লক্ষ্য: বুধবার রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপে মেহুলি ঘোষ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
এশিয়ান গেমসে সুযোগ না পাওয়ার যন্ত্রণা ভুলতে অগস্ট-সেপ্টেম্বরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুটিংকে বেছে নিচ্ছেন মেহুলি ঘোষ। কমনওয়েলথ গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রুপোজয়ী বাঙালি শুটারের লক্ষ্য, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকেই টোকিয়ো অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করা।
এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলে সুযোগ না পেলেও অন্য একটি সুযোগ কিন্তু এসেছে মেহুলির সামনে। সেটি হল, জার্মানির শুটিং লিগ— বুন্দেশলিগায় অংশ নেওয়ার সুযোগ। জার্মান শুটিং ফেডারেশনের পরিচালনায় এই লিগ শুরু হয় ১৯৯৭ সাল থেকে। যেখানে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল এবং ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে পুরুষ এবং মহিলাদের প্রতিযোগিতা হয়। সেই বুন্দেশলিগার ক্লাব ব্রাওনশোয়েইগ যোগাযোগ করে মেহুলির সঙ্গে। কয়েক মাস আগে জার্মানিতে বিশ্বকাপ শুটিংয়ের সময় কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়। অতীতে অভিনব বিন্দ্রার মতো শুটার এই লিগে অংশ নিয়েছেন।
মেহুলির প্রশিক্ষক জয়দীপ কর্মকার বুধবার বলছিলেন, ‘‘অক্টোবরের শুরু থেকে লিগ হবে। প্রথম দিকে হয়তো মেহুলি নামতে পারবে না যুব অলিম্পিক্স থাকায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ও যোগ দেবে।’’ মেহুলি এবং জয়দীপ দু’জনেই মনে করেন, জার্মান লিগে নামলে যে কোনও শুটারের মানসিকতা আরও কঠিন হবে।
দিন দু’য়েক আগে কলকাতায় ফেরা মেহুলি বুধবার রাজ্য শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। দিন কয়েকের মধ্যে তিনি উড়ে যাবেন মুম্বই। তার পরে আবার যোগ দেবেন জাতীয় শিবিরে। এশিয়ান গেমসের দলে মেহুলিও থাকবেন, এই আশা অনেকেরই ছিল। কিন্তু জানা যাচ্ছে শেষ মুহূর্তে নিয়ম বদলের ফলে মেহুলির যাওয়া আটকে যায়। কী সেই বদল? আগে ঠিক ছিল, এশিয়ান গেমসের দল বাছার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথ গেমসের স্কোর ধরা হবে না। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বদলে যায়। জয়দীপ বলছিলেন, ‘‘কমনওয়েলথ গেমসের স্কোর যদি ধরা না হত, তা হলে মেহুলি ভারতীয়দের মধ্যে এক নম্বরে থাকত। কিন্তু একেবারে শেষ সময় নিয়মটা বদলে যায়।’’ কিন্তু কমনওয়েলথ গেমসে তো মেহুলি রুপো জিতেছেন। তা হলে সেই স্কোর ধরায় সমস্যা কেন? জয়দীপের ব্যাখ্যা, ‘‘কমনওয়েলথ গেমসে রুপো পেলেও মেহুলির স্কোর কম ছিল। পরের প্রতিযোগিতাগুলোয় পদক না পেলেও স্কোর ভাল হয়েছিল। তাই কমনওয়েলথ গেমসের পয়েন্ট ধরায় ওর মোট স্কোর কমে যায়।’’
এশিয়ান গেমসে সুযোগ না পাওয়াটা প্রথম দিকে যন্ত্রণা দিয়েছে। কিন্তু সেই যন্ত্রণা মুছে নতুন লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছেন মেহুলি। মেহুলি বলেছেন, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম চার জনের মধ্যে থাকতে হবে। তা হলেই অলিম্পিক্সে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাব।’’ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে না পারলেও পরের দিকে আরও সুযোগ পাওয়া যাবে ২০২০ অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র পাওয়ার। মেহুলি সেটা জানেন। তাও বলছেন, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেই অলিম্পিক্স ছাড়পত্র পেয়ে গেলে সব চেয়ে ভাল হয়। তা হলে পরের প্রতিযোগিতাগুলোয় চাপমুক্ত মনে খেলতে পারব।’’