পঙ্কজ আডবাণী কথা বললেন নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও। শুনলেন প্রীতম সাহা...মেলবক্সে শুভেচ্ছাবার্তা উপচে পড়ছে। মোবাইলের ইনবক্সেও আর জায়গা নেই। ফোন লাইন জ্যাম। ডায়াল করলেই ‘বিজিটোন’ শোনাচ্ছে। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় অবশেষে লিডসে ফোনে ধরা গেল বিলিয়ার্ডসের সম্রাটকে। যিনি তিনটে ‘গ্র্যান্ড ডাবল’ জিতে ইতিহাসে ঢুকে পড়েছেন। তবে শুধু বিলিয়ার্ডস নিয়েই নয়, খোলামেলা পঙ্কজ আডবাণী কথা বললেন নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও। শুনলেন প্রীতম সাহা...

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২৬
Share:

লিডসে বিশ্বসেরা পঙ্কজ।

প্রশ্ন: মায়ের জন্মদিনে এক ডজন বিশ্ব খেতাবের মালিক হয়ে কেমন লাগছে?

Advertisement

পঙ্কজ: দারুণ অনুভূতি। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মজাটাই আলাদা। আসলে কী জানেন তো, মায়ের জন্মদিনটা আমার কাছে খুব পয়া। দু’বছর আগে লিডসে এই দিনেই বিলিয়ার্ডস বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলাম। তাই সে দিন মাকে ট্রফিটা উত্‌সর্গ করেছিলাম। আজও করলাম।

Advertisement

প্র: বাড়ি ছেড়ে অনেকটা সময় বাইরে বাইরে থাকতে হয়। মাকে খুব মিস করেন?

পঙ্কজ: মিস তো তাকেই করা হয় যাকে মানুষ ভুলে যায়। আমার তো পুরো জগত্‌টাই মাকে নিয়ে। তবে মিস করি মায়ের হাতের রান্নাগুলো। বিশেষ করে পালক পনির আর সকালের গরম চা। ওই আদা-চিনি-দুধের সঙ্গে মা যে একটা স্পেশাল মশলা দেয়, সেটা গোটা বিশ্বে আর কোথাও পাওয়া যাবে না। পাঁচতারা হোটেলের চা-তেও সেই স্বাদ নেই।

প্র: ট্রফির সঙ্গে কি আরও কিছু উপহার নিয়ে যাচ্ছেন মায়ের জন্য?

পঙ্কজ: নভেম্বরের ৮ তারিখ দেশে ফিরব। তার আগে ভেবেছি এখানে সাত দিন চুটিয়ে শপিং করব। দীপাবলির উপহারটাও তো কিনতে হবে। দেখি, ঘড়ি কিংবা জামা-কাপড় কিনে নিয়ে যাব।

প্র: আপনাকে একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করব?

পঙ্কজ: বিয়ে তো? (হো হো করে হেসে ফেললেন)...

প্র: হ্যাঁ সেটাই। নিজে থেকে কাউকে দেখে রেখেছেন? না কি সেটাও মায়ের পছন্দেই করবেন?

পঙ্কজ: না না। আমি ওই সব প্রেম-টেমে নেই। অন্তত এখনও পর্যন্ত তো নেই। আর মা? যখনই কথা হয় না কেন, একবার প্রসঙ্গটা তুলবেই। আচ্ছা বলুন তো, ২৯ বছর হয়ে গেলে কি বিয়ে করাটা বাধ্যতামূলক? আমি এখন আমার কেরিয়ারে মন দিতে চাই। ২০১৫-তে তো বিয়েটিয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই!

প্র: আপনি নাকি আবার বিলিয়ার্ডস থেকে স্নুকারে সুইচ ওভার করতে চাইছেন?

পঙ্কজ: হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। যখন দু’টো খেলাতেই আমার সমান দক্ষতা আছে, তখন সুইচ ওভার করতে বাধা কোথায়। তা ছাড়া দুটো খেলাই আমার খুব প্রিয়।

প্র: বিলিয়ার্ডস আর স্নুকারের মধ্যে পার্থক্য কী?

পঙ্কজ: দু’টো খেলা একই মুদ্রার ভিন্ন পিঠ। দু’টিই একই টেবিলে অনেকটা একই রকমের বল দিয়ে খেলা হয়। তফাতটা খেলার পদ্ধতিতে। স্নুকার খেলা হয় ১৫টি লাল এবং ছ’টি অন্য রঙের বল দিয়ে। যেখানে নিখুঁত লক্ষ্যই সাফল্যের চাবিকাঠি। বিলিয়ার্ডস কিন্তু অনেক কঠিন খেলা। এখানে তিনটে বলের উপরে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখাটাই মূল কথা। এর একটি স্ট্রাইকার (কিউ) এবং দু’টি বাধা (অবজেক্ট) বল। তার একটির রং আবার লাল। এখানে নিখুঁত লক্ষ্য তো বটেই, তার সঙ্গে লাগে প্রতি মুহূর্তে স্ট্র্যাটেজি বদলের ক্ষমতা এবং মনঃসংযোগ। সহজ ভাষায় বললে, বিলিয়ার্ডস হল টেস্ট ক্রিকেট। স্নুকার টি-২০।

প্র: নতুন প্রজন্ম তা হলে কোন ফর্ম্যাটে হাতেখড়ি দেবে?

পঙ্কজ: অবশ্যই বিলিয়ার্ডস। এটা মাদার গেম। খেলায় অনেক বৈচিত্র আছে। বড় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য যে মানসিকতা লাগে, সেটা বিলিয়ার্ডস না খেললে কোনও দিন তৈরি হবে না।

প্র: এটা আপনার কেরিয়ারে তৃতীয় ‘গ্র্যান্ড ডাবল’ খেতাব। কোনটা সেরা?

পঙ্কজ: প্রত্যেক টুর্নামেন্টের আলাদা আলাদা গুরুত্ব আছে। এশিয়ান গেমসে যখন সোনা জিতেছিলাম, তখন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিল। পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে আছি আর জাতীয় সঙ্গীত বাজছে। চোখের সামনে জাতীয় পতাকা উড়ছে। গায়ে যেন কাঁটা দিচ্ছিল তখন! তবে এ বারের জয়টা খুব স্পেশাল। তিন বার ‘গ্র্যান্ড ডাবল’ করেছি বলে নয়, অনেক রেকর্ড ভেঙেছি। ইতিহাস গড়েছি। তাই এই জয়ের তৃপ্তি অন্য রকম।

ছবি: পিটিআই

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement