সুদীপের ব্যাটে বড় রানের আশায় বাংলা। —ফাইল চিত্র।
রাজকোটে রঞ্জি ট্রফি ফাইনালে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলা। সৌরাষ্ট্র প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৪২৫ রান। যা তাড়া করতে গিয়ে তৃতীয় দিনের শেষে তিন উইকেটে ১৩৪ রান তুলেছে বাংলা। অপরাজিত রয়েছেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (৪৭) ও ঋদ্ধিমান সাহা (৪)। এখনও ২৯১ রানে পিছিয়ে রয়েছে বাংলা।
ব্য়াট করতে নেমে লাঞ্চের ঠিক আগে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলা। ফিরে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরন (৯) ও সুদীপ ঘরামি (২৬)। ৩৫ রানে দুই উইকেট পড়ার পর দলকে টানছিলেন মনোজ তিওয়ারি ও সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। চায়ের বিরতির সময় দুই উইকেটে ৯৪ তুলেছিল বাংলা। বাংলার তৃতীয় উইকেট পড়ল ১২৪ রানে। মনোজ-সুদীপ যোগ করেছিলেন ৮৯ রান। যখন মনে হচ্ছিল এই জুটি বাংলাকে স্বস্তির অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে, তখনই চিরাগ জানির আচমকা নীচু হওয়া ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হলেন মনোজ (৩৫)। এর আগে একবার জীবন ফিরে পেয়েছিলেন তিনে। ব্যাটে লাগিয়ে বোল্ড হয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তা নো-বল হওয়ায়। কিন্তু সেই জীবনদানকে বড় ইনিংসে পরিণত করতে পারলেন না তিনি।
প্রথম উইকেটে মজবুত শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরন ও সুদীপ ঘরামি। অভিষেককারী সুদীপকে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল। কিন্তু বাঁ-হাতি স্পিনার ধর্মেন্দ্রসিংহ জাডেজার বলে তাঁর ক্যাচ জমা হয়েছিল ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে থাকা ফিল্ডারের হাতে। দলীয় ৩৫ রানে ফেরেন সুদীপ। পরের ওভারেই ফেরেন অধিনায়ক অভিমন্যুও। প্রেরক মানকড়ের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন তিনি। ডিআরএস নিয়েও লাভ হয়নি। কারণ, বল ট্র্যাকিং সিস্টেম নেই ডিআরএসে। ধারাভাষ্যকাররা যদিও বলেছিলেন যে, বল পায়ের উপরের দিকে লেগেছিল। তাই উচ্চতা একটা বড় প্রশ্ন। তা ছাড়া, বল যে ভাবে যাচ্ছিল লেগস্টাম্পে বল নাও লাগতে পারত।
এখনও প্রায় তিনশো রান দরকার বাংলার। কিন্তু, উইকেটে যে ভাবে বল পড়ে নীচু হচ্ছে, কিছু বল প্রায় গড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে সমস্যা বাড়ছে। সুদীপ ও ঋদ্ধিকে তাই বড় জুটি গড়তে হবে। কারণ, নতুন ব্যাটসম্য়ানের পক্ষে পিচের গতিপ্রকৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়।
৪২৫ রানে শেষ হয়েছিল সৌরাষ্ট্রের প্রথম ইনিংস। খেলার যা গতিপ্রকৃতি, তাতে সম্ভবত প্রথম ইনিংসের রানেই ফয়সালা হতে চলেছে। আর প্রথম ইনিংস লিডের জন্য অভিমন্যু ঈশ্বরনের দলের সামনে তাই শক্ত চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন: পিচ নিয়ে তোপ অরুণের, বিতর্ক আম্পায়ারিংয়েও
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে হয়তো নিজস্বী বন্ধ ডি’ককদের, সতর্ক ভারতও
এত রান তাড়া করা এই পিচে মোটেই সহজ নয়। পিচে পড়ে বল নীচু হচ্ছে আচমকা। কখনও কখনও বাউন্সও হচ্ছে। ফলে, ব্যাটসম্যানের কাজ ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় চারশোর বেশি রান তাড়া করতে হলে ধৈর্য দেখানোর পাশাপাশি স্কোরবোর্ড এগিয়েও নিয়ে যেতে হবে। কারণ, যখন-তখন একটা বল নীচু হয়ে উইকেটের সামনে পেয়ে যেতে পারে ব্যাটসম্যানের পা।
বুধবার আট উইকেটে ৩৮৪ নিয়ে শুরু করেছিল সৌরাষ্ট্র। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই চিরাগ জানিকে (১৪) বোল্ড করেন আকাশদীপ। মনে করা হয়েছিল, চারশোর কমেই বিপক্ষকে আটকে রাখতে পারবে বাংলা। কিন্তু, শেষ উইকেটে ৩৮ রান যোগ করেন ধর্মেন্দ্রসিংহ জাডেজা ও জয়দেব উনাদকাট। শেষ দুই উইকেটে যোগ হল ৬১ রান। যা বাংলার উপর চাপ বাড়াল। শেষ উইকেট নেন শাহবাজ আহমেদ। উনাদকাটকে বোল্ড করেন তিনি। তবে বাংলার সফলতম বোলার আকাশদীপ (৪-৯৮)।বাকি উইকেট ভাগ করে নিলেন শাহবাজ আমেদ (৩-১০৩), মুকেশ কুমার (২-১০৩), ঈশান পোড়েল (১-৫১)।