বিপন্ন: অবশেষে পুলিশি হাজত থেকে ছাড়া পেয়ে প্লাতিনি। এএফপি
দীর্ঘ জেরার পরে ছাড়া পেলেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার মিশেল প্লাতিনি। বিপুল অর্থের বিনিময়ে ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব কাতারকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত চলছে ফ্রান্সে। যেখানে নাম জড়িয়েছে প্লাতিনির। মঙ্গলবার প্যারিসে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তিন বারের ব্যালন ডি’ওর জয়ী ফুটবলারের আইনজীবী অবশ্য দাবি করেন, এটা গ্রেফতার নয়। জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য যাচাই করার জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু প্লাতিনি স্বয়ং জানিয়েছেন যে, তাঁকে গ্রেফতারই করা হয়েছিল। এবং সেটা তাঁর কাছে চূড়ান্ত অপমানের এবং একই সঙ্গে বেদনার।
প্লাতিনি অতীতে দাবি করেছিলেন, কাতারকে অনৈতিক ভাবে বিশ্বকাপের দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকলেও তা তাঁর অজ্ঞাতসারে হয়েছে। বুধবার পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়ার খবর জানিয়ে প্লাতিনির আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলকে অভিযুক্ত করা হয়নি আর জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা হচ্ছে।
প্লাতিনির বয়স এখন ৬৩। প্যারিসের পশ্চিম শহরতলি নঁতের পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসার সময় কিংবদন্তি ফুটবলারকে রীতিমতো বিধ্বস্ত দেখিয়েছে। বাড়ি ফেরার গাড়িতে ওঠার আগে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলে যান, ‘‘পুরো ব্যাপারটা মিটতে বহুক্ষণ লেগেছে। আসলে ওদের এত প্রশ্ন ছিল যে, সময় লাগারই কথা। আমাকে ইউরো ২০১৬, রাশিয়া এবং কাতার বিশ্বকাপ আর ফিফা নিয়ে নানা প্রশ্ন করা হয়।’’
কাতারকে বিশ্বকাপ দেওয়ার পক্ষে যে বাইশ জন ভোট দিয়েছিলেন প্লাতিনিও তাদের একজন। প্লাতিনি-সহ এই বাইশ জনের ১৬ জনই এই মুহূর্তে বিশ্বকাপ পাইয়ে দেওয়া সংক্রান্ত দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় নির্বাসিত অথবা অভিযুক্ত। তবে কেউই এখনও দোষী সাব্যস্ত হননি। প্রাক্তন উয়েফা প্রেসিডেন্ট প্লাতিনির মতোই তদন্ত চলছে প্রাক্তন ফিফা প্রেসিডেন্ট শেপ ব্লাটারের বিরুদ্ধেও। দু’জনই এই মুহূর্তে নির্বাসনে রয়েছেন।
ফরাসি অর্থ দফতরের ভূমিকায় প্লাতিনি মারাত্মক হতাশ। টানা বহু ঘণ্টা জেরার পরে বেরিয়ে এসে বলেছেন যে তিনি ভেবেছিলেন সাক্ষী হিসাবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবার ডাকা হতে পারে। যেমন হয়েছিল ঠিক দেড় বছর আগে। কিন্তু গ্রেফতারের ঘটনা তাঁর কাছে অপ্রত্যাশিত। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় মানসিক ভাবে বড় আঘাত পেয়েছি। কারণ এটা আমার ভাবনার বাইরে ছিল। তা ছাড়া ওদের সাহায্য করার জন্য এতদিনে আমি সব কিছু করেছি। তবে ওদের (ফরাসি পুলিশ) উপর রাগ পুষে রাখতে চাই না। ওরা ওদের কাজ করেছে। কী আর করা যাবে। আমিও চেষ্টা করেছি ওদের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।’’