ঐতিহাসিক চুক্তিতে মুম্বই সিটির নতুন মালিক ম্যাঞ্চেস্টার সিটি

আইএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বই সিটি এফসি-র ৬৫ শতাংশ মালিকানা কিনে নিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। বাকি ৩৫ শতাংশ মালিকানা বলিউড তারকা রণবীর কপূর ও বিমল পারেখের।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৬
Share:

লক্ষ্য: মুম্বই সিটিকে এশিয়ার সেরা করতে চান রণবীর। ফাইল চিত্র

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে মুম্বইয়ের সব রাস্তাই যেন শিবাজি পার্ক-মুখী। মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পদে উদ্ধব ঠাকরের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দলে দলে মানুষ চলেছেন।

Advertisement

উৎসবের আবহে যান চলাচল প্রায় স্তব্ধ। অন্যান্য দিনে ব্যস্ত সময়ে মহালক্ষ্মী থেকে চার্চ গেট পৌঁছে যাওয়া যায় এক ঘণ্টার মধ্যে, বৃহস্পতিবার তা লাগল প্রায় তিন ঘণ্টা। এর মধ্যেই নিঃশব্দেই ভারতীয় ফুটবলে বিপ্লব ঘটে গেল। আইএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বই সিটি এফসি-র ৬৫ শতাংশ মালিকানা কিনে নিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। বাকি ৩৫ শতাংশ মালিকানা বলিউড তারকা রণবীর কপূর ও বিমল পারেখের। এ দিন মহালক্ষ্মীর ঐতিহ্যশালী ফেমাস স্টুডিয়োয় আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করলেন নীতা অম্বানী। হাজির ছিলেন ম্যান সিটির শীর্ষ কর্তারাও। তবে শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় থাকতে পারেননি রণবীর। ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘আমি প্রচণ্ড উত্তেজিত। আমাদের লক্ষ্য, মুম্বই সিটিকে এশিয়ার সেরা ক্লাব বানানো। আমরা আশাবাদী, ম্যান সিটির মতো আমরাও সাফল্য পাব।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল, তা ম্যান সিটির আগ্রহ থেকেই প্রমাণিত।’’

১৯৪৬ সালে তৈরি ফেমাস স্টুডিয়োতেই এশিয়ার প্রথম শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা চালু হয়। ভারতীয় চলচ্চিত্রে এই স্টুডিয়োর অবদান প্রচুর। এ বার সেখানেই ভারতীয় ফুটবলের নতুন ইতিহাস লেখা হল বৃহস্পতিবারের বিকেলে।

Advertisement

ভারতীয় ফুটবলে বিনিয়োগের ব্যাপারে দীর্ঘ দিন ধরেই ভাবনা-চিন্তা করছিলেন ম্যান সিটি কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটি এফসি, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন সিটি এফসি, জাপানের ইয়োকোহামা, স্পেনের খিরোনা এফসি, উরুগুয়ের ক্লাব আতলেতিকো, চিনের সিচুয়ান জিউনিউ এফসি-র অংশীদার হয়েছেন তাঁরা। এ বার যুক্ত হলেন ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে।

ক্রিকেটের শহরের ক্লাব মুম্বই সিটির ৬৫ শতাংশ অংশীদার কেন হলেন? সিটি ফুটবল গ্রুপের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ফেরান সোরিয়ানোর ব্যাখ্যা, ‘‘ভারতীয় ফুটবল দারুণ উন্নতি করছে। আমরাও এর অংশ হতে চাই।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘মুম্বই অসাধারণ শহর। ফুটবল নিয়েও মানুষের প্রবল আগ্রহ আমরা দেখেছি। রাস্তায় বাচ্চারা নিয়মিত ফুটবল খেলে। এই কারণেই মুম্বইয়ের সঙ্গে যুক্ত হলাম।’’ নিউ ইয়র্ক এফসি-র উদাহরণ দিয়ে তিনি বললেন, ‘‘ছ’বছর আগে নিউ ইয়র্ক সিটি আমরা কিনেছিলাম। আমাদের সিদ্ধান্ত যে ঠিক ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে। মুম্বইয়েও সফল হব বলে আমার বিশ্বাস।’’

আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি মুম্বইয়ের। ২০১৬ সালে সেমিফাইনালেই শেষ হয়ে গিয়েছিল মুম্বইয়ের অভিযান। সেই ছবিটা বদলাতে কতটা মরিয়া? ফেরান বলছেন, ‘‘আমরা কোনও ব্যাপারেই তাড়াহুড়ো করতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার তুলে আনা ও ভাল খেলা।’’

ম্যান সিটি মানেই তো পেপ গুয়ার্দিওলা, রাহিম স্টার্লিং, সের্খিয়ো আগুয়েরো-সহ একঝাঁক তারকা। ভবিষ্যতে কি স্প্যানিশ কোচকে দেখা যাবে মুম্বই ফুটবলারদের সাহায্য করতে? হাসতে হাসতে ফেরানের উত্তর, ‘‘পেপ প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যেও সব ব্যাপারে সাহায্য করছে। চিনে আমাদের ক্লাবের কোচ সপ্তাহখানেকের জন্য ম্যাঞ্চেস্টার গিয়েছিলেন পেপের কাছে কোচিং শিখতে। একই ভাবে মুম্বই সিটির কোচকেও আমরা পাঠাতে পারি। শুধু তাই নয়। প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারদেরও পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’ ম্যান সিটি দলকে দেখা যাবে না ভারতের মাটিতে খেলতে? ক্লাবের শীর্ষ কর্তার জবাব, ‘‘জুলাই মাসে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলি। কিন্তু সেই সময় মুম্বইয়ে প্রবল বৃষ্টি হয়। তাই এখনই বলা সম্ভব নয়, কবে ম্যান সিটি খেলতে আসবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement