স্মৃতি: সিরাজের উত্থানের পিছনে ছিল বাবার অক্লান্ত পরিশ্রম। ইনস্টাগ্রাম
অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট দলে নির্বাচিত, এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের সঙ্গে স্টিভ স্মিথদের দেশে থাকা মহম্মদ সিরাজ হঠাৎই বাবাকে হারালেন। শুক্রবার মাত্র ৫৩ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন মহম্মদ ঘউস। তিনি ফুসফুসের রোগে দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছিলেন। ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সময়েই লড়াই হেরে গেলেন তিনি।
তবে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েও হায়দরাবাদের ফাস্ট বোলার দেশে ফিরতে পারবেন কি না, ঠিক নেই। অস্ট্রেলিয়ায় নিভৃতবাস পর্ব চলছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। সেখান থেকে বেরিয়ে দেশে ফিরে আবার অস্ট্রেলিয়া ফিরে যাওয়া এই মুহূর্তে কঠিন। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ায় নিভৃতবাস নিয়ে সতর্কতা এখন তুঙ্গে। সিরাজ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট দলে রয়েছে। ১৭ ডিসেম্বর অ্যাডিলেডে দিনরাতের টেস্ট দিয়ে যে সিরিজ শুরু হওয়ার কথা।
সিরাজের ক্রিকেট জীবনে বিরাট অবদান রয়েছে তাঁর বাবার। অটোচালক হিসেবে রোজগার করা সামান্য অর্থ দিয়েই মহম্মদ ঘউস ছেলের ক্রিকেট স্বপ্নে কখনও কোনও খামতি হতে দেননি। তাঁর প্রয়াণ সিরাজের জন্য বিরাট শূন্যতা তৈরি করবে বলেই আত্মীয়-বন্ধুরা বলছেন। আইপিএলে সিরাজের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর টুইট করে সমবেদনা জািনয়েছে। আরসিবি লিখেছে, ‘‘এই কঠিন সময়ে আমরা সবাই তোমার সঙ্গে আছি। শক্তি থাকো।’’
এ দিকে, প্যাট কামিন্স জানিয়ে দিলেন, বিরাটকে শান্ত রেখে দ্রুত তাঁর উইকেট তুলে নিতে পারলেই অস্ট্রেলিয়ার জেতা রাস্তা সহজ হয়ে উঠবে। আইপিএল শেষে আবু ধাবি থেকে ফিরে আপাতত সিডনিতে নিভৃতবাসে রয়েছেন কামিন্সরা। যদিও প্রত্যেক দিন দু’ঘণ্টা করে অনুশীলনের সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি, আইপিএল তাঁকে খেলার মধ্যে থাকতে সাহায্য করেছে। শুক্রবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমকে কামিন্স বলেছেন, “প্রত্যেক দলেই এক-দু’জন থাকে, যাদের উইকেট ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা দলের অধিনায়ক। যেমন ইংল্যান্ডের জো রুট, নিউজ়িল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন ও ভারতের ক্ষেত্রে বিরাট কোহালি। এদের উইকেট দ্রুত তুলে নিতে পারলেই চাপে পড়ে যাবে ওদের দল।” যোগ করেন, ‘‘আমরাও যদি বিরাটকে শান্ত রাখতে পারি এবং দ্রুত ওকে ফিরিয়ে দিতে পারি, তা হলে জেতার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যাবে। আশা করি, বিরাটকে শান্ত রাখতে পারব আমরা।” শেষ দু’বারের অস্ট্রেলিয়া সফরে বিরাটের ভক্তও বেড়েছে। এমনকি ডেভিড ওয়ার্নারের কন্যা ইন্ডি রে (চার বছর বয়স) বিরাট-ভক্ত। ওয়ার্নারের স্ত্রী ক্যান্ডিস এক অস্ট্রেলীয় রেডিয়ো চ্যানেলকে বলেছেন, ‘‘মেয়েদের সঙ্গে বাড়ির উঠোনে মাঝেমধ্যে ক্রিকেট খেলি। বড় মেয়ে আইভি কখনও ওর বাবাকে নকল করে, কখনও ফিঞ্চকে। মেজ মেয়ে ইন্ডি কিন্তু ব্যাট করার সময়ই বলে দেয়, ও বিরাট কোহালি।”
ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজে যদি ক্রিকেটারদের পরিবারকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়, তা হলে বিরাট-দর্শনও হয়ে যাবে ওয়ার্নার কন্যার। কিন্তু বর্তমানে জৈব সুরক্ষা বলয়ের এতটাই কড়াকড়ি যে, বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না। গত চার মাস ধরে যেমন জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যেই রয়েছেন কামিন্সরা। এ ভাবে ক্রিকেট জীবন চালিয়ে যাওয়া কতটা কঠিন? কামিন্সের উত্তর, ‘‘শেষ চার মাস ধরে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে অনেকটাই মানিয়ে নিয়েছি। তবে একটা ব্যাপার। ওয়ান ডে সিরিজ শুরু হওয়ার আগের রাতে আমাদের নিভৃতবাস পর্ব শেষ হচ্ছে। তাই পুরো দল একজোট হওয়ার প্রথম সুযোগ পাবে
একেবারে পরের দিন ম্যাচে।”