মনে পরে সেঞ্চুরি করার পরেও মনোজ তিওয়ারির ভারতীয় দলে জায়গা না পাওয়া? কিংবা দিনের পর দিন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রান পাওয়া বদ্রিনাথের ভারতীয় দলের হয়ে মাত্র দু’টি টেস্ট খেলা? এরকম অনেক ‘মনোজ’ বা ‘বদ্রিনাথ’কেই পাওয়া যায় ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে। সেই তালিকায় এক অন্যতম নাম অজয় শর্মা।
অজয় শর্মা দীর্ঘদিন ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছেন দাপিয়ে। দিল্লির এই ডানহাতি ক্রিকেটার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে শুর করেন ১৯৮৪ সালে। ১৭ বছর ধরে খেলে ঘরোয়া ক্রিকেটে করেছেন ১০,১২০ রান, লিস্ট এ-তে ২৮১৪ রান।
ঘরোয়া ক্রিকেটের ইতিহাসে সারা বিশ্বে দশ হাজার পেরোনো রানের মালিকদের মধ্যে আজও তিনি গড়ের হিসেবে তৃতীয় (৬৭.৪৬)। সামনে শুধুই ডন ব্র্যাডম্যান (৯৫.১৪) ও বিজয় মার্চেন্ট (৭১.২২)। করেছেন ৩৮টি সেঞ্চুরি। ২০০১ সালে শেষ বারের জন্য তাঁকে ব্যাট হাতে দেখা যায়। রঞ্জিতে খেলেছেন ১২৯টি ম্যাচ। লিস্ট এ-তে ১১৩টি।
বল হাতেও তিনি কম যেতেন না। বাঁহাতি স্পিনে প্রথম শ্রেণিতে নিয়েছেন ৮৭টি উইকেট এবং লিস্ট এ-তে ১০৮টি উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ইডেনে একদিনের ম্যাচে অভিষেক হয় তাঁর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁকে প্রথম বারের জন্য দেখা যায় ১৯৮৮ সালের ২ জানুয়ারি। যদিও সেই ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগই পাননি তিনি। দুই ওভার বল করলেও উইকেট পাননি। যদিও ভারত জেতে ৫৬ রানে।
অধিনায়ক রবি শাস্ত্রীর ভারতের হয়ে সেই সফরেই একমাত্র টেস্ট খেলার সুযোগ পান তিনি। প্রথম ইনিংসে ৩০ ও পরের ইনিংসে ২৩ রান করেন তিনি। বল হাতে উইকেট পাননি। তবে সেই প্রথম সুযোগই তাঁর শেষ সুযোগ হয়ে রয়ে যায়।
একদিনের ক্রিকেটে ৩১টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও টেস্ট ক্রিকেটে তিনি থেকে যান ব্রাত্য। একদিনের ক্রিকেটে করেন ৪২৪ রান, গড় ২০.১৯ এবং পান ১৫টি উইকেট।
একদিনের ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলেন ১৯৯৩ সালে। সে বারেও প্রতিপক্ষ সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজহারের ভারত সে বারের বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে হেরে যায় ৬৯ রানে। শেষ ম্যাচের স্মৃতি যদিও সুখের ছিল না অজয়ের। প্রথম বলেই আউট হয়ে যান তিনি। তারপর আর সুযোগ আসেনি।
তবে ক্রিকেট থেকে সরে যেতে হয় অন্য কারণে। ২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে নাম জড়ায় তাঁর। থেমে যায় তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার। সমস্ত ধরনের ক্রিকেট থেকে তাঁকে নির্বাসিত করে দেওয়া হয়।
যদিও ২০১৪ সালে তাঁকে সেই সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন তাঁর বয়স ৫০। তখন আর নিজের নয়, তিনি তাঁর ছেলে মনন শর্মার ক্রিকেট জীবন নিয়ে বেশি চিন্তিত। ২৮ বছরের মনন ভারতীয় দলে না খেললেও খেলেছেন দিল্লি, ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সে।