সফল: ফরাসি ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে মুগুরুজা।—ফাইল চিত্র
ফরাসি ওপেনে মেয়েদের বিভাগে তারকাদের অভাবটা এ বার বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে। নামী মেয়ে খেলোয়াড়রা এ বার হয় খেলছে না, অথবা ছিটকে গিয়েছে। সে দিক থেকে পুরুষদের বিভাগে এ ব্যাপারটা নেই। তাই বলতে বাধ্য হচ্ছি, মেয়েরা ফরাসি ওপেনে যে গ্ল্যামারের ছটা আনত, এ বার তার অভাব টের পাচ্ছি।
শীর্ষবাছাই অ্যাঞ্জেলিক কের্বের ছিটকে গিয়ে তো মেয়েদের বিভাগে আলোটা আরও খানিকটা কমে গিয়েছে। এ ছাড়া যারা লড়াই করছে তাদের মধ্যে গারবিনে মুগুরুজা ছাড়া আর কারও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড নেই। অবশ্য ভিনাস উইলিয়ামসকে এর মধ্যে ধরা হচ্ছে না। তবে ভিনাসও তো ফরাসি ওপেনে কখনও চ্যাম্পিয়ন হয়নি। এই অবস্থায় আমার মনে হয় যে ভাল ছন্দে থাকার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে সেই চ্যাম্পিয়ন হবে। সিমোনা হালেপ আর এলিনা সোয়াইতোলিনাও এই তালিকায় আছে। অবশ্য যে ভাবে মেয়েদের বিভাগে লড়াই হচ্ছে, তাতে আমার মনে হয় গত বারের চ্যাম্পিয়ন, মানে মুগুরুজাই এগিয়ে।
কের্বেরের প্রসঙ্গে বলতে পারি এ ভাবে ওর ছিটকে যাওয়ায় জার্মান সমর্থকরা হতাশ। আমরা কের্বেরকে নিয়ে কিছুটা চিন্তায়ও আছি। কেন না সম্প্রতি ওর টুর্নামেন্টের প্রথম আর দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে হারের সংখ্যাটা বেশ বেড়ে গিয়েছে। এ বছর ও একটা খেতাবও জিততে পারেনি। আশা করছি ঘাসের কোর্টের মরসুম শুরু হওয়ার পরে ও ছন্দটা ফিরে পাবে। ঘাসের কোর্টের সঙ্গে ওর খেলার ধরনও বেশ খাপ খায়। হারানো ছন্দটা খুঁজে পেলে আবার ও জিততে শুরু করবে।
পুরুষদের বিভাগে লড়াইটা বেশ মসৃণ গতিতে এগোচ্ছে। ড্র-এ রাফা, নোভাক আর ডমিনিক থিয়েম যে অর্ধে আছে তাকে আমি এগিয়ে রাখছি মারে আর স্ট্যান ওয়ারিঙ্কার অর্ধের চেয়ে। ওয়ারিঙ্কাকে নিয়ে খুব একটা মাতামাতি দেখা না গেলেও আমার কাছে কিন্তু এ বার ও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম দাবিদার। এ ছাড়া পুরুষদের মধ্যে নামী সব প্লেয়াররাই প্রত্যাশামতো এগোচ্ছে। কেউই কোনও দুর্বলতা খুঁজে পাওয়ার সুযোগ দেয়নি। আমার মনে হয় টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে এগিয়ে যেতেও নামী খেলোয়াড়দের কোনও সমস্যা হবে না।
পেত্রা কিতোভা কোর্টে ফিরে এ বার দুটো ম্যাচেই যে ভাবে দর্শকদের অভিবাদন পেল, দেখে খুব ভাল লেগেছে। পাশাপাশি আমি তুলে ধরতে চাই এ বার টুর্নামেন্টে পুরুষ ও মেয়েদের দুটো বিভাগেই যে ভাবে আমরা খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা দেখেছি সেই ব্যাপারটা। যা খুব সুন্দর একটা সুর তৈরি করে দিয়েছে টুর্নামেন্টে। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্যও এটা একটা উদাহরণ তৈরি করে দিয়েছে যে, জেতাটা অবশ্যই জরুরি, পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ী মানসিকতা থাকাটাও। যেমন বৃহস্পতিবার দেল পোত্রো ওর বড় মনের পরিচয় দিল প্রতিদ্বন্দ্বী নিকোলাস আলমাগ্রো চোটের জন্য ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হওয়ার পর ওকে সান্ত্বনা দিয়ে। খেলোয়াড়রা সত্যিই চায় সবাইকে এটা দেখাতে যে তারা সৎ ভাবে খেলতে পারে আর তারাও মানুষ হিসেবে খুব ভাল। এটা দেখেই খুব ভাল লাগছে।