রাজিনের গোলের পর তাঁর সঙ্গে উচ্ছ্বাস সতীর্থদের। — নিজস্ব চিত্র
কলকাতা হকি লিগের ডার্বিতে জিতল মোহনবাগান। ১৯ ফেব্রুয়ারি ভন্ডুল হয়ে যাওয়া ম্যাচ বৃহস্পতিবার মহমেডান মাঠে ফের খেলা হয়। সেখানে ইস্টবেঙ্গলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে সবুজ-মেরুন। ১৯ ফেব্রুয়ারির ম্যাচে মোহনবাগান এগিয়ে ছিল নীতীশ নিউপেনের গোলে। তার পরেই দু’দলের সমর্থকদের ঝামেলার কারণে খেলা ভন্ডুল হয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের ম্যাচে মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন রাজিন কান্দুলনা। ইস্টবেঙ্গলের গোলদাতা মাইকেল টোপনো। আগামী ১৯ মার্চ সুপার সিক্সের ম্যাচে আবার দেখা হবে দুই দলের। এ দিনের ম্যাচে কোনও দর্শক তো বটেই, ছিলেন না দুই ক্লাবের কর্তারাও।
বৃহস্পতিবারের ফলাফলে অবশ্য দুই দলেরই অবস্থানে কোনও নড়চড় হল না। দুই দলই উঠেছে সুপার সিক্সে। বাকি চার দল হল বিএনআর রিক্রিয়েশন ক্লাব, পূর্ব রেলওয়ে, পুলিশ এসি এবং পঞ্জাব স্পোর্টস। শুক্রবার থেকে শুরু হবে সুপার সিক্সের খেলা। মোহনবাগান মাঠে দুপুর সাড়ে ৩টেয় পূর্ব রেলের বিরুদ্ধে খেলবে পঞ্জাব স্পোর্টস। বিকেল ৫টা থেকে মোহনবাগান খেলবে বিএনআরের বিরুদ্ধে। ১৯ মার্চ, সুপার সিক্সের শেষ দিন মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের খেলা হবে দুপুর সাড়ে ৩টে থেকে।
উল্লেখ্য, ২২ বছর পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হকি লিগে মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। দীর্ঘ দিন পর এ বার হকি দল গড়ে খেলছে মোহনবাগান। সেই ম্যাচ নিয়ে বহু আগে থেকেই প্রতীক্ষা শুরু হয়েছিল। রাস্তায় রাস্তায় পোস্টার দিয়ে মানুষকে মহমেডান মাঠে অনুষ্ঠেয় এই ম্যাচে আসার জন্য অনুরোধ করেছিল হকি বেঙ্গল। ময়দানে দুই দলের কোনও খেলা থাকলেই ঝামেলা এড়ানো যায় না। ফলে হকিতে সেই নির্বিষ ম্যাচেও লেগে গিয়েছিল উত্তেজনা।
ম্যাচ থেকে হাজির হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের কর্তারা। ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার এবং মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত মাঠে ছিলেন। সূত্রের খবর, মোহনবাগান গ্যালারি থেকে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের উদ্দেশে কটূক্তি করা হয়েছিল। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তা মেনে নেননি। পাল্টা তাঁরাও জবাব দিয়েছিলেন। সেই নিয়েই ঝামেলা লেগে গিয়েছিলেন। মোহনবাগান গ্যালারি থেকে মাঠে ইট-পাটকেল পড়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, অতীতে আই লিগে দুই দলের ডার্বি ম্যাচ নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। তখন ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই দলই খেলত কলকাতা ডার্বিতে। সেই সময় ডার্বির ফিরতি লেগের একটি ম্যাচ করোনার কারণে বাতিল হয়ে যায়। সেই ম্যাচের আয়োজক ছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচের টাকা ফেরত পাননি বলে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন সমর্থকরা। দেবব্রত সরকারের উদ্দেশে করে শুরু হয়ে গিয়েছিল কটূক্তি, অশ্লীল মন্তব্য।
পাল্টা দিচ্ছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও। জবাবে মাঠে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেছিলেন মোহনবাগান সমর্থকরা। এর পরেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। মাঠে নেমেছিল ঘোড়সওয়ার পুলিশ। দর্শকদের বার করে দিয়ে গোটা মাঠ খালি করে দেওয়া হয়েছিল। খেলোয়াড়রা ঝামেলা শুরু হতেই সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। ইস্টবেঙ্গল দাবি তোলে, মাঠ পুরোপুরি দর্শকশূন্য করা না হলে তারা খেলতে নামবে না। পাল্টা মোহনবাগান সমর্থকরা যুক্তি দেন, হারছিল বলেই খেলতে নামবে না বিপক্ষ ক্লাব। হকি বেঙ্গলের তরফে জানা গিয়েছে, মাঠ ফাঁকা করেই পুরো খেলা আয়োজন করা হবে। সেটাই হল বৃহস্পতিবার।