-স্ত্রীর সামনে ফের রোহিতের বিস্ফোরণ। অভিনন্দন বাটলারের। -বিসিসিআই
রোহিত শর্মার ব্যাটিং
একেই বলে লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট। গেইল, এবি-রা টি-টোয়েন্টিতে বড় ইনিংস খেললে সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়। রোহিতেরটা নয়। ওপেনিংয়ে এসে ক্রিজে থিতু হতে একটু যা সময় নেয়। তার পর নিঃশব্দে কখন যে ম্যাচ উইনিং ইনিংস খেলে চলে যাবে রোহিত, ফিল্ডিং সাইড যেন বুঝতেই পারে না! রান তাড়া করতে নামলে তো আরওই। যেমন এ দিনও ১৪০-এর উপর স্ট্রাইকরেট রেখে ৬০ বলে ৮৫ নটআউট থাকল, আটটা বাউন্ডারির সঙ্গে সঙ্গে গোটা তিনেক ওভার বাউন্ডারি মারল— কিন্তু আক্রমণটা যেন গেইল-এবিদের মতো প্রকট নয়। মাইকেল হোল্ডিংয়ের পেস বোলিংকে যেমন বলা হত ‘সাইলেন্ট অ্যাসাসিন’ আমার কাছে রোহিতের ব্যাটিংও যেন অনেকটা তাই!
স্মিথের আউটের মুহূর্ত
আগের গুজরাত ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিল স্টিভন স্মিথ, রবিবার যেন সেখান থেকেই শুরু করেছিল। ২৩ বলে ৪৫ করা অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে দেখে যখন মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয় ওভারে টিমের ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ রাহানেকে হারানোর ধাক্কা সামলে সৌরভ তিওয়ারিকে নিয়েই পুণেকে বড় স্কোরে পৌঁছে দেবে, ঠিক তখনই আউট হয়ে গেল। নইলে ওই সময় কিন্তু দশ ওভার শেষ হওয়ার আগেই একশোয় পৌঁছে যাচ্ছিল ধোনির দল। দুর্ধর্ষ টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং ফর্মে থাকা স্মিথ ডাগআউটে ফিরে যেতে দুর্বল ব্যাটিং লাইন আপের পুণের পক্ষে আর সম্ভব হয়নি ১৬০-এর বদলে ১৮০-১৯০-তে পৌঁছনো। ওরা আগেই পিটারসেন, ফাফ দু’প্লেসিকে হারিয়েছে। এ দিন আবার মিচেল মার্শ সেই লিস্টে ঢোকায় পুণের আর ব্যাটিং বলতে থাকলটা কী?
ধোনির ব্যাটিং অর্ডারে পরে নামা
টিমের এই ব্যাটিং দুর্দশায়, যার পিছনে দুর্ভাগ্য দায়ী, তা সত্ত্বেও এমএস ধোনি এ দিনও পাঁচে নামল। কোন এক হ্যান্ডসকম্ব-এরও পরে! ততক্ষণে ১২ ওভার চলে গিয়েছে। হ্যান্ডসকম্ব (৬) অহেতুক ১২টা বল খেয়ে চলে গিয়েছে। জানি ধোনির পিছনে যারা ব্যাট হাতে অপেক্ষা করছিল, তাদের কারও নাম থিসারা পেরেরা, কারও নাম রজত ভাটিয়া, কারও নাম রবি অশ্বিন— কিন্তু ধোনির আগেই বা রাহানে আর স্মিথ ছাড়া সত্যিকারের ব্যাটসম্যান বলতে পুণেতে এখন আর কে আছে? সেখানে ধোনি চারে তো বটেই, প্রয়োজনে স্মিথকে ওপেনে পাঠিয়ে নিজে তিনে নামলেও ঠিক ছিল। টি-টোয়েন্টিতে এখনও ধোনি যত বেশি বল খেলার সুযোগ পাবে, ওর টিমের ততই বড় রানের সম্ভাবনা। তিওয়ারি এ দিন না হয় ৫৭ করেছে, কিন্তু আবার কবে বড় রান করবে বোধহয় নিজেও জানে না।
পুণের দুর্বল বোলিং
আমাদের বাংলার দিন্দা খারাপ করছে না। এ দিনও একটা তুলল। কিন্তু দিন্দা, পেরেরা, ভাটিয়ারা কেউ ম্যাচ জেতানো বোলিং করার মতো পেসার নয়। একমাত্র ভরসার জায়গা রবি অশ্বিন আবার মোটেই ফর্মে নেই। এ দিনও ওকে পাওয়ারপ্লে-তে আনার ভরসা করেনি ধোনি। আসলে এ বার আইপিএলে উইকেট সে ভাবে স্পিনারদের সাহায্য করছে না। অক্ষর পটেল এ দিনই অবশ্য হ্যাটট্রিক করেছে। কিন্তু ও সম্পূর্ণ অন্য টাইপের স্পিনার।
উন্নত থেকে উন্নততর মুম্বই
এটা আইপিএলে ওদের ফ্র্যাঞ্চাইজির ট্রেডমার্ক। প্রায় প্রতি বার ঘটে। রোহিতের ব্যাটিংয়ের মতো ওর দলও একটু থিতু হয়ে সময় নিয়ে তার পর ছোটে। এখন ওদের সেই সময়টা চলছে। জিততে এতই মরিয়া টিমটা যে, ফিল্ডিংয়ের সময় রায়ডুর একটা মিস ফিল্ডিং দেখে হরভজনকে উত্তেজিত হয়ে ওর দিকে ছুটে গিয়ে ভর্ৎসনা করতেও দেখলাম টিভিতে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টস ২০ ওভারে ১৫৯-৫ (তিওয়ারি ৫৭, ধোনি ২৪, বুমরাহ ৩-২৯), মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৮.৩ ওভারে ১৬১-২ (রোহিত ৮৫ ন.আ.)।