তোপ: বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে হোল্ডিংয়ের নিশানায় বোর্ডরা। ফাইল চিত্র
ক্রিকেট মাঠে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ মাইকেল হোল্ডিং। ক্যারিবিয়ান পেস কিংবদন্তি বর্ণবৈষম্য নিয়ে সব চেয়ে সরব হয়েছিলেন। এখন নতুন করে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক সিরিজে হাঁটু মুড়ে বসে দু’দলের খেলোয়াড়েরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড সিরিজে তা করতে দেখা যাচ্ছে না ক্রিকেটারদের। জার্সিতে লেখা সেই ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ স্লোগানও আর নেই।
স্কাই স্পোর্টসে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় হোল্ডিং বলেছেন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল চলে গিয়েছে মানে এই নয় যে, স্লোগানটা ভুলে যেতে হবে। বা বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে চুপ করে যেতে হবে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের প্রভাব অনেক বেশি প্রকট। কিন্তু সারা বিশ্বের মানুষ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। পৃথিবীর সর্বত্র সাম্য প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে।’’ হোল্ডিং আরও বড় প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এটা আর সাদা বনাম কালোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ইংল্যান্ড যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলল, কেউ হাঁটু মুড়ে বসল না। এই সিরিজেও কেউ তা করছে না। আর তা না করার পিছনে খুব অসাড় যুক্তিও দেওয়া হচ্ছে।’’ ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবাদেই তারা বিশ্বাসী। চলতি অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ান ডে অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ জানিয়েছিলেন, তাঁদের দল হাঁটু মুড়ে বসবে না। ফিঞ্চের যুক্তি ছিল, ‘‘প্রতিবাদের চেয়েও জরুরি হচ্ছে সঠিক শিক্ষাটা দেওয়া।’’ হোল্ডিংয়ের জবাব, ‘‘ও বলতে চাইছে, ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেখানে বর্ণের জন্য কাউকে আটকানো হয় না। কোনও খেলাতেই তো সেটা হয় না। আমার বক্তব্য খুব পরিষ্কার। কাউকে জোর করে এই অভিযানে যুক্ত করা যাবে না। যদি তুমি ভিতর থেকে এর প্রয়োজন অনুভব করো, তবেই প্রতিবাদ করো। না হলে, অসাড় যুক্তি অন্তত দিও না। অজুহাত দিও না’’
ফিঞ্চের পাল্টা বক্তব্য হিসেবে তিনি বলছেন, ‘‘এ ব্যাপারে অবশ্যই মানুষকে শিক্ষিত করার প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রতিবাদ এগিয়ে নিয়ে যেতে হত। ইংল্যান্ড ফুটবল দল, গোটা বিশ্ব, তা করে চলেছে। তা হলে ক্রিকেট দল এটা বন্ধ করল কেন?’’ যোগ করছেন, ‘‘একটা প্রতিবাদ দু’-তিন সপ্তাহ চালিয়ে বলে দেওয়া যায় না, আমার কাজ শেষ। যদি এটাই মনোভাব হয়, তা হলে এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই।’’
হোল্ডিং আরও বলছেন, ‘‘বিশ্ব থেকে বর্ণবিদ্বেষের শিকড় উপরে ফেলার যে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে, তা থামা উচিত নয়। কিন্তু দেখেশুনে মনে হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো তা ভুলে গিয়েছে ক্রিকেট।’’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পুরো সিরিজেই ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল এই প্রতিবাদে অংশ নিলেও এখন তা বন্ধ করে দিয়েছে।