নীরজ চোপড়া। —ফাইল চিত্র।
ইতিহাসের সামনে নীরজ চোপড়া। প্রথম ভারতীয় হিসাবে অলিম্পিক্সে দু’টি সোনা জিততে পারেন ভারতীয় জ্যাভলিন থ্রোয়ার। সেই লক্ষ্যেই বৃহস্পতিবার নামবেন তিনি। তবে লড়াইটা সহজ হবে না নীরজের। কারণ, প্রত্যাশার চাপ। গত বার তাঁর কাছে সোনার প্রত্যাশা ছিল না। এ বার রয়েছে। সেই চাপ সামলাতে হবে নীরজকে। পাশাপাশি এ বার নীরজের কয়েক জন কঠিন প্রতিপক্ষও রয়েছেন লড়াইয়ে।
এ বার সোনা জিততে মরিয়া নীরজ। সেই কারণে অলিম্পিক্স শুরু হয়ে গেলেও প্যারিসে যাননি তিনি। আটলান্টায় অনুশীলন করছিলেন। নীরজ যে ভাল ফর্মে রয়েছেন তা যোগ্যতাঅর্জন পর্বেই বোঝা গিয়েছে। ৮৯.৩৪ মিটার জ্যাভলিন ছুড়েছেন তিনি, যা তাঁর এই মরসুমের সবচেয়ে ভাল থ্রো। এক বার ছুড়েই সরাসরি ফাইনালে উঠেছেন। ফাইনালেও সেটাই করতে চান নীরজ।
তবে নীরজকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কয়েক জন রয়েছেন প্যারিসে। গ্রেনাডার অ্যান্ডারসন পিটার্স, পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম, জার্মানির জুলিয়েন ওয়েবার ভাল ফর্মে রয়েছেন। যোগ্যতাঅর্জন পর্বেও ভাল ছুড়েছেন তাঁরা। রয়েছেন চেকিয়ার ইয়াকুব ভাদলেচ। ক্রমতালিকায় শীর্ষে রয়েছেন তিনি। নীরজ কেরিয়ারে সবচেয়ে দূরে ৮৯.৯৪ মিটার ছুড়েছেন। ইয়াকুব, পিটার্স, নাদিমেরা ৯০ মিটারের বেশি ছুড়েছেন। তাই তাঁদের নিশ্চয়ই হালকা ভাবে দেখবেন না নীরজ।
যোগ্যতাঅর্জন পর্বে নীরজকে দেখে ভাল লেগেছে। খুব বেশি শক্তি প্রয়োগ করেননি তিনি। দেখে মনে হয়েছে, আরাম করে ছুড়েছেন। তাতেই এক নম্বরে শেষ করেছেন। ফলে ফাইনালে তাঁকে নিয়ে আশা করাই যেতে পারে। নীরজ অবশ্য জানেন, ফাইনালেই আসল লড়াই।
ফাইনালে ওঠার পরেই নীরজ জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও ভাবেই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হতে চান না তিনি। নীরজ বলেন, “ভাল ছুড়েছি। তবে এটা স্রেফ যোগ্যতা অর্জন পর্ব। আসল খেলা হবে ফাইনালে। দারুণ লড়াই হতে চলেছে। যোগ্যতা অর্জন পর্বেই টোকিয়োর সোনা জয়ের দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলেছি। আজ একটু হালকা ছিলাম। তবে ফাইনালে ভালই চাপ থাকবে।” টোকিয়োর থেকে প্যারিসের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে নীরজ বলেন, “টোকিয়োয় দিনের আলোয় ছুড়েছিলাম। এখানে পরিবেশ অনেক ঠান্ডা এবং আরামদায়ক। বাতাসে আর্দ্রতাও কম। টোকিয়োও বেশ গরম এবং আর্দ্রতা ছিল। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এখানে ঠাসা দর্শক। টোকিয়োয় সেটা ছিল না।” এ বছর খুব বেশি প্রতিযোগিতায় নামেননি নীরজ। সে সম্পর্কে বলেছেন, “কুঁচকিতে চোট ছিল। আরও নানা সমস্যার কারণে অনেক প্রতিযোগিতায় নামতে পারিনি। তবে অলিম্পিক্স ফাইনালের আগে নিজেকে পুরোপুরি ফিট রাখতে চাই।”
গত বারের মতো এ বারও কি সোনা আসবে? নীরজের উত্তর, “গত বারের চ্যাম্পিয়ন হিসাবে নামা আমার কাছে অনুপ্রেরণা। আমাকে তৈরি থাকতে হবে। যে কাজ করতে নামছি, সেটার উপর পুরোপুরি মনোযোগ দিতে চাই।” ভারতীয় তারকার কথা থেকে স্পষ্ট, পুরো মনোযোগ ফাইনালেই রাখতে চান। আগে থেকে কিছু ভাবছেন না। লক্ষ্য সোনা। নিজের সেরাটা দেবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় রাত ১১.৫৫ মিনিটে শুরু হবে নীরজের ফাইনাল ম্যাচ। টেলিভিশনে খেলা দেখা যাবে স্পোর্টস ১৮ চ্যানেলে। ডিজিটাল অ্যাপে সোনি লিভে দেখা যাবে খেলা।