সফল: লোপামুদ্রা ও স্বর্ণদ্বীপ। নিজস্ব চিত্র
২২তম ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ-২০১৭’-তে প্রথম হয়ে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পেল হলদিয়ার লোপামুদ্রা অধিকারী ও স্বর্ণদীপ দাস। ‘ক্যারাটে-ডু-অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল’-এর উদ্যোগে গত ২ ও ৩ ডিসেম্বর কলকাতার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। ‘ক্যারাটে অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’-র উদ্যোগে আগামী বছর দিল্লির তালকোটরা স্টেডিয়ামে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে।
রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীরা ‘কাতা’ ও ‘কুমিতে’ এই দু’টি বিভাগে যোগ দেয়। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে মোট ২১ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। বয়স ও ওজনের ভিত্তিতে ছেলে ও মেয়েরা বিভিন্ন বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার সুতাহাটা লাবণ্যপ্রভা বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ১৩ বছরের লোপামুদ্রা ‘কুমিতে’ সাব জুনিয়র বিভাগে ৪০ কিলোগ্রামের নীচের বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন। পরপর ছ’জনের সঙ্গে লড়াই করে এই বিভাগে প্রথম হয়ে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগদানের যোগ্যতা অর্জন করেছে লোপামুদ্রা। প্রতিযোগিতার ‘কাতা’ বিভাগে তৃতীয় হয়েছে লোপামুদ্রা।
আগামী বছর ১২-১৩ এপ্রিল মাসে দিল্লির তালকোটরা স্টেডিয়ামে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে। ৪ বছর বয়সে বাবা কৌশিক অধিকারীর কাছে ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে লোপামুদ্রা। ২০১৬ সালে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় ‘কুমিতে’ বিভাগে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল সে। গত অক্টোবর মাসে হুগলির ভদ্রেশ্বরে আয়োজিত রাজ্য বিদ্যালয় ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব-১৪ মেয়েদের বিভাগে ‘কুমিতে’ বিভাগে প্রথম হয়েছে। লোপামুদ্রাও তেলঙ্গানায় আয়োজিত জাতীয় বিদ্যালয় ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় যাওয়ার যোগ্যতাও অর্জন করেছে। লোপামুদ্রা বড় হয়ে আইপিএস অফিসার হয়ে দেশের কাজ করতে চায়।
হলদিয়ার রামপুর বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র বছর পনেরোর স্বর্ণদীপ ১৪-১৫ ক্যাডেড বিভাগে যোগ দেয়। ছেলেদের ৭০ কিলোগ্রাম ওজনের বিভাগে পরপর লড়াই করে ‘কুমিতে’ বিভাগে প্রথম হয়ে জাতীয়স্তরে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে স্বর্ণদীপ। ক্যারাটে শিখে বড় হয়ে প্রশিক্ষক হতে চায় স্বর্ণদীপ। আগামী বছর ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি দিল্লির তালকোটরা স্টেডিয়ামে জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় সে যোগ দেবে।
রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় সফল হয়েছে হলদিয়ার রামপুর সারদামণি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী পৌলমী মণ্ডল ও শকুন্তলা সামন্ত। বছর পনেরোর পৌলমী ৪০ কিলোগ্রামের নীচে ‘কুমিতে’ বিভাগে তৃতীয় হয়েছে। ১৪ বছরের শকুন্তলা ৪৮ কিলোগ্রাম ওজনের ‘কুমিতে’ বিভাগে তৃতীয় হয়েছে। লোপামুদ্রার মতো স্বর্ণদীপ, পৌলমী ও শকুন্তলাও অনুশীলন করেন কৌশিক অধিকারীর কাছে। কৌশিকবাবুর আশা, জাতীয়স্তরের প্রতিয়োগিতাতেও লোপামুদ্রা ও স্বর্ণদীপ ভাল ফল করবে। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য, ছেলেমেয়েরা জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় সফল হয়ে এশিয়াডে যাওয়ার যোগ্যরা অর্জন করবে।’’
তমলুকের কৃত্তিকা অধিকারী ২৫ কিলোগ্রাম ‘কুমিতে’ বিভাগে তৃতীয় হয়েছে। কৃত্তিকা ‘পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্পোর্টস ক্যারাটে ডু অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক তথা জাতীয় কোচ শিবরাম সর্দারের কাছে অনুশীলন করে। শিবরামবাবু বলেন, ‘‘জাতীয় প্রতিযোগিতায় যাওয়ার আগে লোপামুদ্রা ও স্বর্ণদীপকে আবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় ১৫ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে বেলদার সংঘমিত্রা সিংহ ১৪ বছরের বিভাগে ‘কুমিতে’ বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছে। গড়বেতার শুভম বাজপেয়ী ১৯ বছরের ‘কাতা’ বিভাগে তৃতীয় হয়েছে।