নারিন-নাচে রঙিন নাইটদের সামনে আজ ইডেনে ‘মরণকামড়ের’ কিঙ্গস

‘ডান্স নাম্বার বাই সুনীল নারিন অ্যান্ড হিজ ওয়াইফিইইইইই’— কোনও মঞ্চে ঘটনাটা ঘটলে ডিস্ক জকি হয়তো এ ভাবেই চেঁচিয়ে উঠে তাঁকে স্বাগত জানাতেন এবং বিস্ফারিত চোখে তা দেখতেন দর্শকরা। ঘটনাটাই সে রকম! বলিউড নাম্বারের তালে তালে নাচছেন কি না সুনীল নারিন! নাচছেন, স্ত্রী নন্দিতার সঙ্গে! পুরোপুরি বলডান্স!

Advertisement

রাজীব ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৪:২৮
Share:

গুরু বীরুর ক্লাসে। ছবি শঙ্কর নাগ দাস।

‘ডান্স নাম্বার বাই সুনীল নারিন অ্যান্ড হিজ ওয়াইফিইইইইই’— কোনও মঞ্চে ঘটনাটা ঘটলে ডিস্ক জকি হয়তো এ ভাবেই চেঁচিয়ে উঠে তাঁকে স্বাগত জানাতেন এবং বিস্ফারিত চোখে তা দেখতেন দর্শকরা।
ঘটনাটাই সে রকম!
বলিউড নাম্বারের তালে তালে নাচছেন কি না সুনীল নারিন! নাচছেন, স্ত্রী নন্দিতার সঙ্গে! পুরোপুরি বলডান্স!
কোনও মঞ্চে এমন হল না বলে বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে কেকেআর সমর্থকদের এই বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হওয়া হল না। কারণ নারিন নাচলেন টিম হোটেলে। দেখলেন জনা কয়েক হোটেলকর্মী, যাঁদের ঘোর চব্বিশ ঘণ্টা পরেও কাটছে না। স্বাভাবিক। যে ক্রিকেটারকে প্রায় কথা বলতেই দেখা যায় না, সাক্ষাৎকার দূরের ব্যাপার সাংবাদিক সম্মেলনেও যিনি আসতে চান না, তাঁকে চোখের সামনে নাচতে দেখলে বিস্ময় তো লাগবেই। বৃহস্পতিবার রাতের যে নাচে নারিনকে সঙ্গ দিলেন রবিন উথাপ্পা, ইউসুফ পাঠান, সূর্য কুমার যাদব ও উমেশ যাদব। এবং অবশ্যই আন্দ্রে রাসেল।
শোনা গেল, ইডেন জয়ের পর টিম হোটেলের নাইট ক্লাবে কামিন্সের বার্থ ডে কেক কাটার পর জয়ের সেলিব্রেশন শুরু হয়ে যায়। হলিউড-বলিউড রিমিক্সের সঙ্গে নাচতে শুরু করে দেন রাসেল, উথাপ্পা, সূর্যরা। তখনও দর্শকের ভূমিকায় নারিন ও নন্দিতা। ইউসুফই প্রথম টেনে আনেন নারিনকে। ‘নাচতেই হবে’ আবদার নিয়ে। শুরুতে প্রবল আপত্তি জানালেও শেষ পর্যন্ত না কি তাঁর স্ত্রী’র অনুরোধে রাজি হয়ে যান নারিন। এক নয়, জোড়া স্পেলে। শেষে নাচতে নাচতে নন্দিতাকে ডেকে নেন। ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন চলছে জনপ্রিয় বলিউড নাম্বার ‘সুবহ হোনে না দে, সাথ খোনে না দে, এক দুসরে কো হাম সোনে না দে, তু মেরা হিরো.. ও.. ও, তু মেরা হিরো’। আর রোম্যান্স, মুক্তি, জয়ের আনন্দ সব মিলেমিশে একাকার।
সাফল্যের আনন্দে ভাসা সুখী নাইট পরিবারের এটা যদি হয় প্রথম ছবি, তা হলে দ্বিতীয় ছবিটা পাওয়া গেল শুক্রবার সকালে বারাসতে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে। দলের স্পিন-ত্রয়ী পীযূষ চাওলা, ব্র্যাড হগ ও কুলদীপ যাদবকে নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে হাজির হন কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর। যিনি সেখানে কেকেআর ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দেন। সেখানে আবার ঢুকতে না ঢুকতেই মঞ্চ নিয়ে নেন হগ। এক কলেজ ছাত্র যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘৪৪-এও আপনি এত তরতাজা কী করে?’’ মঞ্চেই গোটা পাঁচেক সিট-আপ দিয়ে হগ বলেন, ‘‘বুঝলে তো এ বার কী করে?’’ এ ছাড়াও নানা মজাদার কাণ্ডকারখানা ঘটিয়ে অনুষ্ঠান জমিয়ে দেন ‘চিরতরুণ’ হগ। ব্যাটটাকে গিটারের মতো করে ধরে নাচানাচিও শুরু করে দেন! পাশে দাঁড়িয়ে দিল্লি-বধের নায়ক তখন বলে চলেছেন, ‘‘আমাদের এই যে স্পিনারদের দেখছেন, আমরা আসলে একটা টিম। একে অন্যকে সাহায্য করা, উৎসাহ দেওয়া, একজন ব্যর্থ হলে অন্যরা তার পাশে এসে দাঁড়ানো— এগুলোই করে থাকি আমরা।’’
আত্মবিশ্বাসের চরম জায়গায় যে দাঁড়িয়ে আছে দলটা, তা বোঝাই যায়। আর এ রকম একটা দলের বিরুদ্ধে শনিবার খেলতে নামছে গত বারের রানার্স কিঙ্গস ইলেভেন পঞ্জাব। অন্য সময় বলে বলা যেত, গত আইপিএল ফাইনালের রিপ্লে। কিন্তু বলা যাচ্ছে না। কারণ আইপিএল সেভেনের ফাইনালিস্টরা এ বার লিগ টেবলের একেবারে নীচে। দু’দিন আগেই চিন্নাস্বামীতে যে টিমের উপর ক্রিস গেইল, এবি ডে’ভিলিয়ার্সরা বুলডোজার চালিয়ে দিয়েছেন। শনিবার তারাই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা নাইটদের সামনে। অথচ দলটাতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ডেভিড মিলার, মুরলী বিজয়, বীরেন্দ্র সহবাগ, জর্জ বেইলিদের মতো ব্যাটসম্যান। রয়েছেন মিচেল জনসনের মতো ভয়ঙ্কর পেসারও।
এক ঝাঁক দুনিয়া কাঁপানো নাম, অথচ ব্যর্থতায় ভরা আইপিএল যে মেনে নিতে পারছেন না, তার ইঙ্গিত দিয়ে এ দিন পঞ্জাব কোচ সঞ্জয় বঙ্গার বলে দিলেন, ‘‘কে বলতে পারে আমরা শেষ কামড় দেব না? এত দিন পারিনি বলে যে শেষ কয়েকটা ম্যাচেও পারব না, ভাববেন না। বরং ধরে নিন আমরা কেকেআরকে বিপদে ফেলতেই এখানে এসেছি।’’ ইডেনে প্র্যাক্টিস দেখেও মনে হল বেশ সিরিয়াস দলটা। কেকেআরের চার স্পিনারের বিষের কথা মনে করিয়ে দিতে কোচ বলেন, ‘‘চেন্নাইও এক বার এমন শুরু করেছিল। তবে বলতেই হবে, গম্ভীর খুব ভাল ক্যাপ্টেন্সি করছে। বোলিংটা ওদের শক্তি। তবে আমাদেরও ভাল ক্রিকেটার আছে। এখন আমরা চাইব কয়েকটা সফল দলকে ধাক্কা দিতে। কে বলতে পারে, সেটা কালই কি না?’’ মুশকিল হল, ইতিহাস বঙ্গারদের দিকে নেই। গত চার বারের মুখোমুখিতে কিঙ্গসকে প্রতিবারই হারিয়েছে নাইটরা। তার মধ্যে গত বারের ফাইনালও আছে।
এখন শুধু পাঁচে পাঁচ হওয়া বাকি।
শাহরুখ খান বনাম প্রীতি জিনটার স্কোরটা ৫-০ হওয়া বাকি।

Advertisement

যুবরাজদের রক্ষা

রায়পুর বিমানবন্দরে শুক্রবার অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেল দিল্লি ডেয়ার়ডেভিলস। আগের দিন রাতে ইডেনে কেকেআরের কাছে হারা যুবরাজ-দুমিনিদের এ দিন আইপিএলের পরের ম্যাচের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ বিমানবন্দরে নামা নির্ধারিত ছিল। গোটা ডেয়ারডেভিলস টিম নিয়ে ইন্ডিগোর উড়ানটি যখন রায়পুরের বিমানবন্দরে নির্দিষ্ট সময়ে অবতরণ করছে, ঠিক সেই সময় কলকাতাগামী অন্য একটি বিমান টেক-অফ করার জন্য আগে থেকেই সেখানে তৈরি ছিল।

Advertisement

দু’টো বিমানের মধ্যে অল্পের জন্য সংঘর্ষ ঘটেনি। অল্পের জন্য প্রাণরক্ষা হয় গোটা দিল্লি ডেয়ারডেভিলস দলের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement