—ফাইল চিত্র।
লকডাউনে ভাল-মন্দ দুই প্রভাবই পড়ছে ক্রিকেটারদের উপরে। সে রকই মনে করছেন মহম্মদ শামি। বৃহস্পতিবার সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে ভারতীয় পেস তারকা বলেছেন, ‘‘লকডাউনকে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। কঠিন সূচির পরে ক্লান্তি কাটিয়ে ওঠার আদর্শ সময় পাওয়া গিয়েছে। ফিটনেস ও শক্তি বাড়ানোর সময়ও পাচ্ছি প্রচুর।’’ যোগ করেন, ‘‘অন্য দিকে, একজন পেসারের ছন্দ নষ্ট হওয়ার প্রবল সম্ভাবনাও রয়েছে। নেটে ফেরার পরেই আসল পার্থক্য বোঝা যাবে।’’
৪৯ টেস্টে ১৮০ উইকেট নেওয়া শামি তাই নিজের ছন্দ ফেরাতে মরিয়া। নিজের বাড়ির বাইশ গজে ভাইয়ের সঙ্গে চলছে নেট প্র্যাক্টিস। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় দলের শিবির শুরু হলে আমার অসুবিধা হবে না। এখন থেকেই জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। শরীরে কোনও জড়তাও আর অনুভব করছি না।’’ তবে যোগ করতে ভুলছেন না, ‘‘ছন্দে ফিরে আসার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতেই হবে। এক বার ছন্দ পেলে আত্মবিশ্বাসও ফিরবে একশো শতাংশ।’’
বর্তমান ক্রিকেটবিশ্বে শামির মতো রিভার্স সুইং হয়তো আর কারও হাতে নেই। কিন্তু বল রিভার্স করানোর সব চেয়ে জরুরি উপকরণ যে থুতু এবং লালা। করোনার প্রকোপে সে সবের ব্যবহার এখন নিষিদ্ধ। ঘাম দিয়ে কাজ চালাতে হবে। তিনি কি পুরনো অভ্যেস ত্যাগ করতে পেরেছেন? শামির জবাব, ‘‘অনুশীলনের মধ্যে নিজেকে সব সময় সচেতন রাখি। নিজেকে বলি, যাই হোক, থুতু ব্যবহার করা যাবে না। তবুও কয়েক বার ভুল হচ্ছেই। এত দিনের অভ্যেস হঠাৎ করে ত্যাগ করা খুবই কঠিন।’’
পুরনো বল দিয়ে নেটে বল করছেন? থুতু ব্যবহার না করলে কি আগের মতো রিভার্স সুইং পাচ্ছেন? শামি বলছেন, ‘‘অনেকেই এই প্রশ্ন করছে। কিন্তু একটা কথা বলি, ম্যাচে যে পুরনো বল ব্যবহার করি, তার সঙ্গে অনুশীলনের পুরনো বলে অনেক তফাত। অনুশীলনের প্রত্যেক বলই বাক্সে থাকে। যতই পুরনো হোক, কিছুটা হলেও আর্দ্রতা শুষে নেয়। ম্যাচে কিন্তু একটি বলের উপরে সারাক্ষণ পালিশ করা হচ্ছে। খেলা চলাকালীন পুরনো হচ্ছে বল।’’
শামি যদিও ঠিক করেছেন, তিনি পরীক্ষা করবেন পুরনো বল রিভার্স সুইং করছে কি না। বলে দিচ্ছেন, ‘‘এক দিন নতুন বল দিয়ে নেট শুরু করব। টানা দুই থেকে তিন ঘণ্টা বল করে যাব। থুতু ব্যবহার করব না। তার পরে পরীক্ষা করব রিভার্স সুইং করছে কি না।’’ এত দিনের বিশ্রামের পরে শারীরিক সক্ষমতার দিকটা কী ভাবে মাপা হবে? ভারতীয় পেসারের উত্তর, ‘‘কর্মক্ষমতা সম্পর্কে ক্রিকেটারদের সব সময় সচেতন করা হচ্ছে। তবে এত দিনের বিশ্রামের পরে আশা করি, পরিশ্রম করার ক্ষমতা নিয়ে কেউ আর ভাবছে না। সবাই মুখিয়ে আছে
মাঠে ফেরার অপেক্ষায়।’’
ব্যক্তিগত জীবনে বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী শামি। অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে। এমনকি আত্মহত্যা করার কথাও মাথায় আসে বলে জানিয়েছেন সম্প্রতি। এখন অবশ্য দার্শনিকের ভঙ্গিতে বলছেন, ‘‘এমন কোনও সমস্যা যা তুমি নিজে মেটাতে পারছ না, তা নিয়ে আলোচনা না করাই ভাল। কোনও না কোনও উপায় ঠিক বেরিয়ে আসবে।’’