আকর্ষণ: ফিফা বর্ষসেরার ট্রফি হাতে লিয়োনেল মেসি এবং মেয়েদের সেরা মেগান রাপিনো। এএফপি
ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন লিয়োনেল মেসি। মোট ৪৬৪৬ মিনিট মাঠে থেকে ৫৮ ম্যাচে ৫৪ গোল করার পুরস্কার। তাঁর পাস থেকে ২০টি গোলও হয়েছে গত মরসুমে।
কিংবদন্তি মেসিকে কেন বর্ষসেরা করা হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠল। বিশেষ করে, সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার লিভারপুলের ভার্জিল ফান ডাইক সেরার পুরস্কার না পাওয়ায় অনেকেই অবাক। তাঁদের বক্তব্য, মেসি যা যা করেছেন তা প্রতিবারই করেন। তা ছাড়া বার্সেলোনাকে তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে পারেননি। বা আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ। যদিও অনুষ্ঠানের শেেষ লিভারপুলের ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে মেসির কোনও তুলনাই চলতে পারে না। আমি এ ধরনের তুলনা থেকে নিজেকে দূরে থাকতে চাই।’’
মেসিকে সেরার পুরস্কার দেওয়ার জন্য ফিফাকে দায়ী করার বিরোধী বেশির ভাগ ফুটবল বিশ্লেষক। বিশ্বের সব জাতীয় দলের অধিনায়ক, কোচেরা এই নির্বাচনে ভোট দেন। সঙ্গে প্রচারমাধ্যমের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও। ফিফা সরাসরি কিছুই করে না। এ বারের ভোটে ৪৬ র্যাঙ্কিং পয়েন্ট পেয়ে প্রথম হয়েছেন মেসি। পরের চার জন ভার্জিল (৩৮ পয়েন্ট), ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (৩৬ পয়েন্ট), মহম্মদ সালাহ (২৬ পয়েন্ট) ও সাদিয়ো মানে (২৩ পয়েন্ট)।
মেসি মোট ছ’বার এই পুরস্কার পেলেন। গত মরসুমে তাঁর ক্লাব বার্সেলোনা লা লিগা জিতেছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমিফাইনালে উঠেছে। ইউরোপের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্টে গত বার আর্জেন্টাইন তারকার গোল ১২টি। এত গোল আর কেউ করতে পারেননি।
মিলানের লা স্কালা অপেরা হাউসের বর্ণময় অনুষ্ঠানে রোনাল্ডো আসেননি। অথচ সেরাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় পর্তুগিজ তারকার নামও ছিল। ফিফার সেরা বিশ্ব একাদশে মেসির সঙ্গে তাঁকেও রাখা হয়েছে। যতই বিতর্ক থাক, পুরস্কার পেয়ে আপ্লুত মেসি বলেছেন, ‘‘এই স্বীকৃতি যাঁদের সৌজন্যে তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ। অবশ্য আমার কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলগত সাফল্য। তবে আজকের রাতটাও আমার কাছে বিশেষ একটা মুহূর্ত।’’
মেসি নিজে সেরার পুরস্কারের জন্য কিন্তু ভোট দিয়েছিলেন লিভারপুলের সাদিয়ো মানেকে, যিনি গত মরসুম থেকে অসধারণ ফুটবল খেলে চলেছেন। তাঁর দ্বিতীয় পছন্দ ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু পর্তুগিজ তারকার ভোট মেসি পাননি। এমনকি রোনাল্ডো তাঁর পছন্দের সেরা তিনেও মেসিকে রাখেননি। জুভেন্তাস তারকার প্রথম পছন্দের ভোটটা পেয়েছেন ইটালির ক্লাবে তাঁর সতীর্থ মাথিস ডে লাইট। সেরা কোচের পুরস্কার পেয়েছেন লিভারপুলের য়ুর্গেন ক্লপ। সেরা মহিলা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেগান রাপিনো।
ক্লপের মতোই সেরা কোচের লড়াইয়ে ছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির পেপ গুয়ার্দিওলা এবং টটেনহ্যামের মাউরিসিয়ো পচেত্তিনো। কিন্তু শেষ হাসি হাসেন লিভারপুলের জার্মান ম্যানেজার। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘চার-পাঁচ বছর আগেও কেউ ভাবেননি যে, একদিন এই পুরস্কারটা আমি পেতে পারি।’’ দর্শকাসনে বসে থাকা গুয়ার্দিওলাদের উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ভাল করেই জানি যে মাউরিসিয়ো আর পেপ কী অসাধারণ কাজটাই না গত বার করেছে। এই পুরস্কারের জন্য সবার আগে ধন্যবাদ জানাব আমার অসামান্য ক্লাব লিভারপুলকে। ক্লাবের মালিকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ কারণ ওঁরাই আমাকে এত ভাল একটা দল উপহার দিয়েছেন। ক্লাবের অসাধারণ সব ফুটবলারদের নিয়ে আমার গর্বেরও শেষ নেই।’’