ডিন ডুপ্লেসি। ছবি বিবিসি
অনায়াসে ক্রিকেটের ধারাভাষ্য দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি দৃষ্টিহীন! এটাও কি সম্ভব? হ্যাঁ, এই কাজই করে দেখাচ্ছেন জিম্বাবোয়ের ডিন ডুপ্লেসি। দেখতে না পেলেও নিজের পছন্দের জিনিসে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বিশ্বের প্রথম দৃষ্টিহীন ধারাভাষ্যকার তিনি।
৪৪ বছরের ডুপ্লেসির জন্মের পরেই রেটিনার পিছনে টিউমার ধরা পড়ে। ফলে জন্ম থেকেই তিনি দৃষ্টিহীন। ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগ অবশ্য ছোটবেলায় আসেনি। এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমার ভাই গ্যারি খুব ভাল ক্রিকেট খেলত। কিন্তু কেউ কোনওদিন আমাকে ক্রিকেট বোঝাতে আসেনি।”
ডিনের ক্রিকেটপ্রেমের পিছনে জড়িয়ে রয়েছে ভারতের নামও। ১৯৯১-এ দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐতিহাসিক সফরে গিয়েছিল ভারত। সেখানকারই এক বোর্ডিং স্কুলে পড়তেন ডিন। রেডিয়োতে ক্রিকেট শোনার পর ভালবাসা জন্মে যায়। ডিন বলেছেন, “৬০-৭০ হাজার ভারতীয় দর্শক চিৎকার করছিল। আতসবাজি পুড়ছিল। ধারাভাষ্যকার কী বলছিল শুনতেই পাচ্ছিলাম না প্রথমে। কিন্তু অদ্ভুত একটি অনুভূতি তৈরি হয়। তারপর থেকে নিয়মিত ক্রিকেট শোনা শুরু করি।”
কিন্তু দৃষ্টিহীন হয়েও কী করে ধারাভাষ্য দেন? ডিন জানালেন, এর পিছনে কৃতিত্ব স্টাম্প মাইকের। খুঁটিয়ে আওয়াজ শুনেই ধারাভাষ্য দেন তিনি। বলেছেন, “আমার জন্য কোনও অতিরিক্ত স্টাম্প মাইক থাকে না বা কেউ এসে বলেও দেয় না মাঠে কী হচ্ছে। পুরোটাই করি নিখুঁতভাবে শব্দ শুনে। যে ভাবে অন্য ধারাভাষ্যকার মাঠের ঘটনাক্রম দেখতে পায়, তেমনই আমি সেটা শুনতে পাই।”
এ ভাবেই বিভিন্ন বোলার বা ব্যাটসম্যানের আওয়াজও তিনি চিনে নিয়েছেন। ডিন বলেছেন, “স্টুয়ার্ট ব্রড একটু ঘষটে এসে বল করে। উইকেট পেলে জোরে চিৎকার করে। ফ্রেডি ফ্লিনটফের মতো কোনও কোনও ক্রিকেটার আবার আওয়াজই করে না। শেন ওয়ার্ন প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে।”
শান্ত স্বভাবের ডিনকে পছন্দ করেন জিম্বাবোয়ের ক্রিকেটাররাও। মাঝেমাঝেই বিভিন্ন ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলাধুলো নিয়ে কথা হয় ডিনের। আলাদা করে অ্যান্ডি এবং গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার, অ্যালিস্টেয়ার ক্যাম্পবেলের নাম করেছেন তিনি।