কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে অতনু। নিজস্ব চিত্র
চিনে বাড়তে থাকা করোনার কারণে স্থগিত হয়ে গিয়েছে এ বারের এশিয়ান গেমস। পিছিয়ে গিয়ে তা হবে পরের বছর। ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের কেউ খুশি, কেউ আবার হতাশ। বাঙালি তীরন্দাজ অতনু দাস প্রথম দলেই পড়েন। এশিয়ান গেমস পিছিয়ে যাওয়ায় প্রস্তুতি সময় আরও বাড়বে বলেই খুশি হয়েছেন তিনি। অতনুর আশা, মাঝের এই সময়টাও নিজের খেলায় আরও জোর দিতে পারবেন। ছোটখাটো ভুলত্রুটি আরও শুধরে নিতে পারবেন তিনি। তাঁর পাখির চোখ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ভাল ফল করা। তার পরে ভাববেন প্যারিস অলিম্পিক্স নিয়ে।
বুধবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে রাজ্য গেমসের একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিল অতনু। তাঁর ফাঁকেই অতনু আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “প্যারিস অলিম্পিক্স শুরু হতে এখনও অনেক দেরি। এশিয়ান গেমসে ভাল ফল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় ভালই হল। প্রস্তুতির জন্য অনেকটা সময় পাব। ফলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ভাল ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে নামতে পারব। ভারতীয় দলে সুযোগ পেতে চাই এবং ভাল পারফর্ম করতে চাই।” গত বার এশিয়ান গেমসে ব্যক্তিগত এবং দলগত, দু’টি বিভাগেই কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যান অতনু। মিশ্র বিভাগে দীপিকা কুমারির সঙ্গে জুটি বেধেছিলেন। সেখানে বিদায় নেন প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেই।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সেও অল্পের জন্য পদক ফস্কেছিলেন অতনু। দলগত বিভাগে কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে যান তাঁরা। ব্যক্তিগত বিভাগে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে তৃতীয় বাছাই ওহ জিন-হায়েককে হারিয়েছিলেন। কিন্তু কোয়ার্টারে বিদায় নেন। প্যারিসে কি পদকের অভাব পূরণ হবে? অতনু বললেন, “এখন আমি অলিম্পিক্স নিয়ে ভাবতেই চাই না। নিজের উপর চাপ আরও বাড়বে তাতে। মাথা ঠান্ডা রেখে প্রত্যেক দিন ধীরে ধীরে এগোতে চাই। আপাতত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপই আমার প্রধান লক্ষ্য। এই বছরের পুরোটা নিজের খেলা উন্নত করার দিকে মন দেব।” পরের বছর এশিয়ান গেমসের আগেই হতে পারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ।
নিজের খেলা উন্নত করার কাজে ইতিমধ্যেই লেগে পড়েছেন অতনু। এখন তিনি শিলংয়ের সাই কমপ্লেক্সে অনুশীলন করছেন। আগামী ১৫ তারিখই শিলংয়ে যাওয়ার কথা তাঁর। গত বছর বিয়ে করেন ঝাড়খণ্ডের তীরন্দাজ দীপিকা কুমারিকে। অতনু জানালেন, এই মুহূর্তে প্রস্তুতি নিতে দীপিকা রয়েছেন সোনিপতের সাই কেন্দ্রে। শহরে যে ভাবে তীরন্দাজি নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে, তাতে খুশি অতনু। নিজেই জানালেন, যখন কলকাতা তীরন্দাজি ক্লাবে অনুশীলন শুরু করেছিলেন, তখন মাত্র দু’-তিনজন প্রশিক্ষণ নিতেন। তিনি বেরনোর সময় সংখ্যাটা বেড়ে ৫০-৬০ জনে দাঁড়ায়। যে টাটা তীরন্দাজি অ্যাকাডেমি থেকে এক সময় ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন, এক সময় সেখানেই সুযোগ পান প্রশিক্ষণের। এ রকমই কিছু অজানা গল্প তুলে ধরেন তিনি।