তাঁর টিম এই অবস্থা থেকে ফাইনালে উঠলে সেটা শুধু অভাবনীয় ঘটনা হবে তাই নয়, ভারতীয় ফুটবলে তৈরি হবে অন্য ইতিহাস। তা সত্ত্বেও স্বপ্ন দেখছেন পেন ওরজি। ভাবছেন, ফুটবলে কত কিছুই তো হয়। পাহাড়েও নয় আরও একটা হবে। পাঁচ গোলের বদলা হবে সাত গোল।
সেই স্বপ্ন থেকেই হয়তো বৃহস্পতিবার শিলংয়ের পোলো গ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে সবাইকে অবাক করে মোহনবাগানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন শিলং লাজংয়ের নাইজিরিয়ান মিডিও। ‘‘এখানে কিন্তু ম্যাচটা অন্য রকম হবে। ওরা বারাসতে পাঁচ গোল দিয়েছে। আমরা এখানে সাত গোল দেব। ভুলে যাবেন না ফুটবলে সবই সম্ভব। পাহাড়ে নতুন ইতিহাস হবে শনিবার।’’ বলে দিলেন কলকাতায় খেলে যাওয়া পরিচিত পেন। কথা শুনলে বোঝাই যায়, এটা নেহাতই কথার কথা। খড়কুটো ধরে নিজেদের তাতিয়ে রাখার কৌশল।
সনি নর্ডি বাদে মোহনবাগানের পুরো টিম তখন বিকেলের পড়ন্ত রোদে পোলো গ্রাউন্ডেই প্র্যাকটিসে নেমে পড়েছে। শনিবারের ম্যাচ জেতার লক্ষ্যে। তাঁর একটু আগে অনুশীলন করে গিয়েছে শিলং। সতীর্থরা সবাই চলে গেলেও পেন দাঁড়িয়ে ছিলেন বাগানকে দেখবেন বলে। আপনাদের এত আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে আসছে? পাঁচ গোলের ব্যবধান মুছে এগিয়ে যাওয়া! তার উপর মোহনবাগান যদি গোল করে দেয়, তবে তো আরও তলিয়ে যাওয়া। এটা সম্ভব না কি? শান্ত স্বভাবের পেন এ সব শুনেও একটুও দমলেন না। বরং বললেন, ‘‘এই যে সবাই বলছে আমরা পারব না, এটাই তো আমাদের তাতাচ্ছে। কোচও সে রকম ভাবে আমাদের উদ্বুদ্ধ করছে।’’ এর সঙ্গেই যোগ করলেন, ‘‘শনিবার ম্যাচ রয়েছে। ছুটির মেজাজ থাকে ওই দিন। গ্যালারি ভর্তি করে লোক আসবে। আমাদের সমর্থন করবে। পুরো পরিবেশটাই বদলে যাবে। দেখবেন বাগান কেঁপে যাবে। এটুকু বলতে পারি, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে ঝঁপাব।’’
বৃহস্পতিবার ভোরের গুয়াহাটির বিমান ধরতে পারেননি সনি নর্ডি আর আজহারউদ্দিন। পরে অন্য বিমানে তাঁরা গুয়াহাটি পৌঁছন। সেখান থেকে গাড়িতে শিলং পৌঁছতে দুপুর তিনটে হয়ে যায় দু’জনেরই। বাকি যাঁরা কলকাতা থেকে এ দিন টিমের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই গুয়াহাটি পর্যন্ত বিমানে গিয়ে, সেখান থেকে গাড়িতেই শিলং পৌঁচ্ছেছেন। সনি আর আজহারউদ্দিন ছাড়া পুরো টিম দুপুর দেড়টার মধ্যে শিলং পৌঁছে গিয়েছিল। ক্লাবের ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘যেহেতু এএফসি কাপের টিম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছে, সে জন্য সবার একই বিমানের টিকিট পাওয়া যায়নি। আলাদা, আলাদা বিমানেই আসতে হয়েছে সনি, কিংশুক, দেবজিৎদের। সনিরা বিমান মিস করে এত দেরিতে শিলংয়ে পৌঁছেছে যে ওদের প্র্যাকটিসে আসতে বারণ করাই হয়েছিল। সনি বিশ্রাম নিলেও আজহার নিজে থেকেই এসেছে।’’