ফাইল চিত্র।
নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-কে হারিয়ে মঙ্গলবার রাতে ফাইনালে ওঠার পরে মাঠের মধ্যে রয় কৃষ্ণদের সঙ্গে উল্লাসে মেতে উঠেছিলেন কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসও। উৎসব অবশ্য গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামের মাঠেই সীমাবদ্ধ ছিল। প্রথমত, ট্রফি জয়ের লক্ষ্য এখনও পূরণ হয়নি এটিকে-মোহনবাগানের। দ্বিতীয়ত, শনিবার ফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই মুম্বই সিটি এফসি।
সপ্তম আইএসএলের লিগ পর্বে দু’বারই বার্তোলোমেউ ওগবেচে-রা হারিয়েছেন সবুজ-মেরুনকে। শুধু তাই নয়। এটিকে-মোহনবাগানকে শেষ ম্যাচে হারিয়েই লিগের সেরা হয়ে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন করে মুম্বই। সেই যন্ত্রণা কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে সবুজ-মেরুনের ফুটবলার ও কোচের মনে। ক্লান্তি কাটাতে বুধবার অনুশীলন করাননি হাবাস। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে মুম্বই ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করবেন স্পেনীয় কোচ। ফুটবলারেরা যদিও এ দিন টিম হোটেলের জিমে ফিটনেস ট্রেনিং করেছেন। তবে সবুজ-মেরুন শিবিরে উদ্বেগ বাড়ছে এদু গার্সিয়ার চোট নিয়ে। ফাইনালেও স্পেনীয় তারকার খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত।
নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে ম্যাচের ৩৮ মিনিটে গোল করে এটিকে-মোহনবাগানকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ডেভিড উইলিয়ামস। গোলের পরে তাঁর অভিনব উৎসবের রহস্য বুধবার ফাঁস করলেন সবুজ-মেরুন স্ট্রাইকার। বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে খেলতে নামার আগে ছেলে হুগোর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ও আমার আবদার করেছিল, গোল করলে মজাদার ভঙ্গিতে উৎসব পালন করতে। এই কারণেই মুখে আঙুল দিয়ে জিভ বার করে ক্যামেরার সামনে দৌড়ে গিয়েছিলাম। টিভিতে এই দৃশ্য দেখে হুগো খুব আনন্দ পেয়েছে। ফাইনালেও গোল করলে এ রকম কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘আমি গোল করলে দল হারে না। আমরা হয়তো আরও বেশি গোলে জিততে পারতাম। তবে অতীত নিয়ে আর ভাবতে চাই না। মাথায় এখন শুধুই ফাইনাল।’’
সপ্তম আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে লিগ পর্বে দু’টি ম্যাচে হারের বদলা নিতে যে মরিয়া সবুজ-মেরুনের ফুটবলারেরা, খোলাখুলি জানিয়েছেন উইলিয়ামস। তাঁর কথায়, ‘‘মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দু’বার হেরেছিলাম। অনেকেই মরিয়া বদলা নিতে। আমার লক্ষ্য ভাল ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ঝাঁপানো।’’
নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে সবুজ-মেরুনের জয়ের আর এক নায়ক মনবীর সিংহ। প্রতিশ্রুতিমান এই ভারতীয় স্ট্রাইকারের গোলেই ৬৮ মিনিটে ২-০ এগিয়ে গিয়েছিল হাবাস-বাহিনী। এফসি গোয়া ছেড়ে এই মরসুমেই এটিকে-মোহনবাগানে যোগ দিয়েছেন মনবীর। সপ্তম আইএসএলে ২২ ম্যাচে ছ’টি গোল করেছেন তিনি। নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতের গোলকেই এখনও পর্যন্ত সেরা বলছেন মনবীর। এটিকে-মোহনবাগানের তারকার কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত যে ছ’টি গোল করেছি, তার মধ্যে মঙ্গলবারেরটাই সেরা।’’ কেন? মনবীরের ব্যাখ্যা, ‘‘বিপক্ষের দু’জন ডিফেন্ডারকে টপকে জালে বল জড়ানোর জন্য এই গোলটাকে সেরা বলছি না। সেমিফাইনালে গোলটা করতে পেরেছি বলেই এটা সেরা।’’ সেমিফাইনালে ম্যান অব দ্য ম্যাচও হয়েছেন মনবীর। সেরার পুরস্কার সমর্থকদের উৎসর্গ করে সবুজ-মেরুনের স্ট্রাইকার আরও বলেছেন, ‘‘ফাইনালে আমাদের প্রতিপক্ষ মুম্বই। লিগে ওদের একবারও হারাতে পারিনি। ওই দু’টি ম্যাচে যা যা ভুল করেছিলাম, তা শুধরে নিয়েই ফাইনালে নামতে চাই।’’
জয় অধরা মহমেডানের: আই লিগে পঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও জয় হাতছাড়া করল মহমেডান। বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ৩৪ মিনিটে চেঞ্চো গেলশেনের গোলে এগিয়ে যায় পঞ্জাব। ৪৬ মিনিটে ফের গোল করেন তিনি। ৫৯ মিনিটে ফয়সল আলি গোল করে ব্যবধান কমান। ৬৫ মিনিটে পেদ্রো মানজ়ি সমতা ফেরান। এক মিনিটের মধ্যেই আজ়হারউদ্দিন মল্লিকের গোলে ৩-২ এগিয়ে যায় মহমেডান। কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে ৩-৩ করেন আশিস ঝা। বুধবার কল্যাণীতে ট্রাউ ৩-১ হারায় রিয়াল কাশ্মীরকে। এ দিন কল্যাণীতেই আই লিগের অন্য ম্যাচে চার্চিল ব্রাদার্সকে ৩-০ হারিয়ে চমকে দিল গোকুলম এফসি।