রায়ে ব্রাত্য বিধায়ক, সাংসদেরাও

ক্রিকেট প্রশাসনে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের প্রবেশাধিকার কি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল? বোর্ড মামলার রায় বিশ্লেষণের পর ওয়াকিবহাল মহলের ইঙ্গিত সে রকমই। রায়ে বলা হয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রী, সরকারি কর্মচারী, এমনকি দেশের রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিরাও ক্রিকেট প্রশাসনে থাকতে পারবেন না। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৬
Share:

ক্রিকেট প্রশাসনে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের প্রবেশাধিকার কি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল? বোর্ড মামলার রায় বিশ্লেষণের পর ওয়াকিবহাল মহলের ইঙ্গিত সে রকমই। রায়ে বলা হয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রী, সরকারি কর্মচারী, এমনকি দেশের রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিরাও ক্রিকেট প্রশাসনে থাকতে পারবেন না।

Advertisement

এ ছাড়াও ছ’বছর পদে থাকার পরে তিন বছরের ‘কুলিং অফ’, মোট ন’বছরের মেয়াদ, সত্তরোর্ধদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, এ সব নিয়ম শুধু শীর্ষ পদে নয়, অন্যান্য কমিটির সদস্যদের ক্ষেত্রেও যে প্রযোজ্য, সে বিধানও দেওয়া হয়েছে এই রায়ে। যা অরাজনৈতিক ক্রিকেট প্রশাসকদেরও ধাক্কা দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

রায়ের ৩২ নম্বর পাতার শেষে বলা হয়েছে, ‘‘মন্ত্রী অথবা সরকারি চাকুরে বা জন দফতর বা ‘পাবলিক অফিস’-এর প্রধানরা বোর্ড বা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার শীর্ষ পদে, গভর্নিং কাউন্সিলে বা কোনও কমিটিতে থাকার যোগ্য নন।’’ রায়ের এই অংশের ব্যাখ্যায় আইনি মহল বলছে, রাজনৈতিক নেতাদের হয়তো ক্রিকেট প্রশাসনে কোনও ভূমিকায় আর দেখা যাবে না।

Advertisement

ভারতীয় ক্রিকেটে রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি নতুন নয়। মাধবরাও সিন্ধিয়া, শরদ পওয়ার, অরুণ জেটলিরা দেশের ক্রিকেট রাজনীতিতে উজ্জ্বল ছিলেন। এমনকি নরেন্দ্র মোদী, লালু প্রসাদ যাদব, ফারুখ আবদুল্লাহরাও তাঁদের নিজ রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থায় শীর্ষ পদে ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশে নির্বাসিত হওয়ার আগে বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরও ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

বর্তমানে রাজীব শুক্ল, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মারা রয়েছেন ক্রিকেট প্রশাসনে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বহু ক্রিকেট কর্তা রাজনৈতিক প্রশাসনে সরাসরি যুক্ত। বাংলায় শাসক দলের সাংসদ সুব্রত বক্সী ও রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা সিএবি-র সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট রায়ে এঁদের হয়তো আর ক্রিকেট সংস্থায় দেখা যাবে না। যদিও শেষোক্ত রাজনৈতিক শ্রেণির (জন দফতর বা ‘পাবলিক অফিস’-এর প্রধান) সঠিক সংজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তবে ভারতীয় ক্রিকেট রাজনীতির সঙ্গে ওয়াকিবহাল এক আইনজীবী বলছেন, ‘‘পি ভি নরসিংহ রাও মামলায় ১৯৯৬ সালে সাংবিধানিক বেঞ্চ নিশ্চিত করে দেয়, সাংসদ, বিধায়ক ও জনসাধারণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সবাই পাবলিক অফিস হোল্ডার বা জন দফতরের প্রধান। বোর্ড মামলার রায়ে সেই শ্রেণিরই উল্লেখ করা হয়েছে।’’

রায়ের আরও একাধিক বিষয়ের সঙ্গে এই অংশেরও স্পষ্ট আইনি ব্যাখ্যা চাওয়ার পক্ষে অনেকে। তবে সেই ব্যাখ্যা যদি এ রকমই হয়, তা হলে দেশের ক্রিকেট প্রশাসন হয়তো রাজনীতিবিদহীন হতে চলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement