অপ্রতিরোধ্য: ইপিএলে ছুটে চলেছে লিভারপুলের রথ। বুধবার ক্রিস্টাল প্যালেসকে উড়িয়ে দিলেন সালাহরা। অ্যানফিল্ডে এল আরও একটি জয়। এপি
তিরিশ বছরের অপেক্ষার অবসান। সাত ম্যাচ বাকি থাকতেই লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। শেষ বার ১৯৯০ সালে খেতাব জিতেছিল তারা। বৃহস্পতিবার চেলসির বিরুদ্ধে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ১-২ হারার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় মহম্মদ সালাহদের ইপিএল জয়। ঘরের মাঠে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ ৩৬ মিনিটে চেলসিকে এগিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লিভারপুলের সমর্থকেরা উৎসব শুরু করে দিয়েছিলেন। ৫৫ মিনিটে অসাধারণ ফ্রি-কিকে ১-১ করেন কেভিন দ্য ব্রুইন। আব্রাহামের শট ফের্নান্দিনহোর হাতে লাগে। ভিডিয়ো অ্যাসিসট্যান্ট রেফারির সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দেন এবং ফের্নান্দিনহোকে লালকার্ড দেখান রেফারি। ৭৮ মিনিটে গোল করে উইলিয়ান চেলসিকে ২-১ এগিয়ে দেন। এই ম্যাচে দু’বার ড্রিঙ্কস ব্রেক নিতে দেখা যায়। ফুটবলে যা অভিনব।
বুধবার ক্রিস্টাল প্যালেসকে অ্যানফিল্ডে ৪-০ হারানোর পরেই ইপিএল খেতাব লিভারপুলের কার্যত মুঠোয় চলে এশেছিস। তিরিশ বছর পরে লিগ জিততে দরকার ছিল মাত্র ২ পয়েন্ট! প্রায় তিন দশক পরে ইংল্যান্ডে লিগ জয়ের ট্রফি লিভারপুলে আনার অন্যতম নায়ক মহম্মদ সালাহ তাই উচ্ছ্বাস আড়াল করেননি। ক্রিস্টাল প্যালেস ম্যাচে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড, ফাবিনহো, সাদিয়ো মানের মতো তিনিও গোল করেছেন। উল্লসিত মিশরের মেসিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আর দু’পয়েন্ট তুললেই আমরা চ্যাম্পিয়ন! সত্যি ভাবতে পারছি না।’’ যোগ করলেন, ‘‘এই অনুভূতির সঙ্গে অন্য কোনও কিছুর তুলনা হয় না। এখানে খেলতে আসার পর থেকেই বলে যাচ্ছি, একবার অন্তত প্রিমিয়ার লিগ জিততে হবে। জানতাম, চিরকাল সিটিই (ম্যাঞ্চেস্টার) ট্রফি নেবে এমনটা হবে না। গত বার ওরা সত্যিই অসাধারণ খেলেছিল। যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হয়। তবে এই মরসুমটা আমাদের। আমরাই সেরা। চ্যাম্পিয়নও হচ্ছি।’’
সালাহদের জার্মান গুরু য়ুর্গেন ক্লপ আফসোস করছেন, এমন ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ ক্লাব সমর্থকেরা স্টেডিয়ামে বসে প্রত্যক্ষ করতে পারছেন না বলে! তিনি বলেছেন, ‘‘একবার ভেবে দেখুন, এই জয়টা অ্যানফিল্ডের ভর্তি গ্যালারির সামনে ঘটলে কী হত! লিভারপুল সমর্থকদের জন্য খারাপই লাগছে।’’ একই সঙ্গে ক্লপ অবাক হচ্ছেন দর্শকহীন স্টেডিয়ামেও ট্রফির জন্য তাঁর ফুটবলারদের মরিয়া ভাব দেখে। ‘‘প্যালেসের বিরুদ্ধে আমরা যা খেললাম, সেটা এভার্টন ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার প্রতিক্রিয়া। বিশ্বাস করুন, এতটা দাপট নিয়ে ছেলেরা ম্যাচটা ৪-০ জেতায় ভীষণ খুশি। খেলার ৮৭ মিনিটেও দেখছিলাম আমার ছেলেরা প্যালেসের ফুটবলারদের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়ার জন্য পাগলের মতো তাড়া করছে। তখন মনে হচ্ছিল, পৃথিবীতে যেন ওই একটাই বল পড়ে রয়েছে,’’ বলেছেন ক্লপ। তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘অসাধারণ ফুটবল! আমাদের সমর্থকেরা বুঝেছে, এ বারের লিগে এখনও আমরা কতটা দাপট নিয়ে খেলছি।’’