লিগের প্রথম ম্যাচ হেরে প্রশ্নের মুখে কিবু। ছবি: ফাইল চিত্র
পিয়ারলেস — ৩ মোহানবাগান—০
(ক্রোমা-২, লক্ষ্মীকান্ত)
‘মিনি ডার্বি’ জিতে মরসুমের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল মোহনবাগান। লিগের প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়ল কিবু ভিকুনার ক্লাব। ঘরের মাঠে তিন গোল হজম করতে হল গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
পুরনো ক্লাব মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করলেন আনসুমানা ক্রোমা, গোলের গন্ধ মাখা বল বাড়ালেন তিনি। স্কোরলাইনে ক্রোমার নামের পাশে লেখা দু’ গোল। অপর গোলটি করলেন লক্ষ্মীকান্ত মান্ডি।
পিয়ারলেস কোচ জহর দাস অভিজ্ঞ মানুষ। তিনি জানেন বড় দলের বিরুদ্ধে কিভাবে খেলতে হয়। অ্যান্টনি উলফ ও ক্রোমাকে ব্যবহার করে বার বার মোহনবাগান রক্ষণের ফাঁক কাজে লাগাচ্ছিলেন তিনি। গোল করার সুযোগ যে পায়নি মোহনবাগান, তা নয়। কিন্তু, সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি।
জহর জানতেন বাগানের স্ট্রাইকার চামারোকে আটকে দিলেই গঙ্গাপারের ক্লাবের আক্রমণ নির্বিষ হয়ে যাবে। সেই কাজটাই সারা ম্যাচ ধরে করে গেলেন রমনদীপরা। শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি পেলেও চামোরোর শট আটকে দেন পিয়ারলেস গোলকিপার জেমস।
ডুরান্ড কাপের ‘মিনি ডার্বি’তে সাদা-কালো শিবিরকে উড়িয়ে দিয়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছিল কিবুর দল। লিগের প্রথম ম্যাচেই হেরে কিন্তু প্রশ্নের মুখে কিবুর স্ট্র্যাটেজি। তাঁর রক্ষণ চূড়ান্ত ব্যর্থ। মাঝমাঠও ফুল ফোটাতে পারল না। ফরোয়ার্ডরা কামড় দিতে পারলেন না। ফলে যা হওয়ার তাই হল। কিবু হয়তো ছোট মাঠের অজুহাত দেবেন। সল্টেলেকে যেমন পাসের বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছিল সবুজ-মেরুন শিবির, এ দিন তা হারিয়ে গেল। স্পেনীয় ফুটবলারদের টেক্কা দিয়ে গেলেন বিশ্বকাপার উলফ, পাড়ায় পাড়ায় খেপ খেলা ক্রোমা। পুরনো ক্লাবকে দেখলেই বরাবরই একটু বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠেন লাইবেরিয়ান ফুটবলার। আজ, সোমবারও দেখা গেল তারই ঝলক। ২৩ মিনিটের মাথায় খেলার স্রোতের বিপরীতে গোল করে যান ক্রোমা।
শুরুতে সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের পায়েই ঘোরাফেরা করছিল বল। আগের দিনের মতো শুরুতেই গোল তুলে নিতে পারেননি তাঁরা। শুরুতে গোল পেয়ে গেলে যে কোনও দলই অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যায়। সেটাই এদিন হয়নি। ৭৭ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল সবুজ-মেরুন। সমতা ফেরানোর জন্য আক্রমণে উঠে আসেন বাগানের ফুটবলাররা। তারই সুযোগ নিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে মোহনবাগানের কফিনে পেরেক পুঁতে দেন ক্রোমা ও লক্ষ্মীকান্ত। গোলকিপার শিল্টন পাল গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে দলকে বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্লেতু, বুমেরাং হয়ে ফেরে। পিয়ারলেস দেখিয়ে দিল মোহনবাগান রক্ষণের দুর্বলতা। কিবুকে কিন্তু বসতে হবে তাঁর রক্ষণ নিয়ে।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলে স্পেনীয় স্ট্রাইকার! মায়োরকার এই ফুটবলারকে দেখা যেতে পারে লাল-হলুদ জার্সিতে
আগের ম্যাচে সেট পিস থেকে এসেছিল দু’টি গোল। কিন্তু, আজ সেই সেট পিস একবারও ঠিকঠাক হল না। মিস পাসও হচ্ছিল প্রচুর। তবে কৃতিত্ব দিতে হবে পিয়ারলেস ডিফেন্সকেও। চামোরোকে বোতলবন্দি করে রেখেছিল তাঁরা। বেইতাকেও ফ্যাকাসে দেখায়।
৫৩ মিনিটের মাথায় সুযোগ পেয়েছিলেন চামোরো। ধনচন্দ্রর ক্রস থেকে পাওয়া বলে চামোরো ছোবল মারলেও তা পোস্টে লেগে ফেরত আসে। সেই বল বাইরে মারেন স্পেনীয় স্ট্রাইকার। সুযোগ নষ্ট করলে কীভাবে আর ম্যাচ জেতা সম্ভব!