বাইশ গজের পর্যবেক্ষণে বিরাট কোহালি। গুয়াহাটিতে রবিবার। ছবি: এএফপি।
টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। কিন্তু বাদ সাধল প্রকৃতি। টস হওয়ার পর নামল বৃষ্টি। কভারের ফাঁক দিয়ে পিচে জল ঢুকে পরিস্থিতি আরও গুরুতর করে তুলল। ফলে, এক বলও হল না। রাত দশটার কিছুক্ষণ আগে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হল। যা, পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
রবিবার দুপুরেও বৃষ্টি হয়েছিল গুয়াহাটিতে। যদিও টস হওয়ার সময় বৃষ্টি কোনও সমস্যা তৈরি করবে বলে মনে হয়নি। তবে এর পরই আবহাওয়া পাল্টে গিয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টি হল। বৃষ্টি থামার পর সমস্যা হয়ে উঠল বাইশ গজের কিছু জায়গা। সেখানে কভারের ফাঁক দিয়ে জল ঢুকে গিয়েছে। নানা ভাবে তা শুকানোর চেষ্টা চলল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ক্রিকেটারদের চোট লাগতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই গেল। বছরের শুরুতে ভারতের প্রথম ম্যাচই তাই হল না।
বৃষ্টি থামার পর অনেক সময় পেয়েও পিচের কিছু জায়গা কোনও ভাবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পক্ষে উপযুক্ত করা গেল না। আর এ খানেই উঠছে প্রশ্ন। বাইশ গজ, বোলারের রান আপ তো ঢাকা দেওয়া ছিল। তবে কী করে তা ভিজে গেল? তবে কি কভারের কোথাও ছিদ্র ছিল? তবে কি কভার তোলার সময় অসাবধানতাবশত পিচে জল ঢুকে গিয়েছে? যাই হোক না কেন, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ভুল ক্ষমার অযোগ্য। কারণ, এক ঘন্টারও বেশি বৃষ্টি বন্ধ ছিল। আউটফিল্ড খটখটে শুকনো ছিল। তার পরও খেলা শুরু করা গেল না। কারণ, পিচের কিছু জায়গা কোনও ভাবেই খেলা শুরুর উপযুক্ত ছিল না। অথচ, পিচই প্রথমে ঢাকা দেওয়া হয়। বাইশ গজের নিরাপত্তাতেই থাকে অগ্রাধিকার। আর সেখানেই গলদ দেখা গেল। খেলা না হওয়া কার্যত অসম ক্রিকেট সংস্থার কর্মদক্ষতাকেই কাঠগড়ায় তুলল।
গুয়াহাটির দর্শকরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছিলেন রাত দশটা পর্যন্ত। গ্যালারিতে তাঁরা নাচ-গানে অফুরন্ত স্পিরিট দেখিয়েছিলেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়েই ফিরতে হল ক্রিকেটপ্রেমীদের। গুয়াহাটিতে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয় না। ফলে, অসম ক্রিকেট সংস্থার আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল।
অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। সেই দিকে তাকিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রবিবার গুয়াহাটিতে নামার কথা ছিল ভারতের। তিন ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজকে দেখা হচ্ছিল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে। কিন্তু এখন এই সিরিজ হয়ে উঠল দুই ম্যাচের।
১৮ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে টিম ইন্ডিয়া প্রায় ২০টি ম্যাচ পাচ্ছে। এই কয়েকটি ম্যাচের মধ্যেই বিরাট কোহালিকে বেছে নিতে হবে সেরা দলকে। জশপ্রীত বুমরা চোট সারিয়ে কেমন ছন্দে আছেন? শিখর ধওয়ন কি লোকেশ রাহুলকে টেক্কা দিতে পারবেন? দুই রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যজুবেন্দ্র চহালের অবস্থাই বা কী? অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলবে এই সিরিজে। এদিন ভারতীয় দলে যথারীতি জশপ্রীত বুমরা, শিখর ধওয়ন ফিরেছিলেন। প্রথম এগারোয় জায়গা হয়নি রবীন্দ্র জাডেজা, মণীশ পাণ্ডে, সঞ্জু স্যামসন ও যজুভেন্দ্র চহালের। কিন্তু বৃষ্টির বাধায় দেখে নেওয়া গেল না ক্রিকেটারদের।
লাসিথ মালিঙ্গার দলও বিশ্বকাপের দল গড়ার উদ্দেশে বছরের শুরুতে ভারত সফরে এসেছে। তবে অভিজ্ঞতা ও ফর্মের দিক দিয়ে বিরাট কোহালির দলই এই সিরিজে ফেভারিট। কিন্তু, কুড়ি ওভারের খেলায় অনেক অঙ্কই বদলে যেতে পারে। তার উপর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের অন্তর্ভুক্তি অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছে শ্রীলঙ্কার। তবে অতীত দেখলে পরিসংখ্যানে অনেক পিছিয়ে শ্রীলঙ্কা। বিরাট কোহালির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের সময় থেকে ধরলে ভারতের বিরুদ্ধে এত বছরে টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি, কোনও ফরম্যাটেই সিরিজ জেতেনি শ্রীলঙ্কা। গত দুই বছরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অবশ্য কোনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি ভারত।