আক্রমণাত্মক খেলতে কিবুর পছন্দ স্প্যানিশ ফুটবলারই

ভিকুনা বারো বছর পোলান্ডে কোচিং করিয়েছেন। তাঁর কোচিং জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ইউরোপে। নতুন গোলার্ধে কোচিং করে সাফল্য পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই দু’জন স্প্যানিশ ফ্রান মোরান্তা এবং  সালভা চামারোকে বেছে নিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৯ ০৬:১০
Share:

প্রত্যয়ী: মোহনবাগান কোচ কিবু। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আক্রমণাত্মক অথচ ভারসাম্য রেখে ফুটবল তাঁর পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে। সেটাই খেলাতে চান। এবং সে জন্যই স্প্যানিশ ফুটবলার বাছার দিকেই ঝুঁকেছেন কিবু ভিকুনা। মোহনবাগান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের ভাবনার কথা এ ভাবেই বলে দিলেন শিল্টন পালদের নতুন কোচ।

Advertisement

ভিকুনা বারো বছর পোলান্ডে কোচিং করিয়েছেন। তাঁর কোচিং জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ইউরোপে। নতুন গোলার্ধে কোচিং করে সাফল্য পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই দু’জন স্প্যানিশ ফ্রান মোরান্তা এবং সালভা চামারোকে বেছে নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘স্প্যানিশরা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। নমনীয়। টেকনিক্যালি শক্তিশালী। যে দু’জনকে নিয়েছি তারা যথেষ্ট ভাল।’’ যা থেকে স্পষ্ট, বাকি দুই বিদেশি বাছার ক্ষেত্রেও স্পেনের ফুটবলারই বেশি প্রাধান্য পাবে তাঁর কাছে। নতুন কোচের কথায়, ‘‘কাজ চলছে। ক্লাব ডিরেক্টরদের সঙ্গে কথা বলে বাকি ফুটবলারদের বেছে নেব।’’

ছোট্টখাট্টো চেহারার কিবু এ দিনের কথাবার্তায় ঘুরিয়ে হাইতির স্ট্রাইকার সনি নর্দেকে দলে নেওয়ার সম্ভাবনা কার্যত খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘সনি নর্দে বড় ফুটবলার। তবে ওকে নিয়ে কোনও খবর আমার কাছে অন্তত নেই।’’

Advertisement

ক্লাব থেকে সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার রথযাত্রার দিন অনুশীলনে নামবেন আজহারউদ্দিন মল্লিকরা। কিন্তু এ দিনই ফুটবলারদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে মাঠে নেমে পড়েন কিবু। সহকারী ও ফিজিয়োকে নিয়ে। চার জন গোলকিপার ও ১৯ জন ফুটবলার ছিলেন অনুশীলনে। তার মধ্যে ছয় জন জুনিয়র দলের ফুটবলার ট্রায়াল দিতে এসেছিলেন। সেই দলে প্রাক্তন ফুটবলার জামশিদ নাসিরির ছেলে কিয়ান নাসিরিকেও দেখা গেল। প্রায় দু’ঘণ্টা অনুশীলন করিয়ে এসে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ বলে দিলেন, ‘‘কলকাতা লিগের আগে দশ দিনের আবাসিক শিবির করব। দু’তিনটে অনুশীলন ম্যাচ খেলার ইচ্ছে আছে।’’

কোচিং করানোর পাশাপাশি এক সময়ে সাংবাদিকতাও করতেন কিবু। এ দিন কথা বলার সময় সেটা বোঝা গিয়েছে। কোনও প্রশ্নে ধোঁয়াশা রেখেছেন। কোনওটা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর দিয়েছেন। আদ্যন্ত পেশাদার। মুখে হাসি না থাকলেও মানুষের সঙ্গে মিশতে জানেন। ফেরার সময় দু’তিনজন সমর্থককে ডেকে নিয়ে ছবিও তুললেন। বোঝাই যাচ্ছিল, বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে চান তিনি। ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস থেকে কলকাতা ডার্বি, ভারতীয় ফুটবল থেকে আই লিগ, সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তবে মেপে।

কলকাতা ডার্বির দীর্ঘ ইতিহাসে এই প্রথম বার দুই স্প্যানিশ কোচ মুখোমুখি হবেন। সেই তথ্য জেনেও যেমন কিবু বললেন, ‘‘আলেসান্দ্রোকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। তবে ভাল কোচ। আর ডার্বি? ওটা তো কলকাতা লিগে একবার খেলতে হবে। জানি, ইস্টবেঙ্গল আমাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।’’ পাশাপাশি বলে দিলেন, ‘‘আই লিগ না আইএসএল—কোথায় দল খেলবে, সেটা ঠিক করবেন কর্তারা। তবে আই লিগও খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা।’’

ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে তাঁর প্রথম ধারণা হয় অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ দেখার পরে। বলেও দিলেন, ‘‘ওই দলের একজন ফুটবলার নওরেম আমার দলে আছে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের কিছু খেলা দেখেছি।’’ কোন কোচের দর্শন তাঁর পছন্দ? বিতর্কের ধারকাছ দিয়ে না গিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, পেপ গুয়ার্দিওলা থেকে দিয়েগো সিমিয়োনে—বিশ্বের জনা ছয়েক কোচকে তিনি পছন্দ করেন। বললেন, ‘‘সবার কাছ থেকেই কিছু না কিছু শিক্ষা নিই।’’ জানিয়ে দিলেন, ফুটবলারদের ভাল করে দেখেই ফর্মেশন ঠিক করবেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement