তৃপ্ত: কোচ ছোটেলাল যাদবের সঙ্গে মেরি কম। পিটিআই
‘বড়-বড় ভাষণ’ নয়। কিংবদন্তি ভারতীয় বক্সার মেরি কম মনে করেন, আসল ব্যাপার পারফরম্যান্স। তা-ই সৃষ্টি করে উত্তরাধিকার। একই সঙ্গে ডাক দিলেন, খেলাধুলোকে রাজনীতিমুক্ত করার। আম্মানে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করে সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেরির ঘোষণা, টোকিয়োয় কমবয়সিদের বিরুদ্ধে তাঁর সেরা অস্ত্র হবে দু’দশকের বেশি রিংয়ে থাকার অভিজ্ঞতা।
মেরি বলেছেন, ‘‘অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করা বিশাল সাফল্য। শ্রেষ্ঠত্বও প্রমাণ করেছি। টোকিয়োয় নামা নিশ্চিত করে বিরাট চাপও সরে গেল। আশা করি, আমাকে অসম্মান করে যারা কথা বলেছে, তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন হবে। ওরাই তো খেলায় নিপুণ ভাবে রাজনীতি ব্যবহার করেছিল। সেটা ভুলি কী করে!’’
এখানেই থামেননি ৩৭ বছরের মেরি। যোগ করেন, ‘‘রিংয়ের বাইরে যা ইচ্ছে বলে শিরোনাম পাওয়া যায়। এ বার কিন্তু ওই সব শিরোনাম লোকে ভুলে যাবে। ভুলবে কারণ, পারফরম্যান্সই শেষ কথা। বড় বড় কথা বললেই ভাল ফল করা যায় না। সেটা যে করবে, লম্বা দৌড়ে তারই ক্ষতি হয়। কথা বলুক ঘুসিগুলো। তৈরি করুক উত্তরাধিকার। যা মানুষ ভোলে না।’’
মেরি কমের রাগের কারণ অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনের টুর্নামেন্টে নামার জন্য নিখাত জ়ারিন তাঁকে ট্রায়ালে নামার চ্যালেঞ্জ জানানোয়। ঘটনায় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ট্রায়ালে জেতেন মেরি কমই। যা নিয়ে মেরির আরও কথা, ‘‘চাই না, রাজনীতি খেলাধুলো নিয়ন্ত্রণ করুক। সেটা করলে ভারতের ভাল হবে না। আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ কারণ আরও একবার যোগ্যতা প্রমাণ করেছি।’’ মেরি প্রথম অলিম্পিক্সে নামেন ২০১২-তে। সে বারই তিনি দেশকে উপহার দেন ব্রোঞ্জ। ‘‘জীবনে কখনও কারও ক্ষতি করিনি। সবাইকে শ্রদ্ধা করি। সিনিয়র, জুনিয়রটা আমার কাছে বিষয় নয়,’’ বলেন মেরি কম। যোগ করেন, ‘‘কিন্তু যখন কেউ আমার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তখনই রাগ হয়। যোগ্য মানুষকে সম্মান জানানোয় অসুবিধে কোথায় বুঝি না। আমার সঙ্গে কেউ ভাল ব্যবহার করলে, আমিও ভাল ব্যবহার করব।’’
শুধু নিখাত জ়ারিনের সঙ্গে নয়, অতীতে মেরি কম মৌখিক আক্রমণের শিকার হন পিঙ্কি জাঙ্গা ও এল সারিতা দেবীর। সেই ঘটনায় ইঙ্গিত দিয়ে মেরিকে আরও বলতে শোনা গেল, ‘‘বারবার আমাকে নানা বাজে ব্যাপারে টানা হয়েছে। ইচ্ছে করলে সে সব নিয়ে অনেক কিছু বলতে পারি। কিন্তু নেতিবাচবাচক সব ব্যাপার পিছনে ফেলে এসেছি। রিংয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছি। বাকিটা অন্যরা বিচার করুক। আপাতত আমি আমার দ্বিতীয় অলিম্পিক্সে দারুণ কিছু করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’’
২০১২-তে ব্রোঞ্জ জেতেন। মেরি কমের আশা, অভিজ্ঞতার সৌজন্যে তিনি টোকিয়ো থেকে আরও ভাল পদক দেশের জন্য আনতে পারবেন।