মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ফাইল চিত্র।
খেলাধুলোর প্রতি তাঁর অদম্য আগ্রহ লক্ষ্য করেছিলেন স্কুল শিক্ষকেরা। ডিএভি জওহর বিদ্যামন্দিরের গোলকিপার হিসেবে খেলার সময়ই তিনি নজর কাড়েন ছোটবেলার কোচ কেশব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলে উইকেটকিপারের অভাব ছিল। তাই এমন একজনকে কেশব চাইছিলেন, যে ঝাঁপিয়ে বল ধরতে পারে। ধোনির মধ্যে সেই ফিটনেস লক্ষ্য করেছিলেন কেশব। তাকে বেছে নেওয়া হয় স্কুলের উইকেটকিপার হিসেবে।
সেই যাত্রা শুরু। আন্তঃ স্কুল ম্যাচে ৪০ ওভারে ৪০০ রান করে জওহর বিদ্যামন্দিরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ধোনি। প্রত্যেকে এক নামে চিনতে শুরু করে শৈশবের ধোনিকে। কিন্তু বর্তমানে ধোনি যে রকম শান্ত, নম্র, ভদ্র ও ঠান্ডা মাথার মানুষ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত, শৈশবেও কি একই রকম ছিলেন? ক্লাসে কি আদৌ সে দুষ্টুমি করতেন? খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনা করে কত নম্বরে পেতেন? সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন ধোনির ক্লাস টিচার শর্মিষ্ঠা কুমার। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ধোনিদের ক্লাস টিচারের দায়িত্ব সামলানোর সঙ্গেই অর্থনীতি, বাণিজ্য ও গণিতবিদ্যা পড়াতেন শর্মিষ্ঠা ম্যাম। বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই একেবারে শান্ত। ক্লাসে এসে চুপ করে পড়া শুনত। বকা খেলে একেবারেই তর্ক করত না। মাথা নিচু করে নিজের ভুল স্বীকার করে নিত। এখন যেমন ধোনিকে দেখছেন, ছোটবেলাতেও ঠিক এমনটাই ছিল। পড়াশোনায় খারাপ বলব না। ও কিন্তু কখনও ফেল করেনি। প্রত্যেক বিষয়ে পাশ করে স্কুল থেকে বেরিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘ধোনিই ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক’
শর্মিষ্ঠা ম্যামের কাছে এক বার প্রচণ্ড বকা খেয়েছিলেন ধোনি। একাদশ শ্রেণিতে ফাইনাল পরীক্ষার আগে প্রায় সাত-আট দিন স্কুলে আসেননি ধোনি। কী ভাবে সিলেবাস শেষ করবেন তাঁর ছাত্র? তা নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলেন তিনি। আন্তঃ স্কুল ম্যাচে ১৩৭ বলে ২১৭ রান করে স্কুলে ফেরেন ধোনি। ক্লাসে ঢোকার সময়ই তাঁকে আটকান টিচার। বলছিলেন, ‘‘ধোনিকে খুব বকেছিলাম। একদম মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। পাশ থেকে ওর বন্ধু গৌতম বলেছিল, ম্যাম ও ডাবল সেঞ্চুরি করে এসেছে।’’ আরও বলেন, ‘‘ওর মুখ থেকে এক বারও কৃতিত্বের কথা বলতে শুনিনি। বকা খাওয়ার পরে আমাকে প্রশ্ন করল, কী করে এ বার সিলেবাস শেষ করব ম্যাম? আমার খারাপ লাগে। পরের দিনই ওকে একটি দামি পেন উপহার দিই। ২০০৫ সালে বিশাখাপত্তনমে প্রথম সেঞ্চুরি করে ফেরার পরে সেই পেন দিয়েই প্রত্যেককে অটোগ্রাফ দিয়েছিল ধোনি।’’ শর্মিষ্ঠা ম্যামকেও একটি চিঠি লেখেন ধোনি, যা তিনি এখনও রেখে দিয়েছেন সযত্নে।