কোকোর কান্না মুছিয়ে ম্যাচের সঙ্গে হৃদয়ও জিতলেন ওসাকা

হারের পরে কেঁদে ফেলেন কোকো। ওসাকা এসে তাঁকে থামান এবং কোর্টে সাক্ষাৎকার দেন কোকোকে পাশে নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:২৯
Share:

সহমর্মী: ম্যাচের পরে কান্নায় ভেঙে পড়া কোকো-কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ওসাকা। তাঁর এই ব্যবহারে মুগ্ধ টেনিস বিশ্ব। এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে শীর্ষ বাছাই এবং গত বারের চ্যাম্পিয়ন নেয়োমি ওসাকার বিরুদ্ধে পনেরো বছরের মার্কিন মেয়ে কোকো গফ কী করেন, দেখার জন্য তুমুল আগ্রহ ছিল। যুক্তরাষ্ট্র-টেনিসের নতুন বিস্ময় অবশ্য দাঁড়াতেই পারেননি। ওসাকা জেতেন ৬-৩, ৬-০। তবে কোর্টে ম্যাচ জেতার পাশাপাশি কোর্টের বাইরে তাঁর ব্যবহারে সবার হৃদয়ও জয় করে নেন ওসাকা।

Advertisement

হারের পরে কেঁদে ফেলেন কোকো। ওসাকা এসে তাঁকে থামান এবং কোর্টে সাক্ষাৎকার দেন কোকোকে পাশে নিয়ে। ব্যাপারটায় একটু হলেও লজ্জা পেয়ে যান বিস্ময় কিশোরী। তিনি পরে বলেন, ‘‘হেরে যাওয়ার পরেও কোর্টে থাকতে চাইনি। নেয়োমি আমাকে বারবার অনুরোধ করছিল। এ-ও বলে যে, শাওয়ারের সময় কান্নাকাটি করার চেয়ে সবার সামনে কথা বলো, ভাল লাগবে। শেষ পর্যন্ত রাজি হই। বিশ্বাস করুন, চাইনি সবাই এটা ভাবুন, আমি ওর আনন্দের মুহূর্তে ভাগ বসাচ্ছি।’’

জুলাইয়ে উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ডে উঠে টেনিস বিশ্বকে চমকে দেওয়া ১৫ বছরের কোকো আরও বলেন, ‘‘ম্যাচের পরে নেয়োমি দেখিয়ে দিল, ও সত্যিকারের একজন খেলোয়াড়। আমার কাছে সত্যিকারের খেলোয়াড় সে-ই, যে কোর্টে চূড়ান্ত শত্রুর মতো খেলবে কিন্তু কোর্টের বাইরে প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠবে। নেয়োমি সেটাই করেছে।’’ ওসাকা আবার সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে কোকোর বাবা-মা-কে উদ্দেশ্য করে কোর্টেই বলেন, ‘‘আপনারা অসাধারণ এক খেলোয়াড়কে বড় করে তুলেছেন। মনে আছে, আমি যেখানে প্র্যাক্টিস করতাম, সেখানে আপনাদেরও দেখেছি। এটা দারুণ ব্যাপার যে, এই মঞ্চে আমরা আজ খেলছি। দুজনেই পরিশ্রম করছি এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আপনারা অসাধারণ। কোকোও অসাধারণ।’’

Advertisement

পরে সাংবাদিক বৈঠকে নেয়োমি বলেন, ‘‘ম্যাচের পরে হাত মেলানোর সময়ই লক্ষ্য করি ও কাঁদছে। মনে পড়ল, ওর বয়সটা কত কম। তখন মনে হল, যাঁরা এতক্ষণ ওর জন্য গলা ফাটাচ্ছিল, তাঁদের জন্য কোর্টে যদি কোকো কিছু বলে, তাঁদেরও ভাল লাগবে।’’

ওসাকার অসামান্য মানসিকতায় মুগ্ধ টেনিস বিশ্ব। কিংবদন্তি বিলি জিন কিংয়ের টুইট, ‘‘অভিনন্দন ওসাকাকে। কোর্টে যে রকম দুরন্ত, কোর্টের বাইরেও তেমন। কোকো এখন নিশ্চয়ই বুঝেছে, এক নম্বর হতে গেলে কী করতে হবে। আমরা কত ভাগ্যবান মেয়েদের টেনিসের এক নতুন যুগের ভোর দেখলাম।’’ জিমন্যাস্টিক্সের কিংবদন্তি নাদিয়া কোমানেচি টুইট করেছেন, ‘‘এত অপূর্ব মুহূর্ত আগে দেখিনি। নেয়োমি যে ভাবে তুমি কোকোকে কাছে টেনে নিলে, সেটা ওর প্রাপ্য ছিল। তোমার এই দৃষ্টিভঙ্গির জন্য অনেক ধন্যবাদ।’’

রবিবার আবার চতুর্থ রাউন্ডে অঘটন ঘটালেন চিনের ওয়াং কিয়াং। ১৮ নম্বর বাছাই ৬-২, ৬-৪ হারান দ্বিতীয় বাছাই ও ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন অ্যাশলে বার্টিকে। অন্য ম্যাচে সেরিনা উইলিয়ামস হারিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার পেত্রা মার্তিচকে। এই ম্যাচের ফলাফল ৬-৩, ৬-৪।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement