বাঁ পায়ের মোজা থেকে কী বার করে খেলেন মেসি?

আবার একই দিনে তাঁকে নিয়ে তৈরি হল নতুন কৌতূহল। খেলা চলাকালীন বাঁ পায়ের মোজার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে কিছু একটা বের করে মুখে দেন মেসি। মুহূর্তে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে যে, তিনি কী খেলেন? দেখে অনেকের মনে হয়েছিল, কোনও ট্যাবলেটই সম্ভবত খাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

এ ভাবে গ্লুকোজ ট্যাবলেট খাওয়া নিয়ে জোর বিতর্কে মেসি। ছবি: টুইটার

আবারও নায়ক তিনি। আর্জেন্তিনা থেকে দলটা শুধু পাল্টে গেল বার্সেলোনায়। দেশের জার্সি থেকে ক্লাবের। উয়েফা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ গোলের নতুন কীর্তি স্থাপন করলেন লিও মেসি।

Advertisement

আবার একই দিনে তাঁকে নিয়ে তৈরি হল নতুন কৌতূহল। খেলা চলাকালীন বাঁ পায়ের মোজার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে কিছু একটা বের করে মুখে দেন মেসি। মুহূর্তে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে যে, তিনি কী খেলেন? দেখে অনেকের মনে হয়েছিল, কোনও ট্যাবলেটই সম্ভবত খাচ্ছেন।

কেউ কেউ বলতে থাকেন, জেলি বিন্‌স নয় তো? জেলি বিন্‌স এক ধরনের লজেন্স, যা ক্রিকেটে বেশি ব্যবহার হয়। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে খুব চল এই লজেন্সের। জেলি থাকে বলে ক্রিকেট বলের পালিশ ঝকঝকে করতেও কৌশলে এর ব্যবহার হয় বলে অনেক বার শোনা গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্যাফ ডুপ্লেসি এক বার মুখ থেকে জেলি বের করে বল পালিশ করতে গিয়ে সাসপেন্ড হন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ড্র করে মোরিনহোকে পাল্টা তোপ কন্তের

মেসির ক্ষেত্রেও সাড়া পড়ে যায় টিভি ক্যামেরায় এই বিশেষ মুহূর্তটি ধরা পড়ার পরে। রেডিওতে এক সাংবাদিক বলেন, মেসি নাকি গ্লুকোজ ট্যাবলেট নিচ্ছিলেন। এনার্জি বাড়ানোর জন্য যা নিয়ে থাকতে পারেন বলে অনুমান। আবার কেউ কেউ বলছেন, ম্যাচের তখন মাত্র ১০ মিনিট হয়েছে। অত তাড়াতাড়ি গ্লুকোজ ট্যাবলেট নিতে যাবেন কেন মেসি? ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটেই কী করে তাঁর শক্তি বা দমের ঘাটতি দেখা দিতে পারে? আরও একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে যে, খেলার মধ্যে এ ভাবে ট্যাবলেট নেওয়া আইনসম্মত কি না?

জল্পনা-কল্পনা চলতেই থাকে বৃহস্পতিবার সারা দিন ধরেও। মেসি নিজে এ নিয়ে কিছু জানাননি। বার্সেলোনার কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে-কে গত কাল ম্যাচের পর এ নিয়ে জিজ্ঞেস করেন সাংবাদিকেরা। ভালভার্দে বলেন, ‘‘মেসি গ্লুকোজ পিল নিয়েছে? আমি তো কিছুই জানি না। এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারব না আমি।’’ তার পরেই বার্সা কোচের স্মরণীয় উক্তি— ‘‘যদি বড়িটা নিয়ে ও গোল করে থাকে, আবার নেওয়া উচিত ওর।’’

মেসির ট্যাবলেট-বিতর্কের জেরে কিছুটা পিছনের দিকেই চলে গিয়েছে বার্সেলোনার জয় এবং তাঁর গোলের সেঞ্চুরির কৃতিত্ব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অলিম্পিয়াকোস-কে ৩-১ হারাল বার্সেলোনা। আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সা। তার পরেই দ্বিতীয় গোলটি করলেন মেসি। অন্যটি লুকা ডিনির। ৬১ মিনিটে মেসির গোল, ৬৪ মিনিটে লুকার। একেবারে শেষ মুহূর্তে নিকোলাউ একমাত্র গোলটি করেন গ্রিসের দলটির হয়ে।

মোজার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে ট্যাবলেট বের করে আনলেন কি না, তা নিয়ে তর্ক থাকতে পারে। তাঁর গোলের রেকর্ড করার ভঙ্গি যে মেসি-সুলভই হয়ে থাকল, তা নিয়ে কারও কোনও সংশয় নেই। দুরন্ত ফ্রি-কিকে বোকা বানালেন অলিম্পিয়াকোসের গোলরক্ষক সিলভিও প্রোতো-কে। ঠিক যেভাবে বহু গোলরক্ষককে বোকা বানিয়েছেন অবিশ্বাস্য সমস্ত ফ্রি-কিকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০০ গোলের কৃতিত্ব ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ছাড়া আর কারও নেই।

ফুটবলে তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের তারকাকে ধরে ফেললেন মেসি। বুধবারের পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রোনাল্ডোর থাকল ১৫১ ম্যাচে ১১২ গোল। মেসির ১২২ ম্যাচে ১০০। গোলের স্ট্রাইক রেটে রোনাল্ডোর চেয়ে এগিয়ে তিনি। রোনাল্ডোর ম্যাচ প্রতি গোল ০.৭৪। মেসির ০.৮২। বার্সেলোনা কোচ ভালভার্দে রসিকতা করে এমনও বলে গেলেন যে, ‘‘আমি তো আশা করব এই মরসুমের শেষে ও ২০০ গোলের মাইলস্টোনেও পৌঁছে যাক। ওর সংখ্যাগুলোই বলে দিচ্ছে, লিও কত বড় ফুটবলার। প্রত্যেকটা মুহূর্তে পুরনো সীমান্তকে উপড়ে নতুন সীমারেখা তৈরি করে দিচ্ছে।’’

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ ‘ডি’-তে এখনও অপরাজিত বার্সেলোনা। এই জয়ের পরে তাদের পয়েন্ট এখন ৯। ফিরতি লেগে অলিম্পিয়াকোস-কে হারাতে পারলেই শেষ ষোলোয় তাদের স্থান মোটামুটি নিশ্চিত। তত দিনে গ্লুকোজ ট্যাবলেটই তিনি মুখে দিয়েছিলেন কি না, সেই তর্কেরও নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া উচিত।

গ্রাফিক: দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement