লড়াকু: গ্যালারির পাশে না থাকাই উদ্বুদ্ধ করে নোভাককে। ফাইল চিত্র
সবাই শুনেছেন ‘রজার-রজার-রজার’। একজন বাদে। তিনি নোভাক জোকোভিচ। টেনিসে সার্বিয়ান মহাতারকার অপেক্ষা, সে-ই দিনের, যে দিন তাঁর নামেও জয়ধ্বনি দেবে উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টের দর্শকেরা। মজা করে বললেন, ‘সবাই শুনেছে রজার-রজার। আর আমি শুনেছি নোভাক-নোভাক। আসলে সেটা স্বপ্নে শোনা। আশা করি, পাঁচ বছর পরে, যখন আমার বয়সও সাঁইত্রিশ হবে, তখন আমার নাম ধরেও ওরা শব্দ-তরঙ্গ তুলবে।’’
উইম্বলডনে ফাইনালে পাঁচ সেটের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে রজার ফেডেরারকে হারানোর তৃপ্তি এখনও আচ্ছন্ন করে রেখেছে নোভাককে। তাঁর প্রাক্তন গুরু বরিস বেকার বলেছেন, ‘‘ছেলেটা টেনিসটা বড্ড ভাল খেলে। ওর আর একটু সম্মান প্রাপ্য। জানি না কেন নোভাক সেটা সব সময় পায় না।’’
এক পত্রিকার তরফে নোভাককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাঁর আসল ‘মোটিভেশন’ কী? এ হেন প্রশ্নে হেসে ফেলেন সার্বিয়ান তারকা। জবাবে যা বলেন তার মোদ্দা কথা, সব সময় গ্যালারি তাঁর পাশে থাকে না। কোর্টে অসাধারণ সব পারফরম্যান্সের পরেও নয়। এটাই নাকি তাঁকে আরও ভাল খেলতে উদ্বুদ্ধ করে। নোভাক স্বপ্ন দেখেন, গ্যালারির সবার ভালবাসা পাওয়ার পরিস্থিতিতে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার। ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে ফেডেরার বা রাফায়েল নাদালের ক্ষেত্রে। সঙ্গে জোকোভিচ আরও বলেন, ‘‘পরের পর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে যেতে যাই। তা সেটা যতই অতিমানবিক শোনাক না কেন। রজার, রাফাকে ছাপিয়ে গিয়ে একদিন এক নম্বরে পৌঁছনোই আমার একমাত্র লক্ষ্য। হ্যাঁ, লোকে যেন আমাকে সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক বলতে বাধ্য হয়। জানি না সেটা শেষ পর্যন্ত পারব কি না। তবে এটুকু বলতে পারি যে, আরও আরও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের জন্য আমার লড়াইয়ের পিছনে বয়স কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।’’
এখানেই থামেননি ষোলোটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক। আরও বলেছেন, ‘‘আসলে সব কিছু নির্ভর করছে টেনিসটা কতদিন খেলে যাব তার উপরে। মনে হয় আরও অনেক দিন খেলতে পারলে অবশ্যই সবাইকে ছাপিয়ে যেতেও পারব। অবশ্য অনেক দিন খেলতে পারা, না পারাটা আমার হাতেই থাকবে এমন কোনও কথা নেই। চোটের ব্যাপার আছে। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনে নিখাদ শান্তি থাকাও দরকার।’’
জোকোভিচের সব চেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বপ্ন সত্যি হবে কি না এমন জল্পনায় গা ভাসিয়েছেন বেকারও। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার মনে হয় নাদাল, রজার— দু’জনই আরও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবে। নোভাকের সুবিধে একটাই। ওর বয়সটা কম। এখন বত্রিশ। রাফা সেখানে তেত্রিশ। রজার সাঁইত্রিশ। সত্যি কথা বললে বলতে হয়, আমার বিশ্বাস নোভাকের পারা উচিত। কারণ বয়স ওর সঙ্গে। কিন্তু পারবেই, এমন কথা হলফ করে বলতে পারছি না। খেলোয়াড় জীবনে কখন কার কী ঘটে, সেটা বলা কঠিন। তা ছাড়া নতুনরা কোনও দিন চ্যালেঞ্জ জানাবে না, এমন তত্ত্বেও আমার বিশ্বাস নেই।’’