চতুর্থবার সুপারকাপ জয় লিভারপুলের। ছবি: এএফপি।
লিভারপুল-২ (৫) চেলসি-২ (৪)
(মানে২) (জিরু,জর্জিনিয়ো)
ইস্তানবুলে চেলসিকে হারিয়ে চতুর্থ বার সুপার কাপ জিতল লিভারপুল। লিভারপুলের সঙ্গে ইস্তানবুলের সম্পর্ক বহুদিনের পুরনো। সেই ১৪ বছর আগে এই ইস্তানবুলেই (২০০৫) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লিভারপুল। সেই ফাইনাল তো ‘মিরাকল অব ইস্তানবুল’ নামেই পরিচিত।
এসি মিলানের বিরুদ্ধে সে বারের ফাইনালে প্রথমার্ধে ৩-০ পিছিয়ে থেকেও লিভারপুল ম্যাচ নিয়ে গিয়েছিল পেনাল্টি শুট আউটে। পেনাল্টি স্পট থেকে গোললাইন পৃথিবীর রহস্যময় সরণি। পেনাল্টি শুট আউটে লিভারপুলের বারের নীচে দাঁড়িয়ে গোলরক্ষক জার্সি ডুডেক পা দিয়ে থামিয়েছিলেন শট। সেই চিত্রনাট্যই ফিরে এল সুপার কাপে। পেনাল্টি শুট আউটে চেলসিকে হারিয়ে সুপার কাপ জিতে নিল মার্সি নদীর তীরের এই দল। সে বার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন গোলকিপার ডুডেক। এ বার আদ্রিয়ান। ১০ দিন আগেও দল ছিল না তাঁর। জুনের শেষে তাঁকে ছেড়ে দেয় ওয়েস্ট হ্যাম। ক্লপ লিভারপুলে আনেন আদ্রিয়ানকে। ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার অ্যলিসন চোট পাওয়ায় সুযোগ পেয়ে যান আদ্রিয়ান। ফাইনালে তিনিই তো নায়ক।
চেলসিকে হারিয়ে মরসুমের প্রথম ট্রফি ঘরে তুলল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। উয়েফা সুপার কাপে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের চেলসির বিরুদ্ধে দলে বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন লিভারপুল কোচ য়ুর্গেন ক্লপ। অপর দিকে ল্যাম্পার্ডও দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের উপরেই আস্থা রাখেন।
আরও পড়ুন: নেমারকে ফেরাতে বার্সা-কর্তা প্যারিসে
আরও পড়ুন: মেসির চেয়ে এগিয়ে তিনি, ঘুরিয়ে দাবি রোনাল্ডোর
লিভারপুল শুরুটা ভাল করলেও ধীরে ধীরে মাচে ফেরে চেলসি। মাঝমাঠ নিজেদের দখলে এনে লিভারপুলের গোলে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনেন পেদ্রো, জিরুরা। পেদ্রো বারংবার সমস্যায় ফেলেন লিভারপুল রক্ষণকে। ৩৮ মিনিটে এগিয়ে যায় চেলসি। বরুসিয়া ডর্টমুণ্ড থেকে এ মরসুমে দলে যোগ দেওয়া ক্রিশ্চান পুলিসিচের মাপা পাস থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন জিরু। গত বছরের প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় ভার্জিল ভ্যান ডাইককে ফিকে দেখায় এ দিন।
ম্যাচের শুরু থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবের্তো ফিরমিনোকে খেলাননি ক্লপ। তাঁর পরিবর্তে চোট সারিয়ে মাঠে ফেরা অক্সারলেড চেম্বারলেনকে সুযোগ দেন তিনি। হাফ টাইমের পরে ক্লপ নামান ফিরমিনোকে। তিনি মাঠে নামার পরেই খেলা ঘুরে যায়। ৪৮ মিনিটে ফিরমিনোর বাড়ানো বল থেকেই গোল করেন সাদিয়ো মানে। এর পর নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোনও গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে।
৯৫ মিনিটের মাথায় মানের জোরালো শট রুখতে ব্যর্থ হন চেলসির গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা। ২-১ এগিয়ে যায় 'রেডস'-রা। লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ান ট্যামি আব্রাহামকে ফাউল করলে পেনাল্টি থেকে গোল করেন জর্জিনিয়ো। এক্সট্রা টাইমেও খেলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুট আউটে। পেনাল্টি শুট আউটেই আব্রাহামের পেনাল্টি বাঁচিয়ে আদ্রিয়ান মনে করিয়ে দেন ২০০৫ সালের লিভারপুল গোলরক্ষক জার্সি ডুডেককে। এই ইস্তানবুলেই তো ইতিহাস রচনা করেছিলেন জেরার্ড, অ্যালন্সোরা। এই জয়ের ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে পিছনে ফেলে ইংল্যান্ডের সফলতম ক্লাব হল লিভারপুল। ৪৩তম মেজর ট্রফিটি জিতে নেয় ক্লপের লিভারপুল।