স্টিভ ভ্যান ডে ভেলডে। ছবি: এক্স (টুইটার)।
ধর্ষণের অপরাধে জেল খাটা এক খেলোয়াড়কে দেখা যাবে প্যারিস অলিম্পিক্সে। নেদারল্যান্ডসের বিচ ভলিবল খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউরোপের একাধিক সামাজিক সংগঠন। যদিও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সমাজমাধ্যমে আলাপ। লন্ডনের বাসিন্দা ১২ বছরের কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলতেও সময় লাগেনি। নাবালিকা প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে ২০১৪ সালে নেদারল্যান্ডস থেকে লন্ডনে গিয়েছিলেন স্টিভ ভ্যান ডে ভেলডে। ১৯ বছরের ভেলডে তখন দেশের অন্যতম সেরা তরুণ বিচ ভলিবল খেলোয়াড়। সমাজমাধ্যমে আলাপ হওয়া প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার অছিলায় শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করেছিলেন তিনি। কিশোরীর আপত্তিকে গুরুত্ব দেননি। ঘটনার পর পুলিশের কাছে অভিযোগ করে তাঁর নাবালিকা প্রেমিকা। ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
আদালতে শুনানির পর অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় ২০১৬ সালে চার বছরের জেল হয় ভেলডের। রায় ঘোষণার সময় বিচারক ফ্রান্সিস শেরিডান বলেছিলেন, ‘‘দেশ ছেড়ে লন্ডনে না এসে তুমি আগামী অলিম্পিক্সের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারতে। সেটাই তোমার জন্য ভাল হত। তোমার স্বপ্ন দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। এখন সেটা শেষ হয়ে যাবে।’’ ভেলডের আইনজীবী লিন্ডা স্ট্রুডউইক তাঁর ভলিবলজীবনের কথা বলে কম সাজার জন্য সওয়াল করেছিলেন। তা গ্রাহ্য করেনি আদালত। রায় শুনে হতাশ লিন্ডা বলেছিলেন, ‘‘এক জন প্রতিভাবান ভলিবল খেলোয়াড়ের জীবন শেষ হয়ে গেল।’’
সকলে সেটাই ধরে নিয়েছিলেন। সাজা হওয়ার সময় ভেলডের বয়স ছিল ২১। এর পর ২৫ বছর পর্যন্ত জেলে থাকা মানে খেলোয়াড়জীবনের সেরা সময়টাই নষ্ট। ফিরে আসার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। তাঁকে অবশ্য ব্রিটেনের জেলে বন্দি থাকতে হয়নি। তাঁকে নেদারল্যান্ডসে ফেরত পাঠিয়ে দেয় ব্রিটিশ সরকার। নিজের দেশের জেলে বন্দি ছিলেন ভালডে। তবে চার বছর নয়, এক বছর। বিচ ভলিবল খেলোয়াড়কে ২০১৭ সালে মুক্তি দেওয়া হয় ১২ মাস সাজা ভোগের পর। তাঁর খেলোয়াড়জীবনকে গুরুত্ব দিয়েই মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
হাল ছাড়েননি ভালডেও। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে যেতে পারেননি। তবে সঙ্গী ম্যাথিউ ইমার্সকে নিয়ে প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করেছেন ২৯ বছরের ভালডে। তাঁদের জুটি পুরুষদের বিচ ভলিবলে এখন বিশ্বের ১১ নম্বর। পদকের লক্ষ্যে প্যারিসে যাবেন তাঁরা।
ধর্ষণের অপরাধে জেল খাটা এক জন অলিম্পিক্সে নামলে, প্রতিযোগিতার গরিমা নষ্ট হবে। ক্রীড়াবিশ্বের কাছে ভুল বার্তা যাবে। এমন কথা বলছেন অনেকেই। একাধিক সমাজসেবামূলক সংস্থা ভালডের অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণের বিরোধী। যদিও ডাচ অলিম্পিক কমিটি এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিটি এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে।