নাগপুরের রাত নায়ক তারকা বানিয়ে দিল দীপক চহারকে। ছবি— এএফপি।
ক্রস সিমে কখনও অফ কাটার, কখনও লেগ কাটার আবার কখনও ইয়র্কার। দীপক চাহারের হাত দিয়ে বেরনো এই ব্রহ্মাস্ত্রগুলোই তাসের ঘরের মতো ভেঙে দিল বাংলাদেশের ব্যাটিং।
নতুন বলে সুইং করাতে দক্ষ চাহার। সেই কারণেই ‘পাওয়ার-প্লে বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে আইপিএল-এ তাঁকে ব্যবহার করেছেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। আইপিএলে অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণেই ভারতীয় দলে সুযোগ পান চাহার। কিন্তু ডেথ ওভারেও যে তিনি সমান ভয়ঙ্কর, রবিবারের রাত সেটাই দেখিয়ে দিল।
অধিনায়ক রোহিত শর্মা আগেই তাঁকে বলে দিয়েছিলেন, ‘‘তুমিই আমাদের সেরা অস্ত্র।’’ চাহারকে ‘ফ্লেক্সিবল’ হতে বলেছিলেন ‘হিটম্যান’। ম্যাচে বিভিন্ন সময়ে চাহারকে আক্রমণে আনেন ভারত অধিনায়ক। আর প্রতিবারই অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন তরুণ পেসার।
আরও পড়ুন: হারতে হল ব্যাটসম্যানদের জন্য, বলছেন হতাশ মাহমুদুল্লাহ
ম্যাচের তৃতীয় ওভারে চাহারের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন রোহিত। তিনি যে কিছু একটা করতে চলেছেন নাগপুরে, তার ইঙ্গিত প্রথম ওভারেই দেন ডানহাতি পেসার। পর পর দু’বলে তুলে নেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকারকে। সেই ওভারেই হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল চাহারের সামনে। কিন্তু, মহম্মদ মিঠুন সেই যাত্রায় সামলে দেন।
চাহারের ওই ধাক্কাতেই বাংলাদেশ কিছুটা বেসামাল হয়ে গিয়েছিল। রোহিত তখন আর আক্রমণে আনেননি চাহারকে। রেখে দেন পরের দিকের ওভারগুলোর জন্য। সেই সুযোগে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরে আসার পাল্টা লড়াই শুরু করে। মহম্মদ নইম নির্দয় হয়ে ওঠেন যুজবেন্দ্র চহাল-শিবম দুবেদের উপরে। ম্যাচের গতিপ্রকৃতি বদলে যেতে থাকে। অধিনায়ক রোহিতকে উদভ্রান্তের মতো দেখায়। নইম ঝড় তুলতে শুরু করেছেন তখন। ম্যাচের ১৩তম ওভারে চাহারকে আক্রমণে ফিরিয়ে আনেন রোহিত। মহম্মদ মিঠুনকে ওই ওভারেই ফেরান ভারতের পেসার। ১৮তম ওভারে ফের আক্রমণে আনা হয় তাঁকে। সেই ওভারে চাহারের বলে শফিউল ইসলামকে তালুবন্দি করেন লোকেশ রাহুল। শেষ ওভারে ফের ম্যাজিক চাহারের। প্রথম বলে মুস্তাফিজুর এগিয়ে এসে চালাতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে ধরা পড়েন। পরের বলেই চাহারের ইয়র্কারে আমিনুল ইসলামের স্টাম্প গড়াগড়ি খায় মাটিতে। মাত্র সাত রানে ৬টি উইকেট নিয়ে নাগপুর রাঙিয়ে দেন দীপক চাহার। একটা রাত রাতারাতি তারকা বানিয়ে দিল তাঁকে।
আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিক তো বটেই, নাগপুরে এই রেকর্ডগুলিও করলেন চাহার