নায়ক অজয়। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
গত মরসুমে আই লিগ আর ফেড কাপে বাগানের অ্যাওয়ে ম্যাচে ছিলেন সনি নর্ডির রুমমেট। ইংরেজিতে সড়গড় না হওয়ায় দু’জন দু’জনের কথা না বোঝায় তাঁকে নিয়ে মজা করতেন টিমমেটরা।
হুগলির মশাটের আজহারউদ্দিন মল্লিক তাই এ মরসুমে ইংরেজি শিখতে শুরু করেছেন। গতবার মোহনবাগানে আসার পর ভোররাতের ট্রেন ধরে অনুশীলনে আসতেন। এই বঙ্গসন্তান যেন রাম মালিকদের মতো হারিয়ে না যান, সে কারণে সঞ্জয় সেন-শঙ্করলাল চক্রবর্তী তাঁকে মোহনবাগান মেসে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
দুই কোচের সিদ্ধান্তটা যে কতটা কার্যকরী ছিল তা দেখা গেল রবিবার। বোঝা গেল ইংরেজির সঙ্গে নিজের উইং প্লে-ও ঝকঝকে করতে প্রচণ্ড খাটছেন বাঙালি ফরোয়ার্ড আজহার।
বৃষ্টি ভেজা মাঠে সত্তর মিনিট পর্যন্ত কোনও গোল নেই। সাদার্নের দীপক মণ্ডল, ইচেরা তখন বড় দলের বিরুদ্ধে ময়দানের সেই পুরনো থিওরি মেনে নিজেদের গোলের সামনে পায়ের জঙ্গল তৈরি করে ফেলেছেন। এই পরিস্থিতিতে অতীতে মোহনবাগান মাঠে ম্যাচের রাশ দখলে নিয়ে এসেছেন কখনও চিমা, কখনও শিশির, কখনও ব্যারেটো, কখনও সুব্রতও। এই বাগানের স্কটিশ স্ট্রাইকার ড্যারেল ডাফি এমনিতেই ময়দানের জলকাদার মাঠের বর্ণপরিচয় ঘাটছেন। বাউন্স বুঝতে গিয়ে মিস করলেন একের পর এক গোলের সুযোগ। বাগান কোচ শঙ্করলাল এই সময় তপন মাইতিকে বসিয়ে নামালেন মহমেডান থেকে আসা অজয় সিংহকে। আজহারকে ঠেলে দিলেন উইংয়ে। আর সেই মাস্টারস্ট্রোকে অজয়ের গোল। তিন ম্যাচে ন’পয়েন্ট।
অজয় গোল করলেও আসল কাজটা কিন্তু আজহারের। মিডল থার্ড থেকে উঠে অজয়ের জন্য এমন জায়গায় মাইনাসটা রাখলেন, যেখান থেকে গোল না করা অপরাধ। ম্যাচ দেখতে আসা প্রাক্তন বাগান অধিনায়ক কৃষ্ণেন্দু রায় বলে গেলেন, ‘‘আজহারের বল ছাড়া আর বল পায়ে দারুণ গতি। শটটাও মন্দ নয়। গোলের ছোকছোকানি বক্সের আশপাশে।’’ আর সুনীল ছেত্রীর ভক্ত আজহার বাড়ি যাওয়ার সময় বলে গেলেন, ‘‘সুনীল ছেত্রীর মতো হতে চাই।’’ বঙ্গ ব্রিগেডের উইং প্লে বাগানে প্রশংসা পেলেও ডিফেন্সে কিছু ভুলচুক হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে এ দিনই আফগান ডিফেন্ডার জোহিব আমিরির সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল মোহনবাগান।
মোহনবাগান: অর্ণব, সার্থক, রাজু, সঞ্জয়, তন্ময়, প্রবীর, শরণ, রেইনার (রবিনসন), তপন (অজয়), ডাফি (বিক্রমজিৎ), আজহারউদ্দিন।