মহাতারকা দর্শনে তারকাও। মঙ্গলবার ডেভিস কাপের প্র্যাকটিসে নাদাল। দর্শকদের ভিড়ে লিয়েন্ডার। নয়াদিল্লি। ছবি: উৎপল সরকার
শক্তির দিক থেকে দুই দল তুলনাতেই আসে না— ভারত আর স্পেন। তবু ডেভিস কাপে ওয়ার্ল্ড গ্রুপে ওঠার লড়াইয়ের আগে স্প্যানিশ টিমের মহাতারকা কিন্তু বিন্দুমাত্র অসম্মান করলেন না বিপক্ষদের। আসল চ্যাম্পিয়নরা যা করে থাকেন— রাফায়েল নাদাল।
১৪ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী বরং যথেষ্ট সমীহ করছেন ভারতকে। নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে মঙ্গলবার নাদাল বললেন, ‘‘ভারত নিজেদের পছন্দ করা কন্ডিশনে ওদের সমর্থকদের সামনে খেলবে। আর ডেভিস কাপে ‘অঘটন’ কিন্তু প্রায়ই হয়। আগেও হয়েছে। আমরা এমন কয়েকবার হেরেছি, যেখানে আমাদের ফেভারিট বলা হয়েছিল। তা ছাড়া ভারতের একটা সুনাম আছে। ওদের ভাল প্লেয়ার আছে, ডাবলস টিমটাও ভাল।’’
দু’বছর আগে ডেভিস কাপের ওয়ার্ল্ড গ্রুপ থেকে নেমে যাওয়ার পর কয়েকটা টাইয়ে ফেভারিটের তকমা নিয়ে নেমেও জিততে না পারার যন্ত্রণা যে এখনও তাড়া করছে স্প্যানিশদের, তা নাদালের কথাতেই পরিষ্কার। ‘‘এর আগে কয়েকবার আমাদের সামনে সুযোগ এসেছিল ওয়ার্ল্ড গ্রুপে উঠে আসার। কিন্তু সেই সুযোগ আমরা নিতে পারিনি। আশা করছি এ বার ছবিটা বদলাতে পারব। স্পেনের মতো টিমের ওয়ার্ল্ড গ্রুপে থাকা উচিত।’’
দু’বছর আগে ওয়ার্ল্ড গ্রুপের প্লে অফে ব্রাজিলের কাছে ১-৩ হেরেছিল স্পেন। তার আগে ওয়ার্ল্ড গ্রুপের প্রথম রাউন্ডে জার্মানির কাছেও হারে তারা। গত বছরও ইউরোপ-আফ্রিকা গ্রুপে রাশিয়ার কাছে ২-৩ হারে স্প্যানিশ টিম। তবে এই টাইগুলোতে সেরা দল নামায়নি স্পেন। নাদাল বা দাভিদ ফেরার কেউই দলে ছিলেন না। ২০০৪ থেকে ২০১১-র মধ্যে স্পেনের চার বার ডেভিস কাপ জয়ে নাদালের বড় ভূমিকা ছিল।
এ বার ভারতের সামনে নাদাল ছাড়াও বিশ্বের ১৩ নম্বর ফেরার আর ফরাসি ওপেন ডাবলস চ্যাম্পিয়ন ফেলিসিয়ানো ও মার্ক লোপেজের জুটি রয়েছে। তবে যতই শক্তিশালী দল হোক না কেন, কেউই ভারতকে হাল্কা ভাবে নেওয়ার ভুল করছেন না। শুধু নাদাল নন, একই কথা জানিয়ে দিলেন টেনিসের ‘ম্যারাথন ম্যান’ বলে বিখ্যাত দাভিদ ফেরারও। বললেন, ‘‘ডেভিস কাপে র্যাঙ্কিংয়ের জন্য আমাদের এই টাইয়ে ফেভারিট বলা হচ্ছে। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে যে আমরা ভারতে খেলছি। এবং অন্য রকম একটা কন্ডিশনে। এটুকু বলতে পারি আমি সেরাটা দিয়ে ভাল একটা ম্যাচ খেলার চেষ্টা করব।’’ ২৬টা সিঙ্গলস ট্রফিজয়ী ফেরার আরও বলেছেন, ‘‘এই টাইটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নাদাল আর ফেলিসিয়ানো লোপেজের এ বার দলে থাকাটা আমাদের পক্ষে ভাল।’’
যাঁদের উপর ভরসা ফেরারের, সেই ফেলিসিয়ানো, আবার বললেন, সন্ধ্যায় ম্যাচ হওয়াটা দুটো দলের পক্ষেই ভাল। ‘‘কন্ডিশনটা সব সময়ই বড় ফ্যাক্টর। আমরা সারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় খেলেছি। তাই সন্ধ্যায় খেলা হওয়াটা শুধু আমাদের জন্য নয় ভারতেরও অ্যাডভান্টেজ। খারাপ কন্ডিশনে পারফরম্যান্স ভাল হয় না। তাই আমি বলব সন্ধ্যায় খেলা হওয়ার সিদ্ধান্তটা খুব ভাল।’’
স্প্যানিশ টিমের ক্যাপ্টেন কনচিতা মার্টিনেজ অবশ্য বলছেন তাঁদের প্লেয়াররা সন্ধ্যার বদলে দিনে খেলতে হলেও তৈরি থাকতেন। ১৯৯৪-এর উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন এবং বিশ্বের প্রাক্তন দু’নম্বর কনচিতা বলেছেন, ‘‘আমাদের প্লেয়ারদের সারা বছর সার্কিটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। অস্ট্রেলিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র ওপেনেও কন্ডিশন খুব কঠিন ছিল। আমাদের যদি টাইটা দিনেও খেলতে হত, তা হলেও কোনও ব্যাপার ছিল না। প্রস্তুত থাকতাম।’’