বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রবল অসন্তোষ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যেই। ২৪ ডিসেম্বর বিসিসিআই-এর বার্ষিক সাধারণ সভায় একাধিক সদস্য একের পর এক পণ্যের বিজ্ঞাপনে সৌরভের সই করা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই ব্যাপারে সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
বোর্ডের সদস্যদের মূল প্রশ্ন, বিসিসিআই সভাপতির সাম্মানিক পদে থেকে সৌরভ কী করে সেইসব পণ্যের বিজ্ঞাপন করেন, যেগুলি সরাসরি বোর্ডের স্পনসরদের স্বার্থবিরোধী। সৌরভের এই ভূমিকা নিয়ে বোর্ডের একাংশ অত্যন্ত অখুশি।
সৌরভের ক্ষেত্রে একাধিক স্বার্থের সংঘাতের বিষয় বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবেন বোর্ড সদস্যরা। সৌরভকে নিয়ে যে প্রশ্নগুলি উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেগুলি হল, বোর্ড সভাপতি হওয়ার পর তিনি কতগুলি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করেছেন? এগুলির মধ্যে কতগুলি সরাসরি বোর্ডের স্পনসরদের স্বার্থবিরোধী? যখন বিজ্ঞাপনে খোদ বোর্ড সভাপতি একটি ফ্যান্টাসি লিগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন, তখন বোর্ডের ভাবমূর্তির পক্ষে সেটা কি খুব ভাল? বোর্ডের সাম্মানিক পদে থেকে কেউ বিসিসিআই-এর নিজের স্পনসর বা বিরোধী স্পনসরদের বিজ্ঞাপন করবেন, বিসিসিআই-এর সংবিধান কি এর অনুমতি দিচ্ছে? ২৪ ডিসেম্বর আমদাবাদে বার্ষিক সাধারণ সভায় অন্তত ১২ জন বোর্ডসদস্য এই প্রশ্নগুলি তুলতে পারেন। এই নিয়েই তোলপাড় হতে পারে সভা।
বিভিন্ন দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হবে ওই সভায়। যেমন, আইপিএলের টাইটেল স্পনসর হয়েছে ‘ড্রিম ইলেভেন’। তারপরেই সৌরভ সম্পূর্ণ বিরোধী ব্র্যান্ড ‘মাই সার্কল ১১’-এর সঙ্গে চুক্তি করেছেন। যদিও ড্রিম ইলেভেন সরকারীভাবে কোনও প্রতিবাদ জানায়নি, কিন্তু বোর্ডের অনেকেই মনে করছেন, তাদের কোনও স্পনসরই এটা ভালভাবে নেবে না। সদস্যদের প্রশ্ন, খোদ বোর্ড সভাপতি বিরোধী ব্র্যান্ডের প্রচার করছেন, এটা কি ভাল দেখায়?
একই কথা খাটে ভারতীয় দলের জার্সি স্পনসর ‘বাইজুস’-র ক্ষেত্রেও। বাইজুস একটি শিক্ষামূলক অ্যাপ। কিন্তু সৌরভ অন্য একটি শিক্ষামূলক অ্যাপের বিজ্ঞাপন করেন। কর্তাদের বক্তব্য, বাইজুসও যেকোনও সময়ে প্রতিবাদ করতেই পারে।
আরও খবর: কোহালি দেশে ফেরার আগে কথা বলবেন পৃথ্বী-রাহানেদের সঙ্গে
প্রশ্ন আইপিএলের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েও। আদানি গ্রুপ যেখানে আইপিএলের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি হতে চায়, সেখানে সৌরভ এই সংস্থার একটি ভোজ্য তেলের বিজ্ঞাপন করেন। জেএসডব্লিউ সিমেন্টের সঙ্গে সৌরভ এই বছরের জুনে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই সংস্থাই দিল্লি ক্যাপিটালসের ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। শুধু এটাই নয়, বোর্ডের অ্যাপেক্স কাউন্সিলের সদস্য হয়েও সৌরভ নাকি আইপিএলের প্রায় সব গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে হাজির থেকেছেন। সদস্যদের প্রশ্ন, এটা কি স্বার্থের সংঘাত নয়? এরকম অজস্র প্রশ্ন এবং উদাহরণ নিয়ে বোর্ড সদস্যরা হাজির হবেন ২৪ তরিখের সভায়।