বেসিন রিজার্ভে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই ব্যাকফুটে ভারত। সবুজ পিচে কিউয়ি পেসারদের দাপটের সাক্ষী থাকল ওয়েলিংটনের ২২ গজ। একসময় পরিস্থিতি রীতিমতো খারাপ ছিল ভারতের। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভাঙন ধরেছিল ইনিংসে। কিন্তু অজিঙ্ক রাহানের লড়াকু ইনিংস কিছুটা মেরামত করল দলকে। বৃষ্টির জন্য শেষ সেশনে অবশ্য এক বলও খেলা হল না।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৫-০ জিতেছিল ভারত। আবার ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। ফলে, দুই টেস্টের সিরিজের দিকে আগ্রহের সঙ্গে তাকিয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। শুক্রবার সকালে টস হেরে শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। এ দিন জাতীয় দলে ঋদ্ধিমান সাহার জায়গায় উইকেটকিপার হিসেবে দলে আসেন ঋষভ পন্থ।
ভারতের ওপেনিং জুটি কী হতে চলেছে, তা নিয়ে প্রচুর জল্পনা চলছিল নানা মহলে। শেষ পর্যন্ত ময়াঙ্ক আগরওয়ালের সঙ্গী হন পৃথ্বী শ। প্রতিকূল পরিবেশে ভারতের ওপেনাররা অবশ্য নির্ভরতা দিতে পারেননি। প্রথম উইকেট পড়ে ১৬ রানে।
টিম সাউদির অসাধারণ ডেলিভারিতে বোল্ড হন পৃথ্বী। মুম্বইকরের ইনিংস স্থায়ী হয় মাত্র ১৮ বল। তিনি করেন ১৬ রান। মারেন দুটো বাউন্ডারি। দিনের পঞ্চম ওভারে আসে প্রথম আঘাত।
ভারতের দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ১৬তম ওভারে। অভিষেককারী জেমিসনের বলে বোকা বনে গিয়ে উইকেটকিপার ওয়াটলিংকে ক্যাচ দেন চেতেশ্বর পূজারা। ৪২ বল খেলে ১১ করেন তিনি। তখন দলের রান ৩৫।
আর পাঁচ রান উঠতে না উঠতেই ফেরেন বিরাট কোহালি। সাত বলে তিনি করেন ২ রান। জেমিসনের অফস্টাম্পের বাইরের বলে মারতে গিয়ে প্রথম স্লিপে রস টেলরের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭.৫ ওভারে ৪০ রানে পড়ল তৃতীয় উইকেট।
চতুর্থ উইকেটে ময়াঙ্ক আগরওয়াল ও অজিঙ্ক রাহানে কিছুটা মেরামত করেন ইনিংস। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ২৮ ওভারে তিন উইকেটে ৭৯ ছিল ভারতের রান।
দ্বিতীয় সেশনে খেলা শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফের আঘাত। ট্রেন্ট বোল্টের বলে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিলেন ময়াঙ্ক। ক্রিজে জমে গিয়েও তা কাজে লাগাতে পারলেন না তিনি। ৮৪ বল খেলে ফিরলেন ৩৪ রানে। তখন ভারতের রান ৮৮।
ছয় নম্বরে নামা হনুমা বিহারি ফিরলেন জলদি। জেমিসনেরই শিকার হলেন তিনি। ২০ বলে করলেন মাত্র সাত রান। আউট হলেন উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে। ভারতের পঞ্চম উইকেট পড়ল ১০১ রানে।
এই পরিস্থিতিতে ঋষভ পন্থের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন অজিঙ্ক রাহানে। দ্বিতীয় সেশনের শেষে পাঁচ উইকেটে ১২২ ছিল ভারতের রান। খেলা হয়েছিল ৫৫ ওভার। ঋষভ অপরাজিত রয়েছেন ১০ রানে। ৩৭ বল খেলে ফেলেছেন তিনি।
চাপের মুখে রুখে দাঁড়িয়ে ভারতের ইনিংসকে টানছেন রাহানে। সহ-অধিনায়ক অতীতেও বিদেশের মাটিতে পরিত্রাতা হয়ে উঠেছিলেন। শুক্রবারও তেমন ছবি দেখা গেল। ১২২ বল খেলে ফেলেছেন তিনি। অপরাজিত রয়েছেন ৩৮ রানে। মেরেছেন চারটি চার।
কিউয়ি পেসারদের মধ্যে সেরা অবশ্যই অভিষেককারী জেমিসন। দীর্ঘকায় পেসার এ দিন নিলেন পূজারা, কোহালি ও বিহারির উইকেট। ১৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে দিয়েছেন ৩৮ রান। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে স্বস্তি দিয়েছেন তিনি। বুঝতে দেননি নীল ওয়াগনারের অভাব।
তৃতীয় সেশনে এক বলও খেলা হয়নি। প্রচণ্ড জোরে নামে বৃষ্টি। পরে আম্পায়াররা মাঠ পরিদর্শন করে খেলা এ দিনের মতো স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সারা দিনে তাই খেলা হল মোটে ৫৫ ওভার। শনিবার সেই কারণেই ৯৮ ওভার খেলা হওয়ার কথা।