কোজ়ো তাশিমা
করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে টোকিয়ো অলিম্পিক্স নির্ধারিত সময়ে হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল আগেই। এর মধ্যে মঙ্গলবার জানা গেল, জাপানের অলিম্পিক্স আয়োজক কমিটির সহকারী প্রধান কোজ়ো তাশিমা নিজেই করোনা-আক্রান্ত।
তাশিমা জাপান ফুটবল সংস্থারও প্রধান। এ দিন সেই সংস্থার তরফেই এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘আজই জানতে পারলাম আমি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত। শরীরে অল্প জ্বর রয়েছে। পরীক্ষায় নিউমোনিয়ার রোগলক্ষণও ধরা পড়েছে। তবে আমি ভাল আছি। চিকিৎসকের যাবতীয় পরামর্শ মেনেই চলছি।’’
তাশিমা ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে একাধিক কাজে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন। প্রথমে তিনি বেলফাস্টে যান আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা বোর্ড (আইএফএবি)-এর বার্ষিক সাধারণ সভায়। সেখান থেকে গিয়েছিলেন আমস্টারডামে উয়েফার বৈঠকে। তার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে জাপানে ফেরেন তিনি।
যে প্রসঙ্গে তাশিমা বলেছেন, ‘‘মার্চের শুরুতে বেলফাস্ট, আমস্টারডাম বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনকার মতো সন্ত্রস্ত অবস্থা তৈরি হয়নি। তখনও সেখানে করমর্দন, আলিঙ্গন বা চুম্বনের মাধ্যমে সম্ভাষণ জারি ছিল।’’ করোনা সংক্রমণের জেরে এই মুহূর্তে জাপান ফুটবল সংস্থার সদর দফতরে কর্মীদের বাড়িতে থেকেই কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাশিমা গত সপ্তাহের সেই দফতরে গিয়েছিলেন বেশ কিছু বৈঠক করতে। এর পরেই রবিবার জ্বর আসে তাঁর। সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকদের তিনি জানান, উয়েফার বৈঠকে সুইৎজ়ারল্যান্ড ও সার্বিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেছিলেন। যাঁরা পরে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এর পরেই পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাশিমাও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত।
মশাল দৌড়ে বিধিনিষেধ: গ্রিস থেকে অলিম্পিক্স মশাল জাপানের ফুকুশিমায় আসার কথা ২৬ মার্চ। সেখান থেকেই গোটা জাপানে মশাল দৌড় হওয়ার কথা। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে থাকছে অনেক বিধিনিষেধ। দর্শক সমাবেশ বন্ধ না করা হলেও টোকিয়ো অলিম্পিক্স আয়োজকদের অন্যতম প্রধান কর্তা তোশিরো মুতো বলেছেন, ‘‘শরীর অসুস্থ থাকলে কোনও দর্শক সামাজিক নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধ থেকে রাস্তায় এই মশাল দৌড় দেখতে যাবেন না। পাশাপাশি, মশাল বাহকদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে অনুষ্ঠানে তাঁদের অংশ নিতে দেওয়া হবে না।’’
সময় নিচ্ছে আইওসি: টোকিয়ো অলিম্পিক্সের ভবিষ্যৎ নিয়ে এ দিন সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে টেলি-আলোচনায় বসেছিলেন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)-র কর্তারা। সেখানেই ঠিক হয়েছে, টোকিয়ো অলিম্পিক্স নিয়ে এখনই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। আইওসি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘গোটা বিশ্ব করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপর্যস্ত। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের প্রস্তুতিতেও যার প্রভাব পড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটি নির্ধারিত সময়েই টোকিয়ো অলিম্পিক্স করতে চায়। এখনও অলিম্পিক্সের চার মাস বাকি রয়েছে। তাই তাড়াহুড়ো করে কোনও চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার নেই।’’
বাতিল বক্সিং: সোমবার থেকে টোকিয়ো অলিম্পিক্সের জন্য বক্সিংয়ে ইউরোপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঠিক ছিল, দর্শকহীন স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে প্রতিযোগিতা। কিন্তু ইউরোপে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য বাতিল হল এই প্রতিযোগিতাও।
বিমলের আবেদন: অলিম্পিক্সগামী ভারতীয় অ্যাথলিটদের প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষার পরে প্রস্তুতি শিবিরে যোগ দিতে বলা হোক। ভারত সরকারের কাছে এমন আবেদনই করেছেন প্রাক্তন জাতীয় ব্যাডমিন্টন কোচ বিমল কুমার। মঙ্গলবার সংবাদসংস্থাকে তিনি বলেন, ‘‘অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করে যে খেলোয়াড়েরা প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাদের প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করা হোক। কেউ করোনা সংক্রমিত হলে সে ক্ষেত্রে দু’সপ্তাহের মধ্যে সেরে উঠবে।’’
বন্ধ হল সাই: ভারতে করোনাভাইরাসের সাম্প্রতিক সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ হল সাই। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘‘যাঁরা অলিম্পিক্সে অংশ নেবেন, তাঁদের প্রস্তুতি চলবে।’’