লড়াকু: চ্যাম্পিয়ন মানসীর পাখির চোখ টোকিয়ো। ফাইল চিত্র
প্রচারের যাবতীয় আলোয় পি ভি সিন্ধু। মানসী জোশীর নাম চাপা পড়ে গিয়েছে। অথচ সিন্ধুর মতোই রাজকোটের মেয়ে মানসী ব্যাডমিন্টনে বিশ্বসেরা হন সুইৎজ়ারল্যান্ডের বাসেলে একই টুর্নামেন্টে, একই দিনে। তিরিশ বছরের তরুণী প্যারা-ব্যাডমিন্টনে এসএল-থ্রি ক্যাটেগরিতে ফাইনালে হারান পারুল পারমারকে।
সিন্ধু আর পারুলের ফাইনালে আরও মিল আছে। পুল্লেলা গোপীচন্দের ছাত্রীর ‘চিরশত্রু’ যেমন নজ়োমি ওকুহারা, তেমনই যুযুধান মানসী আর পারুল। এ’বছরই বাসেলে ফাইনালের আগে দু’জনের তিন বার দেখা হয়। তিন বারই হারেন মানসী। বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে পারুল শীর্ষ বাছাই ছিলেন। তাই মানসীর সোনা জেতা চমকপ্রদ ঘটনা। মানসী অবশ্য আগেও কয়েক বার ফেভারিটদের হারিয়েছেন।
মানসী পেশায় ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার। ২০১১ সালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়েন। বাঁ পা বাদ দিতে হয়। কিন্তু অদম্য মনের জোরে খেলা থামাননি। বেছে নেন প্যারা-ব্যাডমিন্টন। পড়াশোনার বাইরে ছোট থেকে ব্যাডমিন্টনই ধ্যানজ্ঞান মানসীর। এই খেলাটায় হাতেখড়ি ভাবা অ্যাটামিক রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানী বাবার কাছে। এখন স্বপ্ন দেখছেন ২০২০-র টোকিয়ো প্যারালম্পিক্স ঘিরে।
পুল্লেলা গোপীচন্দ অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করেন মানসী। সিন্ধু, সাই প্রণীতদের পাশে। রবিবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে মানসী টুইট করে সিন্ধুকে অভিনন্দন জানান। সঙ্গে লেখেন, ‘‘এই সোনাটার জন্য পরিশ্রমে ফাঁক রাখিনি।’’ টুইট করে মানসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। নগদ পুরস্কারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। প্রাক্তন মহিলা আইপিএস অফিসার কিরণ বেদী টুইট করেছেন, ‘‘সিন্ধু সোনা জেতায় আমরা মানসীর কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। অথচ এই মেয়েটাও যে কম যায় না!’’
ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দাবি তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সশরীরে সিন্ধুকে যেমন অভিনন্দন জানিয়েছেন, তা মানসীরও প্রাপ্য। তাঁদের বক্তব্য, এটা সৌজন্যের প্রশ্ন। ভুল শুধরে প্রধানমন্ত্রী ঘটনার পাঁচ দিন বাদে মানসীর নাম না করে ভারতের গোটা প্যারা-ব্যাডমিন্টন দলকেই অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্যারা-ব্যাডমিন্টন দল ১২টি পদক জিতেছে। ১৩০ কোটি ভারতীয় ওদের জন্য গর্বিত। গোটা দলকে অভিনন্দন। ওদের সাফল্য আনন্দের। একই সঙ্গে অনুপ্রাণিতও করবে। এই দলের প্রত্যেক সদস্যই অসাধারণ।’’