দুই শাহরুখ ভক্তের দ্বৈরথ আজ ডার্বিতে

আশ্চর্যজনক ভাবে তাঁরা দু’জনেই শাহরুখ খানের ভক্ত। শুধু তাই নয়। কিংগ খানের সিনেমার অধিকাংশ জনপ্রিয় গানই তাঁদের মুখস্থ! প্রথম জন ইস্টবেঙ্গলের উইলিস প্লাজা। অন্য জন মোহনবাগানের আনসুমানা ক্রোমা।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৪
Share:

শাহরুখ ভক্ত:  ইস্টবেঙ্গলের উইলিস প্লাজা। মোহনবাগানের আনসুমানা ক্রোমা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

একজনের জন্ম ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোয়। যদিও তাঁর পূর্বপুরুষরা ভারত থেকেই গিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে।

Advertisement

আর একজন বড় হয়েছেন লাইবেরিয়ায়।

আশ্চর্যজনক ভাবে তাঁরা দু’জনেই শাহরুখ খানের ভক্ত। শুধু তাই নয়। কিংগ খানের সিনেমার অধিকাংশ জনপ্রিয় গানই তাঁদের মুখস্থ! প্রথম জন ইস্টবেঙ্গলের উইলিস প্লাজা। অন্য জন মোহনবাগানের আনসুমানা ক্রোমা। রবিবাসরীয় যুবভারতীতে আই লিগের ডার্বিতে আকর্ষণের কেন্দ্রে দুই শাহরুখ ভক্তের দ্বৈরথও।

Advertisement

গত মরসুমে আই লিগে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন প্লাজা। কিন্তু তার পরেই ছন্দপতন। প্লাজা ফর্ম হারিয়ে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলেরও আই লিগ জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল। এই মরসুমে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোর জাতীয় দলের স্ট্রাইকারকে বাদ দিয়েই দল গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লাল-হলুদ কর্তারা। কিন্তু কোচ খালিদ জামিল জোর করে প্লাজাকে ফিরিয়ে আনেন ইস্টবেঙ্গলে। সমর্থকরাও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কোচের সিদ্ধান্তে। অথচ সেই প্লাজাই এখন লাল-হলুদ সমর্থকদের ডার্বি জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ব্যর্থতার যন্ত্রণা নিয়ে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগোয় ফিরে যাওয়া প্লাজা নিজেও ভাবতে পারেননি যে, ইস্টবেঙ্গল ফের প্রস্তাব দেবে। শনিবার দুপুরে সল্টলেকে নিজের ফ্ল্যাটে বসে লাল-হলুদ স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘গত মরসুমে আমি নিজের সেরাটা দিতে পারিনি। গত মরসুমে ব্যর্থতা এখনও আমাকে যন্ত্রণা দেয়।’’ ব্যর্থতার কারণ কী ছিল? প্লাজার ব্যাখ্যা, ‘‘ভাইয়ের অসুস্থতা নিয়ে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ছিলাম। বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলাম। জীবন থেকে আনন্দটাই হারিয়ে গিয়েছিল। তার প্রভাব পড়েছিল খেলায়। তা ছাড়া আমার জীবনে শৃঙ্খলার অভাবও দেখা গিয়েছিল। তবে এখন কিন্তু আমি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছি।’’ লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের কথায়, ‘‘আমি এখন অনেক বেশি দায়িত্বশীল। জীবনে শৃঙ্খলা এসেছে। গোল করার জন্য সব সময় ছটফট করি। প্রত্যেকটা ম্যাচেই নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য নামি।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘তবে আমি ভাবিনি ইস্টবেঙ্গল আমাকে এই মরসুমে খেলার প্রস্তাব দেবে।’’

মোহনবাগান-বধ করতে তিনিই যে কোচের ভরসা, গত কয়েক দিনের অনুশীলনেই স্পষ্ট। প্লাজাকে সামনে রেখেই এক স্ট্রাইকার স্ট্র্যাটেজিতে খেলানোর পরিকল্পনা খালিদের। যদিও তা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে চান না প্লাজা। হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘এক স্ট্রাইকারে খেলা একটু কঠিন ঠিকই। কিন্তু ফুটবল এগারো জনের খেলা। মোহনবাগানের শুধু আমাকে আটকালেই হবে না। বাকি দশ জনকেও কিন্তু আটকাতে হবে।’’

প্লাজার পূর্বপুরুষরা না হয় ভারতে থাকতেন। তা ছাড়া ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বলিউডের সিনেমা প্রবল জনপ্রিয়। ফলে শাহরুখের প্রতি লাল-হলুদ স্ট্রাইকার আকৃষ্ট হতেই পারেন। কিন্তু আফ্রিকা মহাদেশের লাইবিরিয়ায় বড় হওয়া ক্রোমা কী ভাবে বলিউড ‘বাদশা’র ভক্ত হয়ে উঠলেন? সবুজ-মেরুন স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘লাইবেরিয়ায় প্রত্যেক শনিবার বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা দেখানো হয়। ১৯৯৮ সালে প্রথম বার কুছ কুছ হোতা হ্যায় দেখেই আমি শাহরুখের ভক্ত হয়ে যাই। তার পর থেকে ওর কোনও সিনেমাই বাদ দিইনি।’’

ক্রোমার কিংগ খান-প্রীতির প্রমাণ অবশ্য কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের সময়ই পেয়েছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। ম্যাচের সেরা হয়ে মাঠের মধ্যেই গেয়ে শুনিয়েছিলেন ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবির ‘তুম পাস আয়ে...’ গান। প্লাজার প্রিয় গান ‘দিলওয়ালে’ ছবির ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া...’।

রবিবার যুবভারতীর ‘বাদশা’ কে হবেন তা অবশ্য সময়ই বলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement