কেন্দ্রের নির্দেশে নাডা-র সঙ্গে যুক্ত হল বিসিসিআই।
জাতীয় অ্যান্টিডোপিং সংস্থা (নাডা)-র আওতায় আসতে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)-কে নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। এত দিন পর্যন্ত বিসিসিআই নিজস্ব পদ্ধতিতে ক্রিকেটারদের ডোপ পরীক্ষা করত। এবার থেকে সমস্ত ভারতীয় ক্রিকেটারের ডোপ পরীক্ষা করবে নাডাই। বোর্ডের সিইও রাহুল জোহরির সঙ্গে দেখা করে শুক্রবার এ কথা জানিয়ে দিলেন ভারতের ক্রীড়া সচিব রাধেশ্যাম ঝুলনিয়া।
বিসিসিআই এত দিন পর্যন্ত নাডা-র অন্তর্ভুক্ত ছিল না। বারবার তারা প্রশ্ন তুলেছিল নাডা-র গুণমান নিয়ে। এত দিন পর্যন্ত তারা নিজেরাই ক্রিকেটারদের ডোপ পরীক্ষা করত। কিন্তু আজকের পর থেকে সেই পথ বন্ধ হয়ে গেল। ঝুলনিয়া জানিয়েছেন, বিসিসিআই সিইও রাহুল জোহরি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন যে তাঁরা এ বার থেকে নাডা-র সঙ্গে যুক্ত হলেন। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিসিসিআই অ্যান্টি ডোপিং ম্যানেজার অভিজিৎ সালভি বলেছেন, “আমরা যদি নাডা-র মান নিয়ে খুশি হই, তাহলে নাডা-কে না মানার কোনও কারণ নেই।”
আরও পড়ুন: বৃষ্টিভেজা ম্যাচে বিরাটের নাচ, ভিডিয়ো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
ক্রীড়া সচিব বলেছেন, “সব ক্রিকেটারদের ডোপ পরীক্ষা করবে নাডা। বিসিসিআই তিনটি ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন— ডোপ পরীক্ষার কিট, প্যাথোলজিস্টদের দক্ষতা এবং নমুনা নেওয়ার পদ্ধতি। তবে আমরা তাঁদের আশ্বস্ত করেছি যে, তাঁরা যা চাইছেন তা-ই দেওয়া হবে, তবে এর জন্য কিছু অতিরিক্ত চার্জ লাগবে। কিন্তু বিসিসিআইয়ের জন্য আলাদা নিয়ম আর বাকিদের জন্য আলাদা নিয়ম থাকবে, এটা হতে পারেনা। তাই নাডা-র সঙ্গে যুক্ত করা হল তাদের।”
আরও পড়ুন: আমাকে গড়াপেটার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, দাবি পাক ব্যাটসম্যানের
পৃথ্বী শ-এর ডোপ কেলেঙ্কারিতে ধরা পরার পরেই নড়েচড়ে বসে ক্রিকেট মহল। বোর্ডের ডোপবিরোধী কর্মসূচি অনুযায়ী চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার সময় তাঁর মূত্র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনায় ধরা পড়ে টার্বুটালিনের উপস্থিতি। যা সাধারণত সর্দি-কাশির জন্য ব্যবহৃত সিরাপে থাকে। বিশ্ব ডোপবিরোধী সংস্থার (ওয়াডা) নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে টার্বুটালিন। ঘটনা হল, এই ধরনের নিষিদ্ধ যৌগ উপাদান যে ওষুধে থাকে, তা একান্তই যদি কোনও খেলায়াড়কে গ্রহণ করতে হয়, তবে তাঁর সঙ্গে ‘থেরাপিউটিক ইউজ এক্সেমপসন সার্টিফিকেট’ থাকা বাধ্যতামূলক। তাঁর কাছে তেমন কোনও সার্টিফিকেট ছিল না। মূত্র নমুনায় নিষিদ্ধ ওষুধের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পরেই গত ১৬ জুলাই বোর্ডের ডোপবিরোধী আইনের ২.১ ধারা লঙ্ঘন করার অভিযোগ করা হয় পৃথ্বীর বিরুদ্ধে। ২৬ জুন তাঁর বিরুদ্ধে ডোপবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। বোর্ডের ডোপবিরোধী ধারা অনুযায়ী তাঁর শাস্তি শুরু হয়েছে ১০ মার্চ থেকে। শাস্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৯ নভেম্বর মধ্যরাতে। এই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়া নিয়ে সক্রিয় হয় নাডা। তাদের না মানার জন্য বিতর্কও সৃষ্টি হয় বিসিসিআই-কে নিয়ে। সেই বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে ভারত সরকার বিসিসিআই-কেও নাডা-র ছাতার তলায় নিয়ে চলে এল।