ম্যান ইউ ম্যানেজার ওয়ে গুন্নার সোলসার। ছবি: রয়টার্স।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অন্যতম অঘটনের রাত হয়ে থাকল রবিবার। ফুটবলপ্রেমীরা সাক্ষী থাকলেন জোড়া বিপর্যয়ের।
নিজেদের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে প্রাক্তন ম্যানেজার জোসে মোরিনহোর চালে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে ১-৬ হারল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। সেই বিস্ময় কাটিয়ে ওঠার আগেই ফুটবলপ্রেমীরা দেখলেন গত বারের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে ৭-২ চূর্ণ করল অ্যাস্টন ভিলা। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বড় ক্লাবের হার আরও এক বার প্রমাণ করে দিল, ফুটবল চরম অনিশ্চয়তার খেলা।
২০১১ সালে ইপিএলে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কাছে এই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেই ১-৬ হেরেছিল ইউনাইটেড। ন’বছর পরে আবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটল। বিপর্যয়ের কারণ কী? ম্যাচের পরে ম্যান ইউ ম্যানেজার ওয়ে গুন্নার সোলসারের ব্যাখ্যা, ‘‘ভয়ঙ্কর অনুভূতি হচ্ছে। ম্যান ইউয়ের ফুটবলার ও ম্যানেজার হিসেবে এত খারাপ দিন কখনও দেখিনি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বড় ব্যবধানে হারের অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে আমার। সেই প্রতিকূল অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সফল হয়েছি। এখন যারা দেশের হয়ে খেলতে যাচ্ছে, তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে ছন্দ খুঁজে পাওয়া। যে ফুটবলারেরা দলের সঙ্গেই থাকছে, তাদের আমরা সাহায্য করব। এ রকম বিপর্যয়ের পরে দ্রুত মনকে হালকা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে হারের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সোলসারকে সরানোর দাবিতে সরব ম্যান সমর্থকেরা। ব্যর্থতার দায় নিয়ে পল পোগবাদের ম্যানেজার বলেছেন, ‘‘এই পারফরম্যান্স কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। ম্যানেজার হিসেবে ব্যর্থতার সব দায় আমার।’’ তবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ক্লাব কর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রাক্তন ম্যান ইউ তারকা প্যাত্রিস এভা।
একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘সোলসারের জন্য খারাপ লাগছে। ক্লাবের বোর্ড কী করছে? স্যর আলেক্স ফার্গুসন কত বছর আগে দায়িত্ব ছেড়েছেন? তার পরে কত জন ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হয়েছে?’’ এভা যোগ করেছেন, ‘‘জাডন স্যাঞ্চোকে চেয়েছিলেন সোলসার। কিন্তু ক্লাব অর্থ বরাদ্দ করেনি। ম্যান ইউ সমর্থকেরা বরং প্লে-স্টেশনের জন্যই মেসি, স্যাঞ্চোদের কিনুক। ম্যান ইউয়ের এই দলের কারও খেলার যোগ্যতা নেই।’’
মোরিনহোকেই দু’বছর আগে বরখাস্ত করেছিল ম্যান ইউ। পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে ‘মধুর’ প্রতিশোধ নিয়ে টটেনহ্যাম ম্যানেজার বলেছেন, ‘‘সোলসারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। মনে করতে পারছি না, কখনও ছ’গোল খেয়ে হেরেছি। এই ম্যাচটা আমি ছয় নয়, সাত গোলে জিততে চেয়েছিলাম।’’
সোলসারের মতোই স্তম্ভিত য়ুর্গেন ক্লপ। অ্যাস্টন ভিলার কাছে ২-৭ হারের পরে লিভারপুল ম্যানেজার বলেছেন, ‘‘আমাদের কোনও কিছুই ভাল হয়নি। ওরা গোলের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’’
সেভিয়ার বিরুদ্ধে না হারলেও বার্সেলোনা শিবিরে ছবিটা ম্যান ইউ ও লিভারপুলের মতো। ১-১ ড্র করে হতাশ ম্যানেজার রোনাল্ড কোমান বলেছেন, ‘‘আগের দু’টো ম্যাচের মতো ফুটবলারেরা উদ্বুদ্ধ ছিল না।’’