গ্রিক পুরাণ, চৈনিক পুরাণ অথবা মিশরীয় পুরাণে আগুনপাখি ‘ফিনিক্স’-এর কথা তো আমাদের অনেকেরই জানা। অবিনশ্বর, অমরত্বের প্রতীক এই পাখিটিকে দমাতে পারেনি তীব্র আগুনও। পুড়ে গিয়েও ছাই থেকে পুনর্জন্ম হয়েছিল যার। মালয়েশিয়ার বছর উনিশের মেয়ে নর ডায়ানা-র জীবনকাহিনীও অনেকটা এই ‘আগুনপাখি’-র মতোই।
নর ‘ফিনিক্স’ ডায়ানা। কিছুদিন ধরেই যে আলোচনার কেন্দ্রে। তার কারণ, ডায়ানাই পৃথিবীর সর্বপ্রথম হিজাব পরিহিত কুস্তিগীর।
শুধু কি তাই! চলতি বছরের জুলাইয়ের ৬ তারিখে অনুষ্ঠিত ‘মালয়েশিয়া প্রো রেসলিং’ প্রতিযোগিতায় তিনিই প্রথম মহিলা ‘রেসেলকন চ্যাম্পিয়ন’।
‘রেসেলকন চ্যাম্পিয়ন’ খেতাবটি এতদিন শুধুমাত্র পুরুষ কুস্তিগীরদের ভাগ্যেই জুটত। কিন্তু ডায়ানা যে ফিনিক্স। কোনও বিপদই টলাতে পারেনি তাঁকে। সিদ্ধান্তে অবিচল, লড়াকু মেয়েটি স্রোতের বিপরীতে হেঁটে ছিনিয়ে নিয়েছেন মহিলাদের ব্রাত্য এই খেতাব।
মালয়েশিয়ার এক মুসলমান পরিবারে জন্ম হয় ডায়ানার।
ছোটবেলা থেকেই ভিডিও গেমের দারুণ ভক্ত ছিলেন ডায়ানা। আর এই ভিডিও গেম প্রীতিই তাঁকে কুস্তির দুনিয়ায় পা রাখতে উদ্বুদ্ধ করে।
মাত্র তিন বছর হয়েছে কুস্তির জগতে পা রেখেছেন তিনি। বয়সটাও বেশ কম। তবুও এই বয়সেই ডায়ানার সাড়া জাগানো পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে অনেকেরই।
কেরিয়ারের প্রথম দিকে মুখে ‘মাস্ক’ বা মুখোশ পরে ‘রেসলিং ম্যাট’ এ ঢুকতেন তিনি।
কিন্তু ২০১৮ থেকেই মাথায় হিজাব পরে ‘রিং’-এ প্রবেশ করতে শুরু করেন ডায়ানা।
কতটা কঠিন ছিল এই জার্নি? ডায়ানার কথায়, মাথায় হিজাব পরে রিং-এ নামা নিয়ে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। তবে খেতাব জেতার পর সেই মানুষগুলোর থেকেই পেয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা।
ডায়ানার ‘রিং নাম’ ফিনিক্স। বিশ্বের দরবারেও তিনি এই নামেই বেশি পরিচিত।
শত সমালোচনা সত্ত্বেও হার মানেননি বিশ্বের প্রথম হিজাবি কুস্তিগীর। কারণ তিনি যে প্রকৃত অর্থেই ‘ফিনিক্স’। আগুনে পুড়ে গেলেও ছাই থেকে উঠে এসে নতুন ভাবে বাঁচতে শেখানোই যে তাঁর কাজ।