অলিম্পিক্সে পদক জেতার পরে স্বপ্নিল কুসালে। ছবি: পিটিআই।
প্রথম দু’রাউন্ডের পরে পিছিয়ে ছিলেন স্বপ্নিল কুসালে। তৃতীয় রাউন্ডে ফেরেন তিনি। ছ’নম্বর থেকে তিন নম্বরে উঠে আসেন। প্যারিস অলিম্পিক্সে ৫০ মিটার রাইফেল থ্রি পজিশনসে ব্রোঞ্জ জিতেছেন স্বপ্নিল। পিছিয়ে থেকে কী ভাবে পদক জিতলেন ভারতীয় শুটার? সেই রহস্য ফাঁস করলেন তিনি।
ম্যাচ শেষে স্বপ্নিল বলেন, “প্রত্যেক বার শট মারার আগে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছিলাম। আমার কয়েকটা গোপন মন্ত্র আছে। সেগুলো আওড়াচ্ছিলাম। তার পরে শট মারছিলাম।”
অন্য কোন প্রতিযোগী কত স্কোর করছেন, সে দিকে নজর ছিল না স্বপ্নিলের। এমনকি, নিজের স্কোরের কথাও ভাবছিলেন না তিনি। শুধু নিজের স্নায়ুকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছিলেন। ভারতীয় শুটার বলেন, “আমি শুধু নিজের স্নায়ুকে নিয়ন্ত্রণে রাখছিলাম। কত স্কোর করছি দেখিনি। এত বছর ধরে যা অনুশীলন করেছি সেটাই করার চেষ্টা করছিলাম। তাতে সফল হয়েছি।”
নিজের প্রথম অলিম্পিক্সে পদক জিতেছেন, তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না স্বপ্নিলের। তিনি বলেন, “এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না পদক জিতেছি। মনের মধ্যে কিছু একটা হচ্ছে। তবে দেশকে পদক দিতে পেরে আমি গর্বিত। শুরুতে একটু চাপে ছিলাম। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি।”
ফাইনালে শুরুটা খুব একটা ভালও হয়নি স্বপ্নিলের। প্রথমে ছিল ‘নিলিং’, অর্থাৎ হাঁটু মুড়ে বসে শুটিং। সেখানে প্রথম সিরিজ়ে (পাঁচটি শট) ৫০.৮ স্কোর করেন তিনি। শুরুতেই নেমে যান সাতে। পরের সিরিজ়ে স্কোর হয় আর একটু ভাল, ৫০.৯। তৃতীয় সিরিজ়ে অনেকটা এগিয়ে ৫১.৬ স্কোর করেন।
এর পরে ‘প্রোন’, অর্থাৎ বুকে ভর দিয়ে শুটিং ছিল। সেখানে প্রতিটি সিরিজ়েই ভাল স্কোর করেন তিনি। ৫২.৭, ৫২.২ এবং ৫১.৯ স্কোর করে চারে উঠে আসেন। এর পর ‘স্ট্যান্ডিং’, অর্থাৎ দাঁড়িয়ে শুটিং বিভাগের দু’টি সিরিজ়ে ৫১.১ এবং ৫০.৪ স্কোর করেন। তখনই তিনি তিন নম্বরে উঠে এসে পদকের আশা দেখাতে শুরু করেন।
এর পরেও বাকি ছিল লড়াই। একটি শটের পরে ‘এলিমিনেশন’ ছিল। অর্থাৎ একজন করে বাদ পড়ছিলেন। তিন নম্বর স্থান ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ছিল স্বপ্নিলের কাছে। তিনি প্রথম শটে ১০.৪ মারার পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শটে ৯.৪ ও ৯.৯ স্কোর করেন। তবে চতুর্থ স্থানে যিনি ছিলেন, তাঁর সঙ্গে এতটাই পার্থক্য ছিল যে স্বপ্নিল তৃতীয় স্থানে থেকে যান এবং ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করে ফেলেন।